×

পুরনো খবর

বাংলাদেশের সেরা সেরা মিষ্টি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ ডিসেম্বর ২০১৭, ০৪:৪৭ পিএম

মিষ্টি আমাদের সবারই কম বেশি পছন্দ। আমাদের বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় বিভিন্ন ধরনের সুস্বাদু মিষ্টি পাওয়া যায়। যার প্রত্যেকটিই শুধু স্বাদের দিক থেকেই নয়, ইতিহাস ঐতিহ্যের দিক থেকেও অনন্য। এর অনেকগুলোই হয়তো আমরা চিনি, আবার অনেক মিষ্টিই আছে যার সম্বন্ধে আমরা হয়তো কিছুই জানি না। তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সেরা সেরা কিছু মিষ্টির গল্প।

টাঙ্গাইলের চমচম

টাঙ্গাইলের চমচম সারা দেশেই বিখ্যাত তার ভূবন ভোলানো স্বাদের জন্য। ব্রিটিশ আমলেও এ চমচমের স্বাদ গোটা উপমহাদেশেই বিখ্যাত ছিল। এখনও তেমনি বিখ্যাত। সমান বিখ্যাত থাকলেও টাঙ্গাইলের চমচম আজ যেনো তার স্বাদ হারাতে বসেছে। কারণ আমরা এখন যে চমচম পাই তা মূলত টাঙ্গাইলের পাঁচআনি বাজারের। পোড়াবাড়িতে চমচমের সেই রমরমা অবস্থা আর নেই।
pora-bari-sweet

ধারণা করা হয় যশোরধ হালই নামের মিষ্টির এক কারিগর এ চমচমের স্রষ্টা। এ চমচমগুলো সাধারণত লালচে রঙের যার উপড়িভাগে চিনির গুড়ো থাকে। আর ভেতরের অংশ অনেক রসালো আর নরম।  চমচমের গুণগত মান আর স্বাদ মূলত পানি আর দুধের অনুপাতের উপড়ই নির্ভর করে।

নওগাঁর বিখ্যাত প্যারা সন্দেশ

1

ঠিক কখন থেকে নওগাঁয় এ প্যারা সন্দেশের প্রচলন শুরু হয় তা স্পষ্টভাবে বলা যায় না। প্রথম দিকে এ প্যারা সন্দেশ পূজা মন্ডপে দেব দেবীর উপাসনার কাজে ব্যবহৃত হতো। লোকমুখে শোনা যায় নওগাঁ শহরের কালিতলার মহেন্দ্রী দাস নামে এক ব্যাক্তি প্রথমে প্যারা সন্দেশ তৈরি শুরু করেন। প্যারা সন্দেশ তৈরির সময় তরল দুধের সাথে চিনি মিশিয়ে তা ভালোভাবে জ্বাল করে ক্ষীর তৈরি করা হয়। ক্ষীর যখন জড়িয়ে আসতে শুরু করে তখন গরম ক্ষীর দুই হাতের তালুর মাঝে সামান্য চাপ দিতে হয়। এভাবেই তৈরি করা হয় প্যারা সন্দেশ। এর রঙ হালকা খয়েরি রঙের। এ সন্দেশগুলো প্রস্থে প্রায় ১/২ ইঞ্চি আর লম্বায় ২ ইঞ্চি হয়ে থাকে। ১ কেজি প্যারা সন্দেশ তৈরি করার জন্য প্রয়োজন পড়ে ৭ লিটার দুধ। এ মিষ্টির অনন্য বৈশিষ্ট্য হলো এতে দুধ আর চিনি ছাড়া অন্য কোনো উপকরণ ব্যবহার করা হয় না।

নাটোরের বিখ্যাত কাঁচাগোল্লা

নাটোরের কাঁচাগোল্লা শুধু কোনো সাধারণ মিষ্টি নয়। এটি নাটোরের ঐতিহ্য। এর সঠিক ইতিহাস কেউই সেভাবে বলতে পারে না।তবে মুখে মুখে অনেক কাহিনীই প্রচলিত আছে। এ মিষ্টির জনক হিসেবে মধুসূদন পালের নাম লোকমুখে ঘুরে বেড়ায়।

কাঁচাগোল্লা কিন্তু গোল নয় আবার কাঁচাও নয়, লম্বাও নয়। তবুও নাম তার কাঁচাগোল্লা। খাঁটি দুধের ছানা ও চিনি কাঁচাগোল্লার প্রধান উপাদান। ১ কেজি কাঁচাগোল্লা তৈরিতে প্রায় ১ কেজি কাঁচা ছানা এবং ৪০০-৫০০ গ্রাম চিনির দরকার পড়ে। এ কাঁচাগোল্লায় একটি মিষ্টি কাঁচা ছানার মতো গন্ধ পাওয়া যায়, যা অন্য কোনো মিষ্টিতে পাওয়া যায় না।

মুক্তাগাছার মন্ডা

ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার মন্ডাও অনেক বিখ্যাত। আর অন্যন্য বিখ্যাত মিষ্টির মতোই এটি নিয়েও অনেক কিংবদন্তি চালু রয়েছে। একটি কিংবদন্তী এমন যে, ২০০ বছর আগে মুক্তাগাছার গোপাল পাল নামক এক মিষ্টি প্রস্তুতকারক নাকি স্বপ্নের মাধ্যমে এক ঋষির কাছ থেকে এ মন্ডা মিষ্টি তৈরির আদেশ পেয়েছিলেন। এ সাধুই নাকি তাকে এ মন্ডা মিষ্টি তৈরির কৌশল শিখিয়ে দিয়েছিলেন। যতদূর জানা যায় প্রথম মন্ডা মিষ্টি তৈরি হয় বাংলা ১২৩১ সালে।
m1

মন্ডার মূল উপাদান দুধ ও চিনি। এ মিষ্টিটি সাদা কাগজে মোড়ানো থাকে। মিষ্টিটি নরম এবং শুকনো।

নেত্রকোণার বালিশ মিষ্টি

নেত্রকোনা জেলার একটি প্রসিদ্ধ মিষ্টির নাম বালিশ মিষ্টি। এটি আকারে বালিশের মত বড় নয় ঠিকই কিন্তু আকৃতিগত দিক থেকে অনেকটাই বালিশের মতো।  এ মিষ্টির উপরে ক্ষীরের প্রলেপ থাকে বলে একে অনেকটাই বালিশের মতো দেখায়। এ মিষ্টি গোয়ানাথের বালিশ নামেও পরিচিত।
1

source: ajkerdeal.com

এ মিষ্টির জনক গোয়ানাথ ঘোষাল। উনার স্বপ্ন ছিল নতুন এমন এক মিষ্টি তৈরি করা যা তাকে ইতিহাসের পাতায় অমর করে দেবে। আর সে স্বপ্নেরই ফসল তার বালিশ মিষ্টি। এ মিষ্টি তৈরি হয় দুধ, ছানা, চিনি আর ময়দা দিয়ে। প্রথমে দুধের ছানার সঙ্গে সামান্য ময়দা মিশিয়ে মন্ডের মতো প্রস্তুত করা হয়। এরপর সেই মন্ড থেকে তৈরি করা হয় বিভিন্ন সাইজের বালিশ যা পরে চিনির গরম রসে ভাজা হয়। এরপর ঠান্ডা করে চিনির রসে ডুবিয়ে রাখা হয় বেশ কিছুক্ষণ। বিক্রি করার সময় আরেক দফা এর উপড় ক্ষীরের প্রলেপ দেয়া হয়। এ মিষ্টি বিক্রি হয় পিস হিসেব। এর তিন ধরনের আকৃতি আছে। তবে বড় আকৃতির বালিশের আকার সাধারণত ১৩-১৪ ইঞ্চির মতো হয়ে থাকে।

কুমিল্লার রসমালাই

কুমিল্লার রসমালাই কুমিল্লা জেলার এক ঐতিহ্য। একটি পাতিল বা কড়াইয়ে ১ মণ দুধ প্রায় ২ ঘন্টা ধরে জ্বাল দিয়ে ঘন করে ১৩-১৪ কেজি ক্ষীর তৈরি করা হয়। এ দুধ থেকে পাওয়া ছানার সাথে কিছু ময়দা মিশিয়ে ছোট ছোট রসগোল্লা রসগোল্লা তৈরি করা হয়।
2801_1444719066561ca9dae0480_primo_gh3_1241

source: bikkhatoshob.com

প্রথমদিকে কুমিল্লার রসমালাইয়ের নাম ছিল ক্ষীরভোগ। তখন মাটির হাঁড়িতে বিক্রি হতো এ মিষ্টি। পাকিস্তান আমলে অবাঙ্গালিরা এসে এ ক্ষীরভোগকে রসমালাই বলতে শুরু করে। সেখান থেকেই এ নাম প্রসিদ্ধ হয়ে যায়।

সাতক্ষীরার সন্দেশ

এ সন্দেশ তৈরি করা হয় খাঁটি দুধের ছানা দিয়ে। এর সাথে চিনি আর হালকা ময়দা জ্বালিয়ে সন্দেশ তৈরি করা হয়। এ সন্দেশ অত্যন্ত সুস্বাদু।

যশোরের জামতলার রসগোল্লা

যশোরের জামতলার রসগোল্লাকে সাদেক গোল্লাও বলা হয়। সাদেক আলী নামে এক ব্যক্তির হাত ধরেই এ রসগোল্লার সৃষ্টি। তিনি মারা গেছেন প্রায় ১৭ বছর হয়েছে। কিন্তু তার মিষ্টির সুখ্যাতি এখনও মানুষের মুখে মুখে ঘুরে বেড়ায়। এ মিষ্টির বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এতে মিষ্টির পরিমাণ কম।
rosogolla

source: amarjessore.com

দেশি গরুর দুধ, উন্নতমানের চিনি আর জ্বালানি হিসেবে এক নম্বর কাঠ এ মিষ্টি তৈরির মূল উপাদান। ১৯৫৫ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত সাদেক আলী নিজ হাতে এ মিষ্টি তৈরি করতেন যার ফলে এর সুনাম অক্ষুণ্ণ ছিল।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

বিক্ষোভ দমনে নির্বিচারে গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা

বিবিসি আই’র অনুসন্ধান বিক্ষোভ দমনে নির্বিচারে গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা

পাকিস্তানী অভিনেত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু

পাকিস্তানী অভিনেত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু

২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় ৪৫ মিলিমিটার বৃষ্টি, ঝরবে আজও

২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় ৪৫ মিলিমিটার বৃষ্টি, ঝরবে আজও

রিয়াল-পিএসজির সেমিফাইনালসহ টিভিতে আজ খেলার সূচি

রিয়াল-পিএসজির সেমিফাইনালসহ টিভিতে আজ খেলার সূচি

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App