হুম্মাম কাদেরের গুম নিয়ে যা কথা হয়েছিলো শেখ হাসিনার সাথে

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০১:১৭ পিএম
সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরীর গুমের ঘটনা ও ফিরে আসা, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহ আমান আযমীসহ বেশ কয়েকজনের কেস স্টাডি উল্লেখ রয়েছে গুম কমিশনের প্রথম প্রতিবেদনে। গুম কমিশনের প্রথম জমা দেওয়া রিপোর্টে লায়াবিলিটি অব ডিবি, ডিজিএফআই, সিটিটিসি এবং শেখ হাসিনা শিরোনামে হুম্মাম কাদের চৌধুরীর কেস স্টাডিতে একটি চ্যাপ্টারে উল্লেখ রয়েছে। হুম্মাম কাদের চৌধুরীকে অপহরণ করেছিল ডিবি। এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য তুলে ধরেছে আমার দেশ পত্রিকা।
পত্রিকার ঐ রিপোর্টে বলা হয়েছে পরবর্তী সময়ে হুম্মামকে হস্তান্তর করা হয় ডিজিএফআইয়ের কাছে। সর্বশেষ ডিজিএফআই থেকে হস্তান্তর করা হয় সিটিআইবির কাছে। হুম্মাম কাদের চৌধুরীকে অপহরণ ও গুম করে রাখার সঙ্গে জড়িত থাকায় ডিবির তৎকালীন প্রধান মনিরুল ইসলাম, ডিজিএফআই প্রধান জেনারেল আকবর এবং তৎকালীন সিটিআইবি প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলামকে দায়ী করা হয়েছে গুম তদন্ত কমিশনের জমা দেওয়া প্রথম প্রতিবেদনে।
কমিশনের রিপোর্টে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ডিজিএফআইয়ের তৎকালীন জেনারেল আকবর জিজ্ঞাসাবাদে প্রথমে অস্বীকার করলেও পরবর্তী সময়ে স্বীকার করেছেন, হুম্মাম কাদেরের অপহরণের পর শেখ হাসিনার সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে অন্তত দুইবার আলোচনা করেছিলেন। এছাড়া তারেক সিদ্দিকীর সঙ্গেও একবার আলোচনা করেছেন হুম্মাম কাদের প্রসঙ্গে।
হুম্মাম কাদেরের পরিবারের রাজনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা বিবেচনায় তাকে ছেড়ে দেওয়া নিয়ে আলোচনা করেছেন। তখন শেখ হাসিনা তাকে বলেছিলেন, ‘আচ্ছা দেখি’। বলেছিলেন, ‘এ বিষয়ে কি অ্যাডভাইজারের সঙ্গে আলোচনা করেছেন?’। কমিশনের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, তাহলে কি হুম্মামকে ছেড়ে দেওয়ার পুরো এখতিয়ার শেখ হাসিনার ছিল? জানতে চাওয়া হয়েছিল জেনারেল আকবরের কাছে। জবাবে আকবর জানিয়েছেন, ‘এভরিথিং ক্যান হেপেন, ইফ পিএম ওয়ান্টস টু হেপেন’ (প্রধানমন্ত্রী যা চাইতেন তাই ঘটত)।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, গুমের ঘটনাগুলো নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাবেক চিফ অব আর্মি স্টাফ মেজর জেনারেল শফিউল আবেদীনকে তলব করেছিল কমিশন। তিনি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। কমিশনের সমনের জবাব দিতে সাড়া না দিয়ে জবাবদিহিতা এড়ানোর চেষ্টা করেছেন।
এ প্রসঙ্গে কমিশনের রিপোর্টে আরও উল্লেখ করা হয়, হুম্মাম কাদের চৌধুরীকে গোপন বন্দিশালা থেকে ছেড়ে দেওয়ার আগে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছিল প্রধানমন্ত্রী তাকে দ্বিতীয় জীবন লাভের সুযোগ করে দিচ্ছেন। তাকে বলা হয়েছিল, প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে তাকে রাজনীতি থেকে বিরত থাকতে হবে। আরও বলা হয়েছিল, দেশ ছাড়তে হবে এবং পরিস্থিতির উন্নতি হলেই কেবল ফিরতে পারবে। একই কথা দ্বিতীয়বার স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছিল হুম্মামকে।