খালেদা-সেনা প্রধান বৈঠক নিয়ে জনমনে কৌতূহল, বার্তা কী?

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৫:৩৭ পিএম
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে গত বৃহস্পতিবার রাতে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের আকস্মিক সাক্ষাৎ রাজনৈতিক মহলে নানা কৌতূহলের জন্ম দিয়েছে। এটিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য ও চিকিৎসার খোঁজ নিতে সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎ বলা হলেও ঘটনাটিকে ‘অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ’ মনে করছেন বিশ্লেষক-রাজনীতিকসহ অনেকে।
উন্নত চিকিৎসার জন্য শিগগিরই বিদেশে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। অসুস্থতার কারণে তিনি দীর্ঘদিন গুলশানের বাসভবন ফিরোজার চার দেয়ালের মধ্যে রয়েছেন। মাঝেমধ্যেই চিকিৎসাসেবা নিতে তাঁকে হাসপাতালে যেতে হয়। এর মধ্যেই সেনাপ্রধান সস্ত্রীক তাঁর বাসায় গেলেন।
দায়িত্বশীল সূত্রগুলোর তথ্যমতে, খালেদা জিয়ার সঙ্গে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের বৈঠক হয় ৪৩ মিনিটের মতো। খালেদা জিয়ার দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন সেনাপ্রধান। সাক্ষাতের সময় ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী সারাহনাজ কমলিকা জামানও ছিলেন। অনেকটা আকস্মিক সাক্ষাতের বিষয়টি নিয়ে চলছে নানা জল্পনাকল্পনা। রাজনীতি বোদ্ধারা এটাকে শুধু সৌজন্য সাক্ষাতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখতে চাচ্ছেন না। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সেনাপ্রধানের দেখা করার ঘটনাটি তাই ব্যাপক আলোচনা তৈরি করেছে।
সাক্ষাতের ব্যাপারে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তবে এটা জানায়, খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নিতে এটা একান্তই সৌজন্য সাক্ষাৎ। রাত সাড়ে ৮টা থেকে অনুষ্ঠিত এই বৈঠক ৪৩ মিনিট স্থায়ী হয়। অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে তাদের সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয় বলে জানা গেছে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, রাত সাড়ে ৮টার দিকে সেনাপ্রধান ও তাঁর স্ত্রী গাড়িতে করে খালেদা জিয়ার বাসভবনে প্রবেশ করেন। সাক্ষাতের সময় খালেদা জিয়া, ফজলে এলাহি আকবর এবং সেনাপ্রধান ও তাঁর স্ত্রী ছিলেন। এর আগে সেনাপ্রধানের সাক্ষাতের বিষয় নিশ্চিত হওয়ার পরপরই বাসায় নাশতা তৈরি করে রাখা হয়।
বৈঠকের নেপথ্যে কী ধরনের আলোচনার সূত্রপাত হতে পারে, তা নিয়ে ব্যাপক কৌতূহল দেখা দিয়েছে। কারণ, প্রতিদিনই নানা ইস্যুতে পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে রাজনীতির মাঠে ধীরে ধীরে উত্তাপ ছড়াচ্ছে। বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের দীর্ঘদিনের পুরোনো মিত্রতা থাকলেও কথার মারপ্যাঁচে একে অন্যকে আক্রমণ করছে। রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ, সংবিধান পরিবর্তন ইস্যুতে বিএনপির সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিবাদের জায়গাও স্পষ্ট। এসব নিয়ে আগামী নির্বাচনের আগে পরিস্থিতি অনেক ধরনের নাটকীয় মোড় নিতে পারে বলে কারও কারও ভাষ্য।
তবে, অনেকেই মনে করছেন এই সাক্ষাৎ রাজনীতির মাঠে এক ধরনের বার্তা, এতদিন যারা ওয়ান-ইলেভেনের মতো ‘মাইনাস টু ফর্মুলা’ বাস্তবায়নের স্বপ্নে বিভোর ছিলেন, তারা একটু হলেও ধাক্কা খাবেন।