সিরিয়ায় ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট আসাদের বাবার কবর পুড়িয়ে দিলো বিদ্রোহী যোদ্ধারা

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৩৬ পিএম
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে সেখানকার নানা চিত্র ধরা পড়েছে ক্যামেরায়। একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, সিরিয়ার বিরোধী গোষ্ঠী ভেঙে ফেলেছে মূর্তি। সিরিয়ার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট তথা বাশার আল-আসাদের বাবা হাফিজ আল-আসাদের মূর্তি সেটি। শুধু ভেঙে ফেলাই নয়, সেটাকে একটি গাড়ির সঙ্গে বেঁধে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। মূর্তির উপর বসে রয়েছেন অনেকেই। এই ভিডিওর সঙ্গে কিছুটা যেন মিল যায় বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া কিছু চিত্রের।
কয়েক মাস আগের ঘটনা। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ে নিয়েছেন ভারতে। তবে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে ভাঙচুর সহ আন্দোলন কারীদের এমন কিছু ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছিল। শুধু তাই নয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের মূর্তিও উপড়ে ফেলা হয়েছিল। আর এই ঘটনাগুলো ঘটেছিলো তাঁর কন্যা শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর। বিভিন্ন জায়গায় মুর্তি ভাঙা নিয়ে উল্লাস করতে দেখা গিয়েছোলো জনতাকে। সিরিয়ার দৃশ্যের সঙ্গে এর অনেকটা মিল খুঁজছেন অনেকেই।
এবার ক্যামেরায় ধরা পড়েছে আরো ভয়াবহ ঘটনা। সিরিয়ার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বাবা হাফিজ আল-আসাদের কবরে আগুন দিয়েছেন দেশটির বিদ্রোহীরা। ১১ ডিসেম্বর দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় লাতাকিয়া প্রদেশের কারদাহায় অবস্থিত আসাদের বাবার কবরে আগুন দেন তারা।ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির ধারণ করা ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, বিদ্রোহী যোদ্ধারা হাফিজ আল-আসাদের কবরে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছেন। এ সময় বিদ্রোহীদের কয়েকজন সেখানে পতাকা হাতে দাঁড়িয়ে কবর পুড়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখেন।
যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক সিরীয় মানবাধিকার সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস এএফপিকে বলেছে, ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের আলাউইত সম্প্রদায় অধ্যুষিত লাতাকিয়া প্রদেশের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত হাফিজ আল-আসাদের কবরে আগুন দিয়েছেন বিদ্রোহীরা।ভিডিওতে দেখা যায়, কারদাহায় হাফিজের কবরে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দিচ্ছেন ক্ষুব্ধ বিদ্রোহী যোদ্ধারা। এছাড়া তাদের ধরিয়ে দেয়া আগুনে কবরস্থানের অন্যান্য স্থাপনাও পুড়ে যায় এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
আসাদের বাবা ২০১২ সালে মারা যান। তাকে লাতাকিয়ার কারদাহাতে পরিবারের পৈতৃক সমাধিতে দাফন করা হয়। তিনি ১৯৭১ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত সিরিয়ার ক্ষমতায় ছিলেন। তার মৃত্যুর পর সিরিয়ার ক্ষমতার মসনদে বসেন বাশার আল-আসাদ। ক্ষমতার প্রথম দিকে দেশটিতে ব্যাপক সংস্কারের পথে এগোলেও পরবর্তীতে বাবার মতোই কর্তৃত্ববাদী শাসকে পরিণত হন। যা তাকে শেষ পর্যন্ত দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য করে।
হাফিজ আল-আসাদের কবর বিশাল উঁচু কাঠামোর নিচে অবস্থিত। জটিল স্থাপত্য নকশায় তৈরি এই কবরের বাইরের অংশ পাথরে খোদাই করা। সেখানে বাশার আল-আসাদের ভাই বাসেলসহ আসাদ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরও কবর রয়েছে। ১৯৯৪ সালে এক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার আগে বাশারের এই ভাইকে তার বাবার মসনদের উত্তরাধিকারী হিসেবে মনে করা হতো।