সিরিয়ায় আসাদের পতনে ইসরায়েলকে লাভবান করেছে তুরষ্ক, এরপর কী হবে?

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:১১ পিএম
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতনের পর থেকে ওই অঞ্চলে জোর সামরিক তৎপরতা শুরু করেছে ইসরায়েল। ইতোমধ্যেই গোলান বাফার জোন 'সাময়িকভাবে' নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়ার পাশাপাশি সিরিয়াজুড়ে বিমান হামলাও চালিয়েছে তারা। আসাদ পরিবারের পাঁচ দশকের শাসনের অবসান আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক রাজনীতির জন্য কী বয়ে আনবে তা নিয়ে বিচার-বিশ্লেষণ চলছে।
আসাদ ক্ষমতাচ্যুত হবার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু একে 'মধ্যপ্রাচ্যের জন্য ঐতিহাসিক দিন' বলে মন্তব্য করেন। এদিকে, বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও জো বাইডেন দুইজনই বাশার আল আসাদের পতনের জন্য কৃতিত্ব দাবি করছেন। তবে এর বিনিময়ে তাদের প্রাপ্তির খাতায় যোগ হতে পারে, ইরানের সামরিক যোগাযোগ ও সরবরাহ ব্যবস্থাকে দুর্বল করে ফেলার মতো অর্জন।
বাশার আল আসাদ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ শক্তির জায়গা হিসেবে বিবেচনা করা হতো ইরান এবং হেজবুল্লাহকে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাস ইসরায়েলে হামলা করলে গাজা যুদ্ধের সূচনা হয় যা লেবাননেও ছড়িয়ে পড়ে। যার প্রভাব পড়ে হেজবুল্লাহর ওপর। বছরব্যাপী লড়াইয়ের পর গত ২৭শে নভেম্বর হেজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। সেদিনই বিস্ময়করভাবে হামলা করে দ্রুত আলেপ্পো দখল করে নেয় হায়াত তাহরির আল-শাম বা এইচটিএস এর নেতৃত্বে সিরিয়ার বিরোধী গোষ্ঠী।
সিরিয়া ইস্যুতে ইসরায়েলের লাভকে বিবেচনা করতে আঞ্চলিক শত্রু ইরানের ক্ষতির মাপকাঠিতে দেখছে বিশ্লেষকরা। মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ইরানের একটি প্রক্সি নেটওয়ার্ক সক্রিয়। লেবাননে হেজবুল্লাহ, ইয়েমেনে হুতি, ইরাকেও কিছু সশস্ত্র গোষ্ঠী ইরানের সহযোগী শক্তি হিসেবে তৎপর। সিরিয়ায় সেই নেটওয়ার্কেরই মিত্র হিসেবে ছিলেন বাশার আল আসাদ।"তাই আসাদের পতনে ইসরায়েল সবচেয়ে বড় বেনিফিশিয়ারি বলে ধরে নেয়া হচ্ছে।
ইসরায়েল ১৯৬৭ সালে সিরিয়ার সাথে ছয় দিনের যুদ্ধের সময় গোলান দখল করে এবং ১৯৮১ সালে একতরফাভাবে এটি নিজেদের সাথে যুক্ত করে নেয়। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এটিকে স্বীকৃতি না দিলেও ডোনাল্ড ট্রাম্পের আগের মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্র এর স্বীকৃতি দেয়। এদিকে, বিদ্রোহীরা আসাদকে উৎখাতের পর, সোমবারই গোলানের বাফার জোন অর্থাৎ যেখানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীরা ছিল সেখানে নিজের সৈন্যদের প্রবেশের ছবি প্রকাশ করে ইসরায়েল।
অন্যদিকে, সিরিয়ায় বিদ্রোহীদের সমর্থন করায় নানা সময় সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে তুরস্ককে। তবুও পিছপা হয়নি তুরস্ক। নানা প্রতিকূলতা সত্যেও সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদ সরকার বিরোধীদের সমর্থন দিয়ে গেছে দেশটি। অবশেষে সেই সাফল্যটাও পেয়েছে তারা। শেষ পর্যন্ত বিদ্রোহীদের চাপে ক্ষমতা ছেড়ে দেশত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন প্রেসিডেন্ট আসাদ।