নতুন উপদেষ্টা নিয়োগ নিয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে সরকারের দূরুত্ব কোথায়?

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৫৮ পিএম
৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর নতুন সরকার গঠনের তিন মাস পর আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মধ্যে এক ধরনের বিরোধপূর্ণ সম্পর্ক দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে নতুন সদস্য যুক্ত হওয়ার ঘটনায় প্রকাশ্যে রূপ নিয়েছে এই বিরোধ। এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ কর্মসূচির পাশাপাশি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অনেককে ফেসবুকে প্রোফাইল ছবি লাল করেও প্রতিবাদ জানাতে দেখা যাচ্ছে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হামলার পর ফেসবুকে প্রোফাইল ছবি লাল করার কর্মসূচি দিয়েছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সেই কর্মসূচি সাদরে গ্রহণ করেছিল নেটিজেনরা। ফেসবুক প্রোফাইলে লাল ছবির সয়লাব দেখা গিয়েছিল। শিক্ষার্থীদের সেই আন্দোলন একপর্যায়ে রূপ নেয় ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে। ওই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে পতন হয় শেখ হাসিনা সরকারের। দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তী সরকার।
যে শিক্ষার্থীদের সমর্থন নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হলো তারাই কেন প্রতিবাদ করছে? শুধুই কি উপদেষ্টা পরিষদ গঠন নাকি ক্ষমতাকেন্দ্রিক দ্বন্দ্বও আছে- সেই প্রশ্নও সামনে আসছে। জবাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠকরা বলেছেন, উপদেষ্টা নিয়োগসহ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বেশ কিছু কার্যক্রম নিয়ে তাদের কাছেও প্রশ্ন উঠেছে।
সংগঠনটির আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, “বর্তমানে এই সরকারের বিভিন্ন ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রক্রিয়া নিয়ে আমাদের যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। সেই সাথে তাদের কিছু কিছু কাজে জনআকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন না থাকায় আমরা প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”নতুন উপদেষ্টা নিয়োগ ইস্যুর আগে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ, সংবিধান বাতিলসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বেশ কিছু দাবি তুললেও সে সব দাবিও বাস্তবায়ন হয়নি।
এরপর থেকেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাথে কিছুটা দূরত্ব দেখা গেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন সরকারে থাকা ছাত্র প্রতিনিধিদের সাথে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাঠের নেতাদের কোনো না কোনো কারণে দূরত্ব তৈরি হয়েছে। সেখান থেকেই হয়তো বিরোধের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসছে।
সম্প্রতি উপদেষ্টা পরিষদে নতুন তিনজনকে নিয়োগ দিয়েছে সরকার। তাদের মধ্যে দুজনকে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। চলচ্চিত্র নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ও ব্যবসায়ী সেখ বশির উদ্দিনের নিয়োগের প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে শিক্ষার্থীরা। আর সেখানেই শিক্ষার্থীদের সাথে সরকারের দূরুত্বের বিষয়টি ষ্পষ্ট হয়েছে।
উপদেষ্টা নিয়োগ প্রসঙ্গে হাসনাত আবদুল্লাহ সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমরা চাই আপনারা দ্রুত তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। ছাত্র-নাগরিকদের অংশগ্রহণ ছাড়া যদি কোনো সিদ্ধান্ত নেন, তা মেনে নেওয়া হবে না। দ্রুত এই সিদ্ধান্তের সমাধানও দেখতে চান হাসনাত।