সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার পরিবারের নামে থাকা দেশ-বিদেশের ৫৮০ টি বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্ট/জমিসহ স্থাবর সম্পদ জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুটি ব্যাংকের হিসাব ও বাংলাদেশের একটি ব্যাংকের হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুর্নীতি দমন কমিশন ও আদালতের একাধিক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

দুদকের উপপরিচালক রাম প্রসাদ মণ্ডল গেল বুধবার সাবেক মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার স্ত্রী রুকমীলা জামানের মালিকানাধীন স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তিগুলো ক্রোক বা অবরুদ্ধ করার জন্য আবেদন করেন। পরে শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালত সাবেক মন্ত্রীর সম্পত্তি জব্দ ও ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দেন।

দুদকের আবেদন সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাজ্যে ৩৪৩টি, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২২৮টি এবং যুক্তরাষ্ট্রে নয়টিসহ অন্যান্য দেশেও বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্ট/জমিসহ অন্যান্য স্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন সাইফুজ্জামান। সংশ্লিষ্ট দেশের ভূমি রেজিস্ট্রি ও অন্যান্য তথ্যাদি ও রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় এমন তথ্য উঠে এসেছে। সম্পদগুলো তিনি ও পরিবারের সদস্যদের নামে ২০১৫ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে কিনেছেন এবং সে সময় তিনি বাংলাদেশ সরকারের ভূমি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ও মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। 

ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন সাইফুজ্জামান। পরে তার স্ত্রী রুকমীলা জামান ২০১৭ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এ প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ছিলেন। এই ব্যাংক থেকে তারা নামে-বেনামে ঋণ গ্রহণ করেছেন বলেও সত্যতা পেয়েছে দুদক।বাংলাদেশে তার ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে আয়কর নথি পর্যালোচনায় দেখা যায়, বিদেশি এসব সম্পদ অর্জনের বিষয়টি বাংলাদেশের আয়কর নথিতে উল্লেখ করেননি সাইফুজ্জামান। 

৭ অক্টোবর সাবেক মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার স্ত্রী রুকমীলা জামানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত। এছাড়া আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার স্ত্রী রুকমীলা জামানের নামে থাকা সব ধরনের ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইনটেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।

২০১৩ সালের উপনির্বাচনে চট্টগ্রাম-১২ আসন থেকে সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হন সাইফুজ্জামান। এরপর ২০১৪ সালের ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি চট্টগ্রাম-১৩ আসন থেকে সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি চট্টগ্রাম-১৩ আসন থেকে আবারও নির্বাচিত হন। পরে তিনি ২০১৯ সালে ভূমি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পান। ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি চট্টগ্রাম-১৩ আসন থেকে ফের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।