নোয়াখালীতে সরকারি জমি দখল, তোয়াক্কা করছে না বিধিমালা

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:০৪ পিএম
নোয়াখালীর মাইজদিতে চান্দিনা ভিটি কিংবা হাট বাজারের জমি বন্দোবস্ত নিয়ে দোকানঘর নির্মাণ করে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী লোক। পরবর্তীতে বন্দোবস্তের চার থেকে পাঁচগুণ জায়গা অবৈধভাবে দখলে নিয়ে বিল্ডিং কোড না মেনেই গড়ে তোলা হচ্ছে বহুতল ভবন। এভাবেই বেহাত হয়ে যাচ্ছে সরকারের হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি।
ব্যবসায়ী সাহাব উদ্দিন খোকন। নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীর প্রধান সড়কের পশ্চিম পাশে গণপূর্ত বিভাগের কাছ থেকে ৬৫ ফুট সরকারি ভূমি চান্দিনা ভিটি হিসেবে বন্দোবস্ত নিয়ে গড়ে তোলেন বিশাল সেন্টার নামের একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। ২০১৭ সালে নোয়াখালী চার লেন সড়ক বাস্তবায়নের জন্য বন্দোবস্তকৃত ওই ৬৫ ফুট চান্দিনা ভিটি থেকে ২৪ ফুট ভূমি অধিগ্রহণ করে নেয় সরকার।
এজন্য ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী সাহাব উদ্দিন খোকনকে ৮৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়। কিন্তু সরকারের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ নিয়েও তার বন্দোবস্তকৃত ৪১ ফুট জায়গার বাহিরে দখল করে নেয়। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের ছত্রছায়ায় প্রতিষ্ঠানের পিছনের অংশের ৩০০ ফুট খালি সরকারি খাস জায়গা অবৈধভাবে দখল করে। নোয়াখালী পৌরসভার বিল্ডিং কোড না মেনেই গড়ে তোলেন বহুতল ভবন।
শুধু সাহাব উদ্দিন খোকনই নয়, জেলা শহরের সোনালী ব্যাংকের দক্ষিণ পাশ থেকে বক্শি মিজির পোল পর্যন্ত প্রধান সড়কের পশ্চিম পাশে ৬৫ ফুট সরকারি ভূমি চান্দিনা ভিটি বন্দোবস্ত নেয়া হয়। কিন্তু বেশিরভাগ ব্যবসায়ী প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে অবৈধভাবে ৩০০ থেকে ৪০০ ফুট সরকারি জায়গা দখল করে গড়ে তুলেন অবৈধ স্থাপনা।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের বিষয়ে বিভিন্ন সময় সভা-সেমিনার ও প্রশাসনের কাছে জোর আবেদন-নিবেদন করেও কোন ফল পাওয়া যায়নি। জলাশয় ও খাল দখল করে এসব অবৈধ স্থাপনা গড়ে তোলায় জেলা শহরে জলাবদ্ধতা ও বন্যার মতো ভয়াবহ পরিস্থিতির তৈরি হয়। মানবসৃষ্ট এসব সমস্যা সমাধানে দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।
নোয়াখালী শহরের সৌন্দর্য রক্ষায় এবং জলাবদ্ধতা নিরসনে রাজনৈতিক মহলের পক্ষ থেকেও এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের দাবি তোলা হয়েছে।
সরকারি জায়গা দখলের বিষয়টি স্বীকার করে গণপূর্ত বিভাগ নোয়াখালীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে সরেজমিন পর্যবেক্ষণ করে আগামী এক মাসের মধ্যে অবৈধ এসব স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ চাইবেন তারা।
শহরের এসব অবৈধ স্থাপনা শীঘ্রই উচ্ছেদের আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ। দ্রুত সময়ের মধ্যে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে সরকারে হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি উদ্ধার করবে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন এমনটাই প্রত্যাশা নোয়াখালীবাসীর।