ভারতের দেয়া শেখ হাসিনার ট্রাভেল ডকুমেন্টে যে বিশেষগুলো থাকছে

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০২:০০ পিএম
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট দেশ ভারতে আশ্রয় নেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরমধ্যে যুক্তরাজ্যে বসবাসরত এক আওয়ামী লীগ নেতা দাবি করেছেন, হাসিনাকে ‘ভ্রমণ ডকুমেন্ট’ দিয়েছে ভারত। যদিও দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়নি। তবে হাসিনাকে যদি ভারত সরকার ভ্রমণ ডকুমেন্ট দিয়ে থাকে, তাহলে তিনি এটি দিয়ে কী করতে পারবেন? কী কী সুবিধা পাচ্ছেন বিশেষ এই ভ্রমণ ডকুমেন্টে?
যদি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সত্যিই ভারতের কাছ থেকে ভ্রমণ ডকুমেন্ট পেয়ে থাকেন তাহলে তিনি এটি দিয়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশের ভিসার আবেদন করতে পারবেন এবং সেটি দিয়ে সেসব দেশে যেতে পারবেন। ভ্রমণ ডকুমেন্ট হলো এমন একটি বিষয় যা যে কোনো দেশের সরকার যে কোনো আশ্রয়প্রার্থীকে দিতে পারে। যেটিকে অনেকটা পাসপোর্টের মতো ব্যবহার করা হয়।
ভারতের সাবেক এক কূটনীতিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছেন, হাসিনাকে ভারত সরকার ভ্রমণ ডকুমেন্ট এবং রাজনৈতিক আশ্রয় দিলেও এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। কারণ এই পরিস্থিতিতে এটাই স্বাভাবিক এবং প্রত্যাশিত পদক্ষেপ। এই কূটনীতিকের মতে, হাসিনাকে যদি বেশিদিন ভারতে থাকতে হয় তাহলে তিনি বেশিদিন আড়ালে থাকতে পারবেন না। তাকে প্রকাশ্যে আসতে হবে এবং দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বিভিন্ন দেশে গিয়ে যোগাযোগ করতে হবে।
তিনি আরো বলেছেন, ‘ভারতে ম্যাকলিয়ডগঞ্জসহ বিভিন্ন জায়গায় যে কয়েক লাখ তিব্বতি শরণার্থী থাকেন, তারাও কিন্তু বেশির ভাগই ভারতের পাসপোর্টধারী নন। বরং এই ধরনের ট্রাভেল ডকুমেন্ট (সংক্ষেপে যেটাকে বলে টিডি) নিয়েই তারা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সফর করেন।’
ভ্রমণ ডকুমেন্ট পাসপোর্ট নয়, বরং ভারত সরকারের জারি করা একটি বিশেষ ধরনের ‘পরিচয়পত্র’; যা দিয়ে বিদেশ সফরও করা যায়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ এতে ভিসাও দিয়ে থাকে। এর পোশাকি নাম হল ‘আইডেন্টিটি সার্টিফিকেট’ বা আইসি। ভারতের সাধারণ পাসপোর্ট গাঢ় নীল রঙের হলেও আইসি সাধারণত হলুদ রঙের একটি বুকলেটের আকারে জারি করা হয়।
তিব্বতি ধর্মগুরু চতুর্দশ দালাই লামা– যিনি ১৯৫৯ সালে চীনের চোখ এড়িয়ে ভারতে পালিয়ে আসেন এবং এ দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় লাভ করেন। তিনিও এ ধরনের একটি ‘ট্রাভেল ডকুমেন্ট’ বা আইসি নিয়েই সারা পৃথিবী চষে বেড়ান। ভারতের পাসপোর্ট নেওয়ার সুযোগ থাকলেও আজ
পর্যন্ত তিনি সেটি গ্রহণ করেননি।
দ্বিতীয় বা তৃতীয় প্রজন্মের যে তিব্বতিরা ভারতের মাটিতেই জন্মগ্রহণ করেছেন তারাও জন্মসূত্রে ভারতীয় নাগরিক হওয়ার অধিকারী। কিন্তু তাদেরও বেশিরভাগই ভারতীয় পাসপোর্ট না নিয়ে তার বদলে এই ‘টিডি’ বা ‘আইসি’ নিয়েই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চলাফেরা করেন।
‘একইভাবে রাজনৈতিক প্রয়োজনে, বিশ্বময় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে দেখা করতে শেখ হাসিনাকেও ভারতের বাইরে যেতে হবে, এটাই স্বাভাবিক। সেই বাস্তবতা অনুধাবন করে ভারত যদি তাকে টিডি বা আইসি দিয়ে থাকে, সেটাতে তাই অবাক হওয়ার কিছু নেই।’