গোপন উদ্দেশ্যে আবু সাঈদ ও ইউনূসবিরোধী পোস্ট করেন ম্যাজিস্ট্রেট ঊর্মি

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৫৬ এএম
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়া বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শহিদ আবু সাঈদকে ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দিয়েছেন লালমনিরহাট জেলা প্রশাসনের সদ্য বরখাস্ত হওয়া সেই বিতর্কিত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাপসী তাবাসসুম ঊর্মি। গেল ৫ অক্টোবর শনিবার ফেসবুক পোস্টে আবু সাঈদকে ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দিয়ে ঊর্মি লেখেন- মানে কত বড় বোকার স্বর্গে আছি এইটা শুধু চিন্তা করি। আবু সাইদ! বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী, সন্ত্রাসী একটা ছেলে- যে কী না বিশৃঙ্খলা করতে গিয়ে নিজের দলের লোকের হাতেই মারা পড়ল, সে নাকি শহিদ! এটাও এখন মানা লাগবে!
আবু সাইদের বাড়িতে যাওয়ায় প্রধান উপদেষ্টার সমালোচনা করে তিনি আরও লেখেন, এই আহাম্মকি ভ্রমণের জন্য এত বড় গাড়িবহর পুরো বিভাগ থেকে যে গেল তার তেল খরচ কে দিয়েছে? যাই হোক, ভিডিওটা দেখুন। ভালো মতো দেখুন আর মুখস্থ করুন। আর কী বলব!
এদিকে ফেসবুকে বিতর্কিত পোস্ট দেওয়ার কারণে তাপসী তাবাসসুম ঊর্মিকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে সরকার। সোমবার বিকালে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, ওএসডি হওয়া কর্মকর্তা তাপসী তাবাসসুম উর্মিকে বরখাস্ত করা হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এর আগে গেল শনিবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে আক্রমণ করে তাপসী তাবাসসুম উর্মি নিজের ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘সাংবিধানিক ভিত্তিহীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, রিসেট বাটনে পুশ করা হয়েছে। অতীত মুছে গেছে। রিসেট বাটনে ক্লিক করে দেশের সব অতীত ইতিহাস মুছে ফেলেছেন তিনি। এতই সহজ। কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গেছে আপনার, মহাশয়।’ এরপর গেল রোববার তাকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা ওএসডি করে প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
তবে কেউ কেউ ম্যাজিস্ট্রেট ঊর্মির এসব উস্কানিমূলক বক্তব্য এবং এরপরই তার বহিষ্কার হওয়া নিয়ে ভিন্নধর্মী মূল্যায়ন করেছেন। তারা মনে করেন- আওয়ামী লীগ সরকারের সান্নিধ্যে ২০২২ সালে নিয়োগ পাওয়া ম্যাজিস্ট্রেট ঊর্মি আগেই বুঝতে পেরেছিলেন যে- তাকে যেকোন সময় অন্তর্বর্তী সরকার বহিষ্কার করতে পারেন। তাই চাকরির পাশাপাশি তাকে সবই হারাতে হবে। আর সেটা বুঝতে পেরেই তিনি আগে থেকেই আওয়ামী লীগের পক্ষে এবং অন্তর্বর্তী সরকারের বিপক্ষে এসব উস্কানিমূলক মন্তব্য করেন সামাজিক মাধ্যমে। যে চাকরি তার এমনিতেই যেতো- সেই চাকরি নিজ ইচ্ছায় হারানোর নাটক সাজাতেই এসব উস্কানিমূলক পোস্ট করেন ঊর্মি। আর সেই সঙ্গে বোনাস হিসেবে পেয়ে গেলেন আওয়ামী লীগের জোরালো সমর্থন। অর্থাৎ, এক ঢিলে দুই পাখি মেরেছেন এই ধূর্ত নারী।