খেলা হবে খেলা হবে বলে রাজনীতির মাঠ কাঁপাতেন তিনি। সময়ের ব্যবধানে সেই তিনিই এখন পালিয়েছেন দেশে ছেড়ে। বলছি নারায়ণগঞ্জের আলোচিত এমপি শামীম ওসমানের কথা। শুধু তিনিই নন, গ্রেফতার এড়াতে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়াও ছেড়েছেন দেশ। শামীম দিল্লিতে এবং নাওফেল পশ্চিমবঙ্গের বারাসাতে রয়েছেন। কিভাবে কোন পথে তারা পালিয়েছেন বিস্তারিত জানবো নুরুল আবসারের রিপোর্টে- 

খেলা হবে খেলা হবে বলে যিনি মাঠ কাঁপাতেন খেলা শুরুর আগেই মাঠ ছেড়ে পালিয়েছেন সেই শামিম উসমান। সরকার পতনের পর সাবেক মন্ত্রী-এমপিসহ রাজনীতিবিদদের মধ্যে যারা ভারতে যেতে সক্ষম হয়েছেন তাদের মধ্যে অন্যতম নারায়ণগঞ্জের আলোচিত এমপি শামীম ওসমান, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া। এদের মধ্যে শামীম ওসমান দিল্লিতে এবং নওফেল ও বিপ্লব বড়ুয়া পশ্চিমবঙ্গে বারাসাত এলাকায় অবস্থান করছেন।

জানা যায়, দালালদের সহায়তায় গত ৮ সেপ্টেম্বর নওফেল ও বিপ্লব বড়ুয়া ভারতে পৌঁছান। সেখানে বারাসাত এলাকায় চট্টগ্রামে জন্ম নেয়া ভারতীয় নাগরিক জুয়েলের বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেন। এক পর্যায়ে ভারতে চিকিৎসাধীন বিপ্লব বড়ুয়ার ভাই এবং চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপপরিচালক বিদ্যুৎ বড়ুয়া সেখানে তাদের সঙ্গে যোগ দেন।

অভিযোগ আছে, ভিআইপিদের অনেকে পার হওয়ার সময় দুদেশের প্রশাসনের লোকজনের সহায়তা নিয়েছেন। যদিও এ বিষয়ে কেউ মুখ খুলতে নারাজ। আওয়ামী সরকারের সাজানো প্রশাসন হওয়ায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে অনেকে তাদের নির্বিঘ্নে দেশ ছাড়তে সব ধরনের সহায়তা দিয়েছেন এবং এখনো দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

গত ৩ আগস্ট শামীম ওসমান দেশ ছেড়েছেন বলে চাউর হয়েছিল। কিন্তু তিনি সেদিন ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কার্যালয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে সাংবাদিকদের জানান, তিনি দেশেই আছেন।

৫ সেপ্টেম্বর সরকার পতনের ঠিক এক মাসের মাথায় তাকে দিল্লির নিজাম উদ্দিন আউলিয়ার দরগায় দেখা গেছে। জানা গেছে, সরকার পতনের পর শামীম ওসমান দালালদের সহায়তায় রাতের আঁধারে বোরকা পরে ভারতে পালিয়ে যান। তিনি এখন দিল্লিতে অবস্থান করছেন। 

স্থানীয় লোকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সাতক্ষীরার কলারোয়া, দেবহাটা, কালীগঞ্জ ও শ্যামনগর উপজেলার সীমান্তের কয়েকটি জায়গা মানব পাচারের জন্য দালালচক্রের স্বর্গরাজ্য হিসাবে পরিচিত। স্বাভাবিক সময়ে এসব ঘাট দিয়ে পাসপোর্ট ছাড়া ভারত যেতে মাথাপিছু ১০ থেকে ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে টাকার অঙ্ক বেড়েছে। আওয়ামী লীগের নেতারা ৫ থেকে ২০ লাখ টাকার চুক্তিতে ভারতে ঢুকছেন।