কারো কাছে হাত না পেতে ৫১ বছর বয়সী রিনা হাতে তুলে নিয়েছেন বৈঠা

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৬ জুন ২০২৪, ০৪:০০ পিএম
বাড়ির পাশ দিয়ে বয়ে গেছে উব্দাখালী নদী। সেখানে প্রতিদিন সকাল থেকে বৈঠা হাতে শুরু হয় ৫১ বছর বয়সী রিনা বেগমের জীবন যুদ্ধ। করেন খেয়া পারাপার। যা চলে রাত পর্যন্ত। ঝড় বৃষ্টি কিংবা রোদ কোনও কিছুই দমিয়ে রাখতে পারে না এই জীবন সংগ্রামীকে।
মানুষ পারাপার করে প্রতিদিন শ'দেড়েক টাকার মতো আয় করেন তিনি। সে টাকায় চলে স্বামীহারা রিনার সংসার।
সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার সদর ইউনিয়নের উব্দাখালী নদীর পাড় ঘেঁষা তেলীপাড়া গ্রামের মৃত মারফত আলীর স্ত্রী রিনা। দুই ছেলে ও এক মেয়ে সন্তান রেকে রিনার স্বামী মারা যান ৭ বছর আগে। তখন থেকেই লোকজনের বাসা বাড়িতে কাজ করে এবং গ্রামে গ্রামে ঘুরে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস ফেরি করতেন। সে আয় দিয়েই শক্ত হাতে সংসারের হাল ধরে ৩ সন্তানকে ভরণপোষণ ও বিয়ে দিয়েছেন।
তাঁর স্বামীর কোনো ভিটেমাটি না থাকায় তিনি তাঁর সন্তানদের নিয়ে প্রতিবেশীদের বাড়িতে ঘর বেঁধে বসবাস করছেন। বার বার জনপ্রতিনিধি কিংবা সরকারি দপ্তরের কর্তাদের কাছে ধরণা দিয়েও গৃহহীন হিসেবে আজও হতভাগা রিনার ভাগ্যে জুটেনি সরকারি কোনো ঘর কিংবা ভাতা।
মধ্যনগরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অতীশ দর্শী চাকমা জানান, শিগগির রিনাকে বিধবা ভাতার ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।
বিধবা রিনা বেগমের দুই ছেলে। কিন্তু সংসার নিয়ে তারা আলাদা বসবাস করছেন। তাই রিনা কারও কাছে হাত না পেতে হাতে তুলে নিয়েছেন বৈঠা। যা নারীদের কাছে এক অনুপ্রেরণার গল্প।