×

প্রথম পাতা

ভারতের ত্রিপুরায় ভয়াবহ বন্যা চার জেলায় ‘রেড এলার্ট’ জারি

Icon

কাগজ ডেস্ক

প্রকাশ: ২৩ আগস্ট ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ভারতের ত্রিপুরায় ভয়াবহ বন্যা চার জেলায় ‘রেড এলার্ট’ জারি

ছবি: সংগৃহীত

   

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরায় গত কয়েকদিন ধরে ভারি বৃষ্টিতে আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। রাজধানী আগরতলাসহ পুরো রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। বন্যার কারণে এ পর্যন্ত ১৪ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। এদিকে এশিয়ার আরেক দেশ থাইল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলে মৌসুমি ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট বন্যায় অন্তত ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।

ভারতের স্টেট ইমারজেন্সি অপারেশন সেন্টার (এসওসি) জানিয়েছে, ত্রিপুরার ৬ হাজার ৬২০টি পরিবারের ৩৪ হাজারের বেশি মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। ৮টি জেলার ৩৪৬টি কেন্দ্রে তাদের আশ্রয় দেয়া হয়েছে। আবহাওয়া দপ্তর আগামী ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যের ৪ জেলায় লাল সর্তকতা জারি করেছে। জেলাগুলো হলো- ধলাই, গোমতী, সিপাহীজলা এবং দক্ষিণ জেলা। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে রাজ্য সরকার।

উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে (এনএফআর) ত্রিপুরায় ১০টি লোকাল ট্রেনের যাত্রা বাতিল করেছে। এনএফআরের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ভারি বৃষ্টির কারণে গোমতি জেলায় রেলপথ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে এই ট্রেনগুলো বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

আগরতলার ওপর দিয়ে বয়ে চলা হাওড়া নদী ও কাটাখাল পানি ধারণ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে। যেসব খাল দিয়ে শহরের পানি বেরিয়ে যেত, সেগুলো দিয়ে উল্টো শহরের পানি প্রবেশ করছে। সাধারণ মানুষের বক্তব্য, আগে যেসব জায়গায় বন্যার পানি জমেনি, এবার শহরের সেসব এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। পৌরসভার পাম্পগুলো দিনরাত কাজ করলেও শহর থেকে পানি কমানো যাচ্ছে না। আকস্মিকভাবে এত বড় বন্যা হওয়ার ফলে প্রশাসন সব জায়গায় মানুষকে উদ্ধার কাজে সহায়তা করতে পারছে না। এতে মানুষের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

বন্যা দুর্গতদের সহায়তায় প্রশাসনের পাশাপাশি সাধারণ রাজনৈতিক দল এবং স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলো এগিয়ে এসেছে। বন্যার কারণে শহরের বিদ্যুৎ এবং ইন্টারনেট পরিষেবা স্তব্ধ হয়ে পড়েছে। শহরের যে দিকে তাকানো যায় অলিগলি সব শুধু পানি আর আর পানি।

উত্তর ত্রিপুরার ধর্মনগর, কৈলাশহর; ঊনাকোটি জেলার কুমারঘাট; ধলাই জেলার কমলপুর, লংট্রাইভ্যালি ও গন্ডাচেরা; সেপাহিজলার বিশালগড় ও সোনামুড়া; খোয়াই জেলার তেলিয়ামুরা ও খোয়াই, উদয়পুর, কারবুক ও অমরপুর; গোমতি জেলার সবুরু, সাবরুম; দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলার শান্তিরবাজার এবং আগরতলা শহরসহ পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার সদর ও জিরানিয়া মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকায় ব্যাপক জলাবদ্ধতা ও বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে।

শান্তিরবাজার মহকুমার গার্দাং এলাকায় গতকাল বৃহস্পতিবার মাটি ধসে একসঙ্গে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় আরো ৭ জনের প্রাণ গেছে। সব মিলিয়ে বন্যার কারণে রাজ্যে ১৪ জনের প্রাণহানি হয়েছে। বিশালগড়ে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। বন্যার পানিতে অনেক বাড়িঘর ও দোকানপাট ভেঙে পড়েছে। বিশালগড় থানা, বিশালগড় অগ্নিনির্বাপক দপ্তরের অফিস ভবনসহ সব এলাকা বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। স্থানীয়দের আশঙ্কা আবার বৃষ্টি শুরু হলে বিশালগড় ভয়াবহ থেকে অতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করবে।

মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা গতকাল সচিবালয়ে মুখ্যসচিব এবং অন্যান্য কর্মকর্তার উপস্থিতিতে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠক করেন। নাগরিকদের বন্যাকবলিত স্থান থেকে উদ্ধার করার পাশাপাশি দ্রুত ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেয়ার নির্দেশ দেন তিনি। সামাজিক মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী জানান, অমরপুর বন্যাকবলিত এলাকায় উদ্ধার কাজ দ্রুত করার জন্য এমআই-৭ হেলিকপ্টার মোতায়েন করা হয়েছে।

এদিকে বন্যার বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ১২০ জনের একটি দলকে বিশেষ বিমানে করে আগরতলা নিয়ে আসা হয়েছে। হেলিকপ্টারে করে তাদের গোমতী জেলায় পাঠানো হয়েছে। রাজ্য প্রশাসনের অনুরোধের পর আসাম রাইফেলসের সদস্যদের বিভিন্ন জেলায় মোতায়েন করা হয়েছে বলে একজন প্রতিরক্ষা মুখপাত্র জানিয়েছেন। বন্যার কারণে আটকে পড়া বেসামরিক নাগরিকদের উদ্ধারে বেসামরিক প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করছেন তারা।

অস্বাভাবিক বৃষ্টির কারণেই বন্যা : রাজ্যের একটি সরকারি সূত্র গত বুধবার জানিয়েছে, সেখানে গত ২৪ ঘণ্টায় সাধারণ সময়ের চেয়ে ১ হাজার ২০০ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। আর এমন অস্বাভাবিক বৃষ্টির কারণেই দেখা দিয়েছে ভয়াবহ বন্যা।

সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে দক্ষিণ ত্রিপুরার বাগাফাতে। সেখানে ২৪ ঘণ্টায় ৩৭৫ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এদিকে দক্ষিণ ত্রিপুরার বিলোনিয়ায় ৩২৪ দশমিক ৪ মিলিমিটার এবং গোমতীর অমরপুরে ৩০৭ দশমিক ১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

থাইল্যান্ডে বন্যায় অন্তত ৫ জনের মৃত্যু : এশিয়ার আরেক দেশ থাইল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলে মৌসুমী ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট বন্যায় অন্তত ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশটিতে বন্যায় ২ হাজার হেক্টরের বেশি কৃষিজমি প্লাবিত হয়েছে। থাইল্যান্ডের সরকারি কর্মকর্তারা গতকাল বলেছেন, বন্যায় হাজার হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

থাইল্যান্ডের নতুন প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা চিয়াং রাই, নান ও ফায়াও প্রদেশের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় সহায়তা পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। দেশটির দুর্যোগ প্রতিরোধ ও প্রশমন অধিদপ্তর বলেছে, বন্যায় ২ হাজার ৫২ হেক্টর কৃষিজমি এবং ১২ হাজার ৭৭৭টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App