×

মেলা

সিনেমায় নারী স্ক্রিপ্ট রাইটার কম

Icon

কাগজ ডেস্ক

প্রকাশ: ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

সিনেমায় নারী স্ক্রিপ্ট রাইটার কম

ছবি: সংগৃহীত

   

আমাদের চলচ্চিত্রের বয়স ৬৭ বছর পেরিয়ে গেছে। বিগত ৬৭ বছরে আমরা ৬৭ জন নারী চলচ্চিত্র নির্মাতা পাইনি। ‘বিন্দু থেকে বৃত্ত’র রেবেকা থেকে রোজী আফসারীর ‘আশা নিরাশা’ পর্যন্ত আসতে ২০ বছর লেগে গেছে। তারপর একে একে ‘অর্পণে’র সুজাতা, ‘সবুজ কোট কালো চশমার সুচন্দা, ‘মেঘলা আকাশ’র নারগিস আকতার, ‘আয়না’র কবরী, ‘রানী কুঠির বাকি ইতিহাস’র সামিয়া জামান, ‘উত্তরের সুরে’র শাহনেওয়াজ কাকলীসহ বলার মতো কিছু নারী চলচ্চিত্র নির্মাতা এলেন।

‘কৃষ্ণপক্ষে’র মধ্য দিয়ে আলো ছড়ালেন মেহের আফরোজ শাওন এবং ‘মহুয়া সুন্দরী’তে অনুদান পেয়ে পরিচালক হলেন শামিম আরা নিপা। ‘ভালোবাসা এমনই তো হয়’ ছবিতে অভিষেক হয় তানিয়া আহমেদের। এরপর নাটক থেকে সিনেমা পরিচালনায় এলেন চয়নিকা চৌধুরী। ধীরে ধীরে নারী নির্মাতার সংখ্যা বাড়ছে, যা চলচ্চিত্রে আশার সঞ্চার করেছে। বিপরীতচিত্র লক্ষ করা যাচ্ছে চলচ্চিত্রের লেখালেখির ক্ষেত্রে। একটি চলচ্চিত্রের লেখালেখি সংক্রান্ত তিনটি অংশ। যার মধ্যে পরিচালনায় নামার সূত্রে চিত্রনাট্য লেখার অভ্যাস তৈরি হলেও গল্প ও সংলাপ রচনায় নারীরা সাফল্যের পরিচয় দিতে পারছেন না।

পরিচালনায় নারীদের আগ্রহ দেখা গেলেও গল্প ও সংলাপ রচনায় কেউ এগিয়ে আসছেন না। নারীদের লেখা গল্প-সংলাপ নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মিত হচ্ছে। নারী সাহিত্যিকের গল্প-উপন্যাস থেকে চলচ্চিত্র নির্মিত হলে সেই সাহিত্যিক বইয়ের মতো প্রশংসা কুড়াচ্ছে রূপালি পর্দায়ও। মন জয় করছেন জুরিদের। জিতে নিচ্ছেন পুরস্কার। আলাদা করে চিত্রনাট্যে নারীদের কোনো অবদান থাকছে না। অত্যন্ত আক্ষেপের কথা দেশে এখন কোনো নারী স্ক্রিপ্ট রাইটার নেই। টেলিভিশনে বেশ কয়েকজন নারী নাট্যকার সফলতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। মঞ্চেও লিখছেন অনেকে। বেতারেও পিছিয়ে নেই।

শুধু বড় গণমাধ্যম চলচ্চিত্রে নারী লেখকের অভাব। দেশে এখন বেশ কয়েকজন পেশাদার স্ক্রিপ্ট রাইটার রয়েছেন যারা ব্যস্ততার সঙ্গে কাজ করছেন। প্রতি বছর তাদের ১০-১৫টি করে ছবি আসছে। অনেকে কাজের সংখ্যা বাড়িয়ে দেয়ায় কাজের মান নেমে গেছে। কালে-ভদ্রে ভালো স্ক্রিপ্টের দেখা মিললেও পেশাদার স্ক্রিপ্ট রাইটারদের হাত থেকে মানোত্তীর্ণ কাজ বেরিয়ে আসছে না। নতুন কয়েকজন স্ক্রিপ্ট রাইটার এই শূন্যতায় নিজেদের জায়গা করে নিচ্ছেন। কেবল নারীরাই কোনো জায়গা করতে পারছেন না।

অথচ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার আসরগুলোতে স্বল্পসংখ্যক হলেও নারী লেখকরা ট্রফি জয় করেছেন। ২১তম প্রতিযোগিতায় সেলিনা হোসেন ‘পোকা মাকড়ের ঘরবসতির জন্য পুরস্কার পেয়েছেন। ২২তম প্রতিযোগিতায় সেলিনা হোসেন আবার পুরস্কৃত হোন ‘হাঙর নদী গ্রেনেডে’র জন্য। সেলিনা হোসেনের পরিচিতি সাহ্যিতিক হিসেবে। তার লেখার গুণমান প্রশ্নের ঊর্ধ্বে। বরং চমক জাগিয়েছেন ৩৭তম প্রতিযোগিতায় শাহনেওয়াজ কাকলী ‘উত্তরের সুর’ ছবির গল্পের জন্য পুরস্কার পেয়ে। এই প্রথম দেখা গেল শুধু পরিচালনায় নয়, লেখালেখিতেও সাফল্য দেখালেন কোনো নারী। এটা নারীদের স্ক্রিপ্ট রাইটিংয়ে উৎসাহিত করার মতো ঘটনা। দেখা যাচ্ছে, বাস্তবে নারীদের মধ্যে সেই উৎসাহ দেখা যাচ্ছে না।

মেহের আফরোজ শাওন, তানিয়া আহমেদরা পরিচালনায় এসে কোনো নারী লেখকের কাছ থেকে স্ক্রিপ্ট নেননি। নামি সাহ্যিত্যিক কিংবা নাট্যকারের কাছ থেকে গল্প নিয়েছেন। পরিচালনায় এসে নিজের গল্প নিজেও লিখছেন কেউ কেউ। শাহনেওয়াজ কাকলীর কথা আগেই বলা হয়েছে। শামিম আরা নিপা ‘মুহুয়া সুন্দরী’র গল্প নিজেই লিখেছেন। চলচ্চিত্রে নারী লেখকদের যথেষ্ট সম্ভাবনা ছিল। পেশা হিসেবে বেছে নেয়ার সুযোগ ছিল স্ক্রিপ্ট রাইটিংকে। একসময় ‘দস্যু বনহুরে’র রোমেনা আফাজ চলচ্চিত্রের জন্য গল্প লিখেছেন। তাকে পরে আর পাওয়া যায়নি। রাবেয়া হোসেনের অনেক গল্প থেকে চলচ্চিত্র হয়েছে। তিনি সরাসরি চলচ্চিত্রের জন্য কলম ধরেননি।

সোহানী হোসেনের ‘মা’ গল্প অবলম্বনে ‘সত্তা’ নির্মাণ করেছেন নির্মাতা হাসিবুর রেজা কল্লোল। এটিকে ব্যতিক্রম ঘটনা বলেই মন্তব্য করা যাবে। গল্পকার নিজেই ছবির প্রযোজক। ফলে তার কৃতিত্ব কিছু কর্তনও করা যাবে! এরকম শখের বসে কেউ কেউ চলচ্চিত্রের জন্য গল্প লিখেছেন। কাজী হায়াতের প্রশংসিত ছবি ‘লাভ স্টোরি’র লেখক ছিলেন নির্মাতার স্ত্রী রোমিসা হায়াত। এরকম অনেক সময়ই দেখা গেছে প্রযোজকের কিংবা পরিচালকের স্ত্রীর নাম গেছে টাইটেলে ‘কাহিনিকার’ কিংবা ‘গল্প ভাবনা’র জায়গায়। নিয়মিত ওই নামগুলোকে কাহিনি কিংবা সংলাপ লিখতে দেখা যায়নি।

আসলে শখের বসে হোক আর সিরিয়াসলি হোক, কাহিনি-সংলাপ-চিত্রনাট্যে নারীদের কিছুটা অবদান আছে। সংখ্যার তুলনায় কাজের জন্য প্রচুর প্রশংসাও আছে। যা নেই তা হচ্ছে পেশাদার স্ক্রিপ্ট রাইটার। আব্দুল্লাহ জহির বাবু, কমল সরকার, কাশেম আলী দুলাল এই নামগুলোর পাশে কোনো নাম নেই। মোহাম্মদ রফিকুজ্জামান, ছটকু আহমেদ, আবু সাঈদ খান এই নামগুলোর পাশেও কোনো নাম ছিল না। এমনকি সৈয়দ শামসুল হক, উদয়ন চৌধুরী, আমজাদ হোসেনরা যখন লিখেছেন দু’হাতে তখনো কোনো নারী লেখকের পদচারণায় মুখর হয়নি এফডিসি। অথচ এখানে খুব সহজেই জায়গা করে নিতে পারতেন নারীরা। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, কদাচিৎ নারীরা ক্যামেরার পেছনে ডিরেকশনে বসলেও লেখালেখিতে মনোযোগ নেই। পর্দার সামনে যত নারী দেখা যাচ্ছে পেছনে সেই তুলনায় নগণ্য।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App