লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করুন

সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ১৪ আগস্ট ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

ছবি : সংগৃহীত
৫ আগস্ট সরকার পতনের পর সারাদেশের বিভিন্ন থানা ও পুলিশ লাইন্সে হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় অনেক অস্ত্র ও গোলাবারুদ লুট হয়। যা মোটেও সাধারণ বিষয় নয়। এই লুট হওয়া অস্ত্র থেকে যে কোনো সময় যে কোনো ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। অস্ত্রগুলো এখন অনেকটা অনিরাপদ হাতে রয়েছে। এই তো গত সোমবার ফরিদপুরে পলাশ হোসেন নামে এক কিশোর লুট হওয়া অস্ত্রে গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারায়। পলাশ ও তার দুই বন্ধু অস্ত্রটি নিয়ে টিকটক ভিডিও করার সময় এ ঘটনা ঘটে। অস্ত্রটি সদরপুর থানা থেকে লুট হয়েছিল। এ রকম লুট হওয়া অস্ত্র এখন সমাজের জন্য হুমকিস্বরূপ। যদিও ইতোমধ্যে বিভিন্ন দিক থেকে কিছু অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে কঠোর হয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন।
গতকাল ভোরের কাগজে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, অবৈধ অস্ত্র থানায় জমা দিতে ৭ দিন সময় বেঁধে দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেছেন, যাদের হাতে আন-অথরাইজড ওয়েপন বা আগ্নেয়াস্ত্র আছে, আগামী ৭ দিনের (সোমবার) মধ্যে নির্দিষ্ট থানায় জমা দেবেন। যদি জমা না দেন, তাদের বিরুদ্ধে দুটি চার্জ লাগবে। দুটি মামলার মধ্যে একটি হচ্ছে অবৈধ অস্ত্র মামলা, অপরটি সরকারিভাবে নিষিদ্ধ অস্ত্র আপনাদের হাতে। তিনি আরো বলেন, যদি নিজেরা জমা দিতে না পারেন, তাহলে কারো মাধ্যমে দিন।
যেটাই হোক, এই রাইফেলগুলো ফেরত দরকার আমাদের। না হলে আমরা হান্টিং শুরু করব। যেটা বাইরে পাওয়া যায় না, সেই ওয়েপন কীভাবে এদের হাতে গেল এবং এই ওয়েপন আনসারদের ওখানে ফায়ার করল। একটা ভিডিও আমি দেখলাম, একটা সিভিলিয়ান ছেলে ৭.৬২ রাইফেল হাতে নিয়ে চলে গেছে। পুলিশ সদস্যদের হাতে ৭.৬২ রাইফেল আছে, সেটা মেনে নিলাম; কিন্তু সিভিল পোশাকে কারা আনসার গেটের মধ্যে গিয়ে গুলি করেছে। এটা খুবই মারাত্মক। এর মানে, আমরা সিভিলিয়ানকেও আর্মড করেছি। যে অস্ত্র সিভিলিয়ানের হাতে যাওয়ার কথা না। যে অস্ত্র পুলিশ-র্যাবকে অথরাইজড করা হয়েছিল, সেই অস্ত্র কীভাবে বাইরে গেল। এমন হতে পারে একটা দেশে? কেমন কথা? আমরা চেষ্টা করব এদের খুঁজে বের করার।
অন্যদিকে দেশের বিভিন্ন স্থানে থানা ও কারাগার থেকে লুট হওয়া অস্ত্র ও গোলাবারুদ জমা দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। গত শুক্রবার রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আইএসপিআর এই আহ্বান জানিয়েছে। এক্ষেত্রে কারো কাছে রক্ষিত এ ধরনের অস্ত্র ও গোলাবারুদ অথবা এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য থাকলে অতি দ্রুত নিকটস্থ সেনা ক্যাম্পে জমা অথবা যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করছে আইএসপিআর। এরপর যারা স্বেচ্ছায় জমা দেবে তারা তো দেবে আর যারা ইচ্ছা করে জমা দেবে না তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে এবং তাদের আইনের আওতায়ও নিয়ে আসতে হবে। আমরা আশা করি নতুন সরকার যত দ্রুত সম্ভব লুট হওয়া অস্ত্রগুলো উদ্ধার করে যে কোনো দুর্ঘটনা থেকে আমাদের শঙ্কামুক্ত করবে।