বিতর্কিত সংস্থা এনটিএমসি বিলুপ্তির দাবি

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৭ আগস্ট ২০২৪, ০৫:২৮ পিএম

বিতর্কিত সংস্থা টেলিযোগাযোগ পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র (এনটিএমসি) লোগো। ছবি: ভোরের কাগজ গ্রাফিক্স
নাগরিকের মুঠোফোনে আড়িপাতা, ডিভাইস নজরদারিতে রাখা, ফেসবুক-মেসেঞ্জার, এক্স, টেলিগ্রাম, ভাইবার, ইমো ও স্কাইপিতে এমন কি ওয়েবসাইট ব্লক ও ইমেইলে আড়ি পাতার অভিযোগ ওঠা বিতর্কিত টেলিযোগাযোগ পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র (এনটিএমসি) বিলুপ্তির দাবী জানিয়েছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন।
শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, এই সংস্থার কার্যক্রম সংবিধান পরিপন্থী। সংবিধানের ৪৩ (খ) অনুচ্ছেদে চিঠিপত্র ও যোগাযোগের সকল মাধ্যমের গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। অথচ ২০১৩ সালে এই সংস্থাটি গঠন করা হয় বিতর্কিত বরখাস্ত কৃত মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানের পরামর্শে।
মূলত নাগরিকের যোগাযোগে আড়িপাতা এবং নজরদারিতে রাখার জন্য সেইসঙ্গে ফোন কল ফোনালাপ রেকর্ড, ইন্টারনেট ও বিভিন্ন অ্যাপে আড়িপাতা ছাড়া অন্য কোন কাজই করেনি এই সংস্থাটি। মোবাইল অপারেটরদেরও বাধ্য করত বিভিন্ন ধরনের মেসেজ গ্রাহকদের মাঝে প্রদান করতে এই সংস্থাটি। ফোনালাপ রেকর্ড এমনকি ভিডিও কলিং রেকর্ড করে অনেক সম্ভ্রান্ত নাগরিককে হেনস্তা করেছে এই প্রতিষ্ঠানটি বলে দাবি করেন মহিউদ্দিন।
তিনি আরো বলেন, বিক্যাল মাউন্টেন ডাটা ইন্টার সেপ্টর বিকেল মাউন্টেন মোবাইল ইন্টার সেপ্টরের মত ভয়ানক যন্ত্র ব্যবহার করে আসছিল এই সংস্থাটি। এমনকি বাংলাদেশের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন বিতর্কিত ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের কাছ থেকে পেগাসাস স্পাই ওয়ার ক্রয় করা হয়েছিল বলে দেশ ও বিদেশের স্বনামধন্য গণমাধ্যম এবং আন্তর্জাতিকভাবেও বিষয়টি প্রকাশিত হয়েছিল।
মহিউদ্দিন বলেন, আমরা এর প্রতিবাদ করেছিলাম এবং তদন্ত চেয়েছিলাম। যদিও সরকার এ বিষয়ে বক্তব্য বলেছিলেন এই ধরনের যন্ত্রপাতি ইজরাইলের কাছ থেকে ক্রয় করা হয়নি। পেগাসাস স্পাইবার অ্যাপটি গ্রাহকের কাছে ম্যালওয়ারের মাধ্যমে পাঠানো হতো সংস্থার পক্ষ থেকে। অনেক গ্রাহক না বুঝেই ইন্সটল করলে সাথে সাথে গ্রাহকের ব্যবহৃত ডিভাইসটি সংস্থার নিয়ন্ত্রণে চলে আসতো। এই ভাবে নাগরিকদের সকল কার্যক্রমের তথ্য হাতিয়ে নিত এই বিতর্কিত সংস্থাটি।
এ ধরনের কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা এবং সংবিধান পরিপন্থী। সেই সাথে মানবাধিকারের লঙ্ঘন।
বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন সভাপতি বলেন, দেশ জাতি এবং এবং সংবিধানকে সমুন্নত রেখে নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা দেয়ার নিমিত্তে এ ধরনের সংস্থা বিলুপ্তি সময়ের দাবি এবং আবশ্যক। তাছাড়া এই সংস্থার অবৈধ যন্ত্রপাতি ক্রয়ের নামে কোটি কোটি টাকা লোপাট করা হয়েছে। আমরা নাগরিকদের পক্ষ থেকে এবং আমাদের গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য ও সুরক্ষার স্বার্থে এই সংস্থার বিলুপ্তি অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দাবি করছি। আমরা দু-একদিনের মধ্যে এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করব আশা করি।