শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে সেমিতে বাংলাদেশ

স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ: ২১ আগস্ট ২০২৪, ১২:৫০ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এই প্রথম বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের কোনো ক্রীড়া দলের খেলা চলছে। নেপালের কাঠমান্ডুতে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপে শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হয় বাংলাদেশের যুবারা। ম্যাচের ১৮তম মিনিটে লঙ্কানদের বিপক্ষে গোল করেই ছাত্র-জনতার আন্দোলনে প্রাণ হারানো শিক্ষার্থী আবু সাঈদ ও মীর মুগ্ধকে স্মরণ করেন বাংলাদেশ দলের মিরাজুল ইসলাম।
এর আগে, গত ১৬ জুলাই রংপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত হন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। পুলিশের সামনে বুক টান করে দাঁড়ানোর একপর্যায়ে তাকে গুলি করা হয়।
অন্যদিকে গেল ১৮ জুলাই ঢাকার উত্তরায় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) শিক্ষার্থী মীর মুগ্ধও আন্দোলন চলাকালে গুলিতে নিহত হন। মৃত্যুর আগে মীর মুগ্ধ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে পানির বোতল বিতরণ করছিলেন।
প্রথমে আবু সাঈদকে গুলি করার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর তীব্র প্রতিক্রিয়া হয় দেশব্যাপী। আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে দাবানলের মতো। মীর মুগ্ধর মৃত্যুতেও তৈরি হয় ক্ষোভ। শেষ পর্যন্ত গত ৫ আগস্ট পতন ঘটে শেখ হাসিনা সরকারের।
মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) কাঠমান্ডুর আনফা কমপ্লেক্সে বাংলাদেশ শুরু থেকে দাপট দেখায়। ম্যাচের ১৮তম মিনিটে সুফলও পায়। বাঁ-দিক দিয়ে রাব্বি হোসেন রাহুল এগিয়ে গেলে তাকে বাধা দেয়ার চেষ্টা করেও পারেননি লঙ্কান ডিফেন্ডার আনসার মুহাম্মদ। রাহুলের ক্রসে চলন্ত বলে পা লাগিয়ে দলকে লিড এনে দেন মিরাজুল। গোল করেই জার্সির ওপর আলাদা একটি টি-শার্ট পরেন মিরাজুল। সাদা ওই টি-শার্টে কালো কালিতে লেখা ছিল, ‘মুগ্ধ এবং আবু সাঈদের স্মরণে/ মনে রেখো যুদ্ধ করে রক্ত দিয়ে দেশ পেয়েছি।’
এমনিতে আন্তর্জাতিক ফুটবলে যেকোনো ধরনের বার্তাকেই ‘অপরাধ’ হিসেবে দেখা হয়। তাই মিরাজুলকেও শাস্তিস্বরূপ হলুদ কার্ড দেখিয়ে সতর্ক করেছেন রেফারি। হয়তো তা জেনে বুঝেই করেছেন মিরাজুল।
ব্যবধান দ্বিগুণ হতে পারত ২৯তম মিনিটে। বাঁদিক থেকে রাব্বি হোসেন রাহুলের নেওয়া ফ্রি-কিক থেকে সুযোগটি এসেছিল। রুস্তম দুখু মিয়া পোস্টের কয়েক গজ সামনে থেকে শটও নিয়েছিলেন। কিন্তু লক্ষ্যে রাখতে পারেননি, বল চলে যায় বাইরে।
ইনজুরি সময়ের শেষ মিনিটে সহজ সুযোগ নষ্ট করেছেন মিরাজুল। নিজেদের সীমানা থেকে উড়ে আসা বল ধরে শ্রীলঙ্কার বক্সে ঢুকে গোলকিপারকে একা পেয়েও গোল করতে পারেননি, বল মারেন তারই গায়ে।
বিরতির পর শ্রীলঙ্কা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে। তবে সফল হতে পারেনি।
ম্যাচের ৫৮তম মিনিটে বদলি সিয়ান মোহামেদ শাহিলের শট গোলকিপার মেহেদী হাসান শ্রাবণ ডান দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে রুখে দেন।
এরপর ম্যাচের ৭৮তম মিনিটে বাংলাদেশের প্রচেষ্টা রক্ষণে এসে ব্যর্থ। শেষ দিকে এসে বাংলাদেশ ব্যবধান দ্বিগুণ করে। ৮৫তম মিনিটে পিয়াস আহমেদ নোভা গোলকিপারকে একা পেয়ে জাল কাঁপান।
এই জয়ে গ্রুপ থেকে সেমিফাইনাল নিশ্চিত হলো বাংলাদেশের। টানা দ্বিতীয় হারে লঙ্কানদের বিদায়। বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) স্বাগতিক নেপালের বিপক্ষে ম্যাচ খেলতে হবে। সেই ম্যাচে নির্ধারণ হবে গ্রুপ সেরা কোন দল।