ঘোষণাপত্রে ১৬ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামের স্বীকৃতি চায় ১২ দল

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:০৭ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
শুধু জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ৩৬ দিনের সময় নয়, ঘোষণাপত্রে বিগত ১৬ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামের স্বীকৃতি দাবি করেছে ১২ দলীয় জোট। একই সঙ্গে গণঅভ্যুত্থানের প্রোক্লেমেশন নয়, গণঅভ্যুত্থান নিয়ে একটা ডিক্লারেশন বা ঘোষণা আসতে পারে বলে মনে করে তারা। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) রাজধানীর পুরানা পল্টনে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জোটের পক্ষে এসব দাবি তুলে ধরেন ১২ জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা।
তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি গত ৩১ ডিসেম্বর ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র প্রকাশ করতে চেয়েছিল। তখন দেশের রাজনৈতিক অঙ্গণে নানা আলোচনা তৈরি হয়। হঠাৎ ঘোষণাপত্রের বিষয়টি কেন সামনে আনা হলো, এর প্রভাব কী হতে পারে, তা নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন ওঠে। তখন এ উদ্যোগের সঙ্গে সরকার সম্পৃক্ত নয় বলে জানানো হয়।
তবে ৩০ ডিসেম্বর রাতে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব জানিয়েছিলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের একটি ঘোষণাপত্র তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
আরো পড়ুন: সুইজারল্যান্ড সফরে যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা
জাতীয় দলের চেয়ারম্যান বলেন, ওই রাতে বৈঠক করে ৩১ ডিসেম্বর শহিদ মিনারে মার্চ ফর ইউনিটি কর্মসূচি ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি। ওই কর্মসূচি থেকে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়া হয়। এ প্রসঙ্গে বলা বাহুল্য যে প্রোক্লেমেশন বা ঘোষণাপত্রে সংবিধান স্থগিত করার কথা থাকে। তখন সামরিক ফরম্যান বা প্রোক্লেমেশন (ঘোষণাপত্র) দিয়ে সংবিধান স্থগিত করা হয়। এই ঘোষণাপত্রের অধীন প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক বা রাষ্ট্রপতি সংবিধানের যেকোনো ধারা বা ধারার অংশ বিশেষ সংশোধন, পরিবর্তন, পরিমার্জন, সংযোজন-বিয়োজন করতে পারেন। তখন সংবিধান কার্যকর থাকে না।
এহসানুল হুদা বলেন, সাংবিধানিক প্রশ্নে আমাদের স্পষ্ট অবস্থান, ১২ দলীয় জোটসহ বিগত ১৬ বছরে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন-সংগ্রামে যুক্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন করতে হবে। আমরা মনে করি, জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের প্রোক্লেমেশন নয়, এটা নিয়ে একটা ডিক্লারেশন বা ঘোষণা আসতে পারে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে অন্তর্বর্তী সরকার হয়েছে। এই সরকার সংবিধান অনুযায়ী শপথ নিয়েছে।
আরো পড়ুন: ভারতে প্রথমবার প্রকাশ্যে শেখ হাসিনা, যা জানা যাচ্ছে
ঘোষণাপত্র নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি আরো বলেন, জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র নিয়ে ধুম্রজাল ও অস্পষ্টতা সৃষ্টি হয়েছে। আন্দোলন সংগ্রামের ফসল এই অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব পালনে নিরপেক্ষতা ও গ্রহণযোগ্যতা হারাচ্ছে।
সৈয়দ এহসানুল হুদা বলেন, আজকের সর্বদলীয় বৈঠকের ব্যাপারে ১২ দলীয় জোট কোনো বার্তা পায়নি। আন্দোলনের অনেক অংশীজনও আজকের সর্বদলীয় বৈঠকে আমন্ত্রিত হননি। যেহেতু বিষয়টি অতি গুরুত্বপূর্ণ আমরা আশা করেছিলাম সরকার আন্দোলনের সব অংশীজনদের সম্মান প্রদর্শনপূর্বক আমন্ত্রণ জানাবেন। এক্ষেত্রে আমার চরম আশাহত হয়েছি। আজকে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বৈঠকের নামে একটা নাটক মঞ্চস্থ হয়েছে। এই বৈঠক কার স্বার্থে?
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন- ১২ দলীয় জোট প্রধান ও জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, জোটের মুখপাত্র ও বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, জাতীয় পার্টির মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকন, বিকল্পধারা বাংলাদেশ চেয়ারম্যান অধ্যাপক নুরুল আমিন বেপারী, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সহ-সভাপতি রাশেদ প্রধান প্রমুখ।