আরেকটি ফোনালাপ ফাঁস: এবার যা বললেন শেখ হাসিনা

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:১৭ পিএম

শেখ হাসিনা
ছাত্রজনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট দেশ ত্যাগ করে ভারত চলে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্প্রতি ফাঁস হওয়া বেশ কয়েকটি ফোনালাপে জানা যায়, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বিভিন্ন সময়ে নেতাকর্মীরা ফোন করলে তাদের সঙ্গে সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন তিনি। শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ফাঁস হওয়া নতুন একটি কলরেকর্ডে জানা যায়, বেলজিয়ামে অবস্থানরত নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি থানার ছাত্রলীগের সাবেক সেক্রেটারির সঙ্গে টেলিফোনে প্রায় ২০ মিনিটের মতো কথা বলেছেন শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা : সে তো জবর দখল করছে। তার কোনো লিগ্যালিটি নাই। মানুষ খুন করে, ছাত্রদের মেরে, একটা সিচ্যুয়েশন তৈরি করে তারপর সে ক্ষমতায় গেল।
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা : জ্বী আপা, এগুলো আমরা ইউরোপীয় পার্লামেন্টকে জানাচ্ছি...
শেখ হাসিনা : আমি তো পদত্যাগ করি নাই। আমাদের কনস্টিটিউশনের আর্টিক্যাল ৫৭ অনুযায়ী যেভাবে পদত্যাগ, আমার কিন্তু সেভাবে পদত্যাগ করা হয়নি। সে কিন্তু ৬ তারিখের জায়গায় ৫ তারিখে (লং মার্চ) নিয়ে আসলো। ৫ তারিখে নিয়ে আসার ফলে এমনভাবে চারদিকে লোক ঘেরাও... আমি দেখলাম যে, এখন যদি ফায়ার ওপেন করে আমার এখানের সিকিউরিটি... তাহলে অনেক লাশ পড়বে। লাশ ফেলে আমি ক্ষমতায় থাকতে চাই না।
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা : জ্বী আপা, জ্বী...
শেখ হাসিনা : যখন এমন সিচ্যুয়েশন হয়ে গেল যে আমার সিকিউরিটি যারা ছিল তারা বাধ্য হয়ে... তখন আমাকে সরে যেতে হলো গণভবন থেকে। যার ফলে বঙ্গভবনে গিয়ে মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা আমি দেইনি। কাজেই আমার কিন্তু পদত্যাগ হয়নি। আমি এখনও বাংলাদেশের কনস্টিটিউশনাল ইলেকটেড প্রাইম মিনিস্টার।
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা : ইনশাআল্লাহ আপা, আপনি চলে আসবেন তো। আর বেশি দিন নাই...
শেখ হাসিনা : তারপর ফলস ছবি দেখালো আমি সই করছি। সেটা হলো আমার ভিজিটিং বুকের সই। ছবিটা ভালো করে দেখলে দেখা যাবে ওইটা একটা মোটা বই। ওরকম কোনো বইয়ে প্রাইম মিনিস্টার সই করে পদত্যাগ করেন না। আমার সেই চিঠিও কেউ দেখাতে পারছে না। গণভবনে রেখে আসছিলাম, গণভবন আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে লুটপাট হয়েছে, ওগুলো সব চলে গেছে।
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা : জ্বী আপা...
শেখ হাসিনা : আন্দোলনে যেকয়টা মার্ডার হইছে পুলিশের গুলিতে কিন্তু হয়নি। ছাত্রদের মুভমেন্টের ভেতরে ‘কিলিং এজেন্ট’ ছিল। ওরা যে বুলেট (৭.৬২ রাইফেল) ব্যবহার করছে... ওদের অ্যাডভাইজার সাখাওয়াত সাহেব আর্মির লোক... উনি নিজেই বলেছেন এই বুলেট তো পুলিশের কাছে থাকে না। তার মানে ছাত্রদের মাঝে মিশে থাকা কিলিং এজেন্টদের কাছে ওই অস্ত্র ছিল। আজ পর্যন্ত এই বুলেট সম্পর্কে কোনো তদন্ত নেই এবং এই রাইফেল কে ব্যবহার করছে সেটার কোনো তদন্ত নেই। এমনকি কিছু পুরুষ মানুষ বোরকা পরে ইন্ডাস্ট্রিতে আগুন দেয়া থেকে শুরু করে এগুলো করেছে।
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা : জ্বী আপা, যখন আপনি বাংলাদেশ ছেড়ে চলে গেছেন, আমরা খাইতেও পারিনি ঠিক মতো...
শেখ হাসিনা : আমি লাশের স্তূপ দেখতে চাইনি।
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা : সেটা তো আমরা সবাই জানি আপা...
শেখ হাসিনা : তারপরও কত মানুষ মারলো, পুলিশ মারলো, আনসারদের কোনো হদিস নাই। আওয়ামী লীগের অগণিত নেতাকর্মী, হিন্দুদের পরিবার... মেরে লাশ গুম করা এবং মেয়েগুলোকে তুলে নিয়ে যাওয়া। ইডেন কলেজের একটা মেয়েকে তো মেরে ঝুলিয়ে রেখে বললো আত্মহত্যা করছে।
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা : জ্বী আপা, এই তো গত দুয়েকদিন আগের ঘটনা...
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা : আপা আপনার অ্যাবসেন্সে এখন দলের দায়িত্বে কে বা দল কীভাবে দাঁড়াবে?
তবে এই প্রশ্নের কোনো উত্তর দেননি শেখ হাসিনা।