পাকিস্তানে ইমরান খান মুক্তির দাবিতে সমাবেশ-দাঙ্গা, নিহত পুলিশ

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:০৫ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
পাকিস্তানে পিটিআইয়ের (পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ) নেতা ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে দেশব্যাপী বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। বিশেষ করে ইসলামাবাদ থেকে রাওয়ালপিন্ডি পর্যন্ত ব্যাপক আন্দোলন চলছে, যেখানে হাজার হাজার পিটিআই সমর্থক রাস্তায় নেমে সরকারের বিরুদ্ধে তাদের প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। বিক্ষোভকারীরা ইসলামাবাদে পৌঁছানোর চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ ঘটে, যা ভয়াবহ আকার ধারণ করে। সংঘর্ষে এক পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন এবং বেশ কয়েকজন পুলিশ আহত হয়েছেন।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) পিটিআই নেতা-কর্মীরা ইসলামাবাদের দিকে অগ্রসর হচ্ছিলেন, কিন্তু পুলিশের বাধার মুখে তাদের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হয়। এর ফলে পিটিআইয়ের পাঁচজন এমপি ও হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে পিটিআই সমর্থকরা ইসলামাবাদের উপকণ্ঠে পৌঁছান, যেখানে আবারো নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়, যাতে এক পুলিশ সদস্য প্রাণ হারান।
এই পরিস্থিতিতে ইসলামাবাদ ও রাওয়ালপিন্ডির সঙ্গে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। পাকিস্তানের সরকার পিটিআইয়ের এই কর্মসূচিকে বেআইনি ঘোষণা করে এবং ইসলামাবাদ হাইকোর্ট আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সরকারকে নির্দেশ দেয়।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ নিরাপত্তা কর্মী নিহতের ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে বলেন, "শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকে অজুহাত করে পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না।"
অপরদিকে, পিটিআই দলের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা বাহিনীকে দায়ী করা হয়েছে, যারা বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা প্রয়োগ করেছে। পিটিআই চেয়ারম্যান গহর আলী খান জানিয়েছেন, "বিরোধী দলের সঙ্গে কোনো আলোচনার জন্য সর্বশেষ অগ্রগতি খুব শিগগিরই জানানো হবে, আলোচনা চলছে।"
এছাড়া, গত সপ্তাহে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে ইমরান খানের সঙ্গে গহর আলী খান প্রায় দেড় ঘণ্টা বৈঠক করেন। বৈঠকে ইমরান খান এই বিক্ষোভকে "চূড়ান্ত ডাক" হিসেবে অভিহিত করেছেন এবং পিটিআই সমর্থকদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বিক্ষোভ স্থগিত করার গুজবকে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
এই বিক্ষোভের ফলে ইসলামাবাদ এবং আশপাশের সব মহাসড়কে নিরাপত্তা বাহিনী ব্যারিকেড দিয়েছে, যাতে বিক্ষোভকারীদের আটকানো যায়। এছাড়া, পিটিআই নেতাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ফয়সালাবাদের নিশাতাবাদ থানায় ইমরান খান, তার স্ত্রী বুশরা এবং অন্যান্য পিটিআই নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। সৌদি আরবের সমালোচনা করায় গুজরানওয়ালার বিভিন্ন থানায় বুশরার বিরুদ্ধে আরও তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পাকিস্তানে বিক্ষোভের কারণে সার্বিকভাবে উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং পরিস্থিতি আরও সংকটময় হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।