এক রাতেই পাল্টে গেল ১৯ বছরের প্রদীপের জীবন!

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২২, ১০:০৯ এএম

প্রদীপ মেহরা
প্রদীপ মেহরা ওরফে, ‘মিডনাইট রানার’। বয়স মাত্র ১৯ বছর। পেশায় ম্যাকডোনাল্ডস কর্মী। লক্ষ্য ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগদান। এক মিনিটের জন্যও স্থির থাকছে না তার ফোন। বাড়ির বাইরে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা। এমনকী দেখা করার আর্জি জানাচ্ছেন শীর্ষ সরকারি আমলারাও।
সেনাবাহিনীতে যোগদানের প্রস্তুতি। তাই রোজ মাঝরাতে ডিউটি সেরে ১০ কিলোমিটার দৌড়ে বাড়ি ফেরেন প্রদীপ। সেটাই ভিডিও করে টুইট করেছিলেন চলচ্চিত্র নির্মাতা বিনোদ কাপ্রি। সেই ভিডিও নিমেষে ভাইরাল হয়ে যায়। সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে স্থান পায় প্রদীপ। উঠে আসে তার স্ট্রাগেলের কাহিনী। খবর হিন্দুস্তান টাইমস।
প্রদীপ কিন্তু কখনই ভাবেননি যে ভিডিওটি তাকে এমন ইন্টারনেট সেনসেশন করে তুলবে। এখন রাস্তাঘাটে লোকে রীতিমতো সেলফি তুলছে তার সঙ্গে। নয়ডার ফাস্ট ফুড আউটলেটের বাইরেও হচ্ছে ভিড়। ভিড় থেকে বাঁচতে পিছনের দরজা দিয়ে প্রবেশ করছে প্রদীপ। হিন্দুস্তান টাইমস সিটির সঙ্গে কথোপকথনে, নিজের কাহিনী শেয়ার করলেন তিনি। জানালেন তার বেড়ে ওঠা, ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রতি আবেগ এবং সদ্য পাওয়া স্টারডমের কথা।
ভাইরাল ভিডিয়োর পর জীবন কতটা বদলে গেল?
এতটাই হঠাৎ করে ঘটল... আমি এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না। আমি স্বপ্নেও ভাবিনি যে আমার ভিডিও ভাইরাল হবে। ছবি আর রিলের জন্য মানুষ আমায় তাড়া করছে! আমার পৃথিবী রাতারাতি বদলে গেছে। মানুষ আমার কাছে এগিয়ে এসে সেলফি চাইছেন। বেশ লজ্জা বোধ করছি।
এত অ্যাটেনশন কীভাবে হ্যান্ডেল করছেন?
অ্যাটেনশন কে না পছন্দ করে? তবে কোনও কাজকর্ম না থাকলে, হাত খালি হলে এটা আরও উপভোগ করা যায়। আমি তো নিজের কাজে ব্যস্ত। নন-স্টপ কল এসে যাচ্ছে। এর কারণে অফিসে যেতেও দেরি হয়ে গেছে। সব সময়ে মাস্ক পরে ঘুরছি। যাতে কেউ আমাকে চিনতে না পারে। আমি জানি না, কীভাবে ভিড় সামলাতে হয়। যখন ওরা বলেন, 'ভাই প্রদীপ লাগে রেহনা,' তখন ভালো লাগে। কিন্তু কী বলব জানি না। তাই আমি শুধু মাথা নাড়ি।
কবে থেকে এমন দৌড়ানো শুরু করেছিলেন?
গত এক মাস ধরে প্রতি রাতে দৌড়াচ্ছি। আমি সেক্টর-১৬, নয়ডা থেকে বারোলা পর্যন্ত যাই। আমার কাজের সময়সূচীর কারণে, আমি আলাদা করে ওয়ার্কআউট করার সময় পাই না। তাই অফিস থেকে বাড়ি দৌড়ে যাই। টাকাও বাঁচে, আবার শরীর ফিট এবং সুস্থ থাকে।
আপনার বাড়ি কোথায়?
উত্তরাখণ্ডের আলমোরা জেলায়। আমাদের ছোটো পরিবার। মা, বাবা এবং দুই ভাইবোন। দিল্লিতে এসেছি প্রায় দুই মাস হয়ে গেল।
সেনাবাহিনীতে কেন যোগ দিতে চান?
দেশের সেবা করা আমার জীবনের লক্ষ্য। আমার গ্রামের অনেককে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগদান করতে দেখেছি। এটা তাদের পরিবার এবং পুরো গ্রামের জন্য একটা গর্বের বিষয়। কোভিডের কারণে গত দুই বছর ধরে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে কোনো নিয়োগ হয়নি। কিন্তু আমি প্রতিদিন অনুশীলন করে চলেছি যাতে সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে পারি। আমি ভারতীয় সেনাবাহিনী-বিষয়ক সিনেমা দেখতেও ভালোবাসি। আমার প্রিয় সিনেমা বর্ডার (১৯৯৭)।
পড়াশোনা কতদূর?
পরিবারের আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে আমি দ্বাদশ শ্রেণির পর পড়তে পারিনি। আমার গ্রামের স্কুলেই পড়াশোনা করেছি।
https://youtu.be/XEGdqdhFs6Y