জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের প্রস্তাব

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৩৬ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রথম বৈঠকে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের প্রস্তাব উঠেছে। বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের নেতারা দাবি করেছেন, বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগ অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে। সেইসঙ্গে জুলাই মাসের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দলটির নেতাদের বিচারের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস সভাপতিত্ব করেন। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতারা তাদের মতামত তুলে ধরেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘যে নৌকা ডুবে গেছে, তা আর ভাসবে না। সবাই একমত যে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অপ্রাসঙ্গিক। তাই আইনি প্রক্রিয়ায় আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ এবং তাদের নিবন্ধন বাতিলের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।’
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে সব পক্ষ একমত। পাশাপাশি আমরা স্থানীয় সরকার নির্বাচন দ্রুত আয়োজনের দাবি জানিয়েছি।’
জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসিরউদ্দিন পাটোয়ারী জানান, ‘আমরা জুলাই চার্টারকে আইনি কাঠামোয় আনার কথা বলেছি এবং গণপরিষদের মাধ্যমে নতুন সংবিধান প্রণয়নের দাবি জানিয়েছি। পাশাপাশি আওয়ামী লীগের বিচার প্রসঙ্গেও আলোচনা হয়েছে।’
জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ আরো কড়া ভাষায় বলেন, ‘গত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগ দেশে গণহত্যা ও ভোট ডাকাতির মাধ্যমে নিজেদের টেরোরিস্ট অর্গানাইজেশন হিসেবে প্রমাণ করেছে। বিশেষ করে গত জুলাই-আগস্টের হত্যাকাণ্ডের পর, দলটি জনগণের কাছে টেরোরিস্ট সংগঠন হিসেবে পরিচিত। আমরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে আওয়ামী লীগকে সরকারিভাবে টেরোরিস্ট ঘোষণা এবং তাদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছি।’
বৈঠকে জাতীয় নির্বাচন এবং দেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কাঠামো নিয়েও আলোচনা হয়। তবে বেশিরভাগ নেতাই আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধকরণের বিষয়টি অগ্রাধিকার দেয়ার কথা জানান।
বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে ৬ সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশ নেয়। এছাড়া জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদ, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, জাতীয় পার্টির (জাফর) মোস্তফা জামাল হালদার, বিজেপির চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ, বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম, ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ মোহাম্মদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানি, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান মঞ্জু, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর, গণ ফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্য সুব্রত চৌধুরী, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট ও বাংলাদেশ লেবার পার্টির নেতারাও বৈঠকে ছিলেন।
তবে আওয়ামী লীগের জোটে থাকা কোনো দল ও জাতীয় পার্টিকে বৈঠকে ডাকা হয়নি।