তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়নে বিগত সরকারের মতো নতজানু নয়: উপদেষ্টা আসিফ

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:০১ পিএম
-67a8b529ade9c.jpg)
ছবি: সংগৃহীত
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, বিগত সরকারের মতো নতজানু হয়ে নয়, তিস্তার চুক্তি বাস্তবায়নে, এই অঞ্চলের মানুষের পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ভারতের সঙ্গে মাথা উঁচু করে কথা বলবে। প্রয়োজনে তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে ভারতকে আন্তর্জাতিকভাবে চাপ প্রয়োগ করা হবে।
রবিবাসর (৯ ফেব্রুয়ারি) রংপুর জেলার কাউনিয়া উপজেলার তিস্তা রেলব্রীজ সংলগ্ন প্রাঙ্গনে স্থানীয় জনসাধারণের সাথে তিস্তা নিয়ে করণীয় শীর্ষক গণশুনানিতে এই কথা বলেন তিনি।
বক্তব্যের শুরুতে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন-"আপনারা কেমন আছেন? জিজ্ঞাসা করবো না, জানি আপনারা ভালো নেই।"
উত্তরবঙ্গের যেখানেই গিয়েছি সবার একটাই দাবি-'রিলিফ চাই না, তিস্তায় পানি চাই।' তিস্তা মহাপরিকল্পনা চূড়ান্ত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে হবে বলে জানান তিনি।
এছাড়াও উত্তরবঙ্গের অন্যান্য উন্নয়ন কার্যক্রম প্রসঙ্গে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বলেন, তিস্তার চরে জনসংখ্যা অনুপাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণের ব্যবস্থা করবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। উত্তরবঙ্গের কৃষিজ পণ্য সংরক্ষণের জন্য বিভিন্ন স্থানে কোল্ড-স্টোরেজ নির্মাণের কথা উল্লেখ করা হয়। পাশাপাশি কৃষিজ শিল্পের বিকাশের জন্য চিনিকলগুলো চালু করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। পীরগাছা থেকে চিলমারীর অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি বাড়াতে তিস্তার উপরে ১৪০০ মিটার ব্রীজের সার্ভে করা হয়েছে, এ সরকারের আমলেই উদ্বোধন করা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা। ইতোমধ্যে শিক্ষার হার বৃদ্ধিতে উপজেলাভিত্তিক আধুনিক লাইব্রেরী এবং উন্নয়ন কাজের জন্য বিশেষ বরাদ্দের ঘোষণা করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্যকালে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, তিস্তা আন্তর্জাতিক নদী বিধায়, কোনো দেশের একক অধিকার নাই। তিস্তার বাঁধ খুলে দেওয়ার আগে ভারতের উচিত আমাদেরকে অবশ্যই অবগত করা। চীনের সাথে তিস্তা মহাপরিকল্পনা ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে চূড়ান্ত হবে বলে জানান তিনি। পানি সম্পদ উপদেষ্টা আরো বলেন, তিস্তার ভাঙন রোধে আগামী সপ্তাহে শুরু হবে ৪৫ কি.মি. তীর-রক্ষা কাজ।
গণশুনানিতে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকার জনসাধারণ- তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন, তিস্তার পানির সুষম বণ্টন, তিস্তার সাথে শাখা নদীগুলোর সংযোগকরণ, তিস্তার পানির ন্যায্যতায় ভারতের সাথে শক্ত অবস্থান, বন্যা-খরায় পূর্ব প্রস্তুতি গ্রহণ, তিস্তার দুই পাড়ে শক্তিশালী বাঁধ নির্মাণসহ আরো নানান দাবি উত্থাপন করেন।
রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সালের সভাপতিত্বে গণশুনানিতে স্থানীয় সরকার বিভাগ ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকতাবৃন্দ এবং রংপুরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।