রিমান্ড শুনানিতে যে দাবি করলেন সাবেক রেলমন্ত্রী

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ০৫:৫৮ পিএম
-679b694d1439b.jpg)
ছবি: সংগৃহীত
পঞ্চগড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া রিকশাচালক আল আমিনকে (২১) হত্যা ও তার লাশ গুমের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় সাবেক রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলামের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) সকালে পঞ্চগড় আদালতে জামিন ও রিমান্ড আবেদনের শুনানি শেষে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নাহিদা আকতার জুলিয়েট এ নির্দেশ দেন।
এর আগে গত ১ ডিসেম্বর নূরুল ইসলাম ওই মামলায় পঞ্চগড় আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন। বিচারক ওই আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পঞ্চগড় সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মানিক মিয়া নূরুল ইসলামের বিরুদ্ধে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। আজ শুনানি শেষে তাকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেন আদালত।
ওই মামলায় রিমান্ড ও জামিন আবেদন শুনানির জন্য সকাল ১০টা ২১ মিনিটে নূরুল ইসলামকে আদালত চত্বরে আনা হয়। এ সময় আদালত চত্বরে জড়ো হওয়া কিছু লোকজন নূরুল ইসলামকে দেখে ‘ভুয়া ভুয়া’ ও ‘ভোট চোর, ভোট চোর’ স্লোগান দেন। শুনানির সময় কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে নূরুল ইসলাম নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। তিনি বলেন, আদালতকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে তাকে রাজনৈতিক হয়রানি করা হচ্ছে।
পঞ্চগড় জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আদম সুফি বলেন, হত্যা ও অপহরণের এই মামলায় নূরুল ইসলামের বিরুদ্ধে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছিল। শুনানিতে আদালত সন্তুষ্ট হয়ে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। যেহেতু ঘটনাটি রহস্যাবৃত ও ভিকটিমের (রিকশাচালক আল আমিন) কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না, এ জন্য রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য রিমান্ডের প্রয়োজন ছিল।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় করা একটি হত্যা মামলায় নূরুল ইসলামকে ঢাকায় গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এর পর থেকে তিনি ঢাকায় কারাগারে ছিলেন। রিকশাচালক আল আমিন হত্যা মামলায় তাকে পঞ্চগড়ে আনা হয়েছে।
নিখোঁজ আল আমিন পঞ্চগড় পৌরসভার দরজিপাড়া এলাকার বাসিন্দা। গত ১০ নভেম্বর তাঁর বাবা মনু বাদী হয়ে পঞ্চগড় সদর থানায় সাবেক রেলমন্ত্রী ও পঞ্চগড়-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নূরুল ইসলামসহ ১৯ জনের নামে একটি মামলা করেন। নূরুল ইসলাম এ মামলায় হুকুমের আসামি। অজ্ঞাতপরিচয় ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে পঞ্চগড় জেলা শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে অংশ নেন আল আমিন। সেদিন দুপুরে দুই তরুণের সঙ্গে বাড়ি ফেরার পথে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান সাকিবের বাড়ির সামনে তাকে আটক করেন মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কয়েকজন। পরে আওয়ামী লীগের নেতাদের নির্দেশে তার ওপর হামলা চালানো হয় এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে আল আমিনকে এলোপাতাড়ি আঘাত করা হয়। তারপর তাকে টেনেহিঁচড়ে ছাত্রলীগ নেতা সাদমান সাকিবের বাড়ির দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় আল আমিনের সঙ্গে থাকা রায়হানুল ইসলাম ও সুজন ইসলাম নামের দুই তরুণ আহত হন। তবে তাঁদের দুজনকে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করলেও আল আমিনকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। ১৪ আগস্ট পরিবারের পক্ষ থেকে পঞ্চগড় সদর থানায় সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করা হয়।