বেনজিরসহ আরো ৩ জনের আয়কর নথি ও কাগজপত্র জব্দের নির্দেশ

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬:১৪ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
সাবেক ডিএমপি কমিশনার বেনজির আহমেদসহ তিনজনের আয়কর নথিসহ সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া বেনজিরের স্ত্রী-কন্যা, ডিবি প্রধান হারুনুর রশিদ এবং প্রেসিডেন্টস রিসোর্টের এমডি এ বি এম শাহরিয়ারের আয়কর নথিসহ সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র জব্দের আদেশ দেয়া হয়েছে। বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে দেশে-বিদেশে শত শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। এসব সম্পদ তার এবং তার স্ত্রী এবং তিন সন্তানের নামে নিবন্ধিত।
দুদকের নথি অনুযায়ী, পুলিশ ও র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রধান থাকাকালে সাবেক আইজিপি ও তার পরিবারের সদস্যরা তাদের প্রায় সব জমি কেনেন। দুদকের নথিতে দেখা যায়, বেনজির ও তার পরিবার ৮৩টি দলিলের মাধ্যমে ১১৪ একর জমি কিনেছিলেন। নথি অনুযায়ী, বেনজীর পুলিশের মহাপরিদর্শক ও র্যাবের মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালনকালে মোট ১১২ একর জমি কিনেছিলেন।
আইজিপি থাকাকালে ২০২০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ৫০টি দলিল করে ৬৩ দশমিক ৯৭ একর জমি কেনেন তারা। এছাড়া র্যাবের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ২০১৬ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ২৭টি দলিল করে ৪৮ দশমিক ১৫ একর জমি কেনেন। দুদক আরো জানতে পেরেছে, ২০১৪ সালে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার থাকাকালে পাঁচটি দলিলের মাধ্যমে এক দশমিক ৭৫ একর জমি অধিগ্রহণ করে তার পরিবার। যার বেশির ভাগ জমি তাঁর স্ত্রী জিসান মির্জার নামে রেজিস্ট্রি করা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, গত ৩১ মার্চ ‘বেনজীরের ঘরে আলাদীনের চেরাগ’ এবং ৩ এপ্রিল ‘বনের জমিতে বেনজীরের রিসোর্ট’ শিরোনামে তাকে নিয়ে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকা। সেখানে সাবেক আইজিপির বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠে আসে। এরপর আলোচনা শুরু হয় তাকে নিয়ে। বিষয়টি নিয়ে আলোচনার মধ্যে ২২ এপ্রিল দুদক জানায়, বেনজীরের ‘অবৈধ সম্পদ’ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে তারা। সেজন্য তিন সদস্যের একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়েছে।
পরে দুদকের আবেদনে বেনজীর, তার স্ত্রী ও তিন মেয়ের স্থাবর সম্পদ ক্রোকের আদেশ দেন ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন। সেই সঙ্গে তাদের নামে থাকা ব্যাংক হিসাব এবং বিভিন্ন কোম্পানিতে তাদের নামে থাকা শেয়ারও অবরুদ্ধ করার আদেশ আসে। সেই অনুযায়ী পরে ব্যবস্থাও নেয় দুদক। বেনজীর ও তার স্ত্রী-কন্যাদের দেশের বাইরে যাওয়ার বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কিছু বলা হয়নি। তবে বোট ক্লাবের সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগের জন্য দেয়া চিঠিতে তিনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বিদেশে থাকার কথা বলেন। তারা সবাই দেশের বাইরে চলে গেছেন বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদনও ছাপা হয়েছে।