চাঁদাবাজি কারা করছেন, জানালেন উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৫৭ পিএম

সাখাওয়াত হোসেন
নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, আগামীতে যারা ক্ষমতায় যাবেন, তাদের অনেকেই নির্বাচনের জন্য চাঁদাবাজি করছেন। এটি রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি উদ্বেগজনক প্রবণতা। একটি রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে সময়ে সময়ে দু-একজনকে বহিষ্কার করতে দেখা যাচ্ছে। তবে এ ধরনের বিচ্ছিন্ন পদক্ষেপ যথেষ্ট নয়। চাঁদাবাজি রোধে আরো কঠোর পদক্ষেপ প্রয়োজন, যাতে রাজনীতির পরিবেশ স্বচ্ছ ও গণতান্ত্রিক হয়।
শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে জাতীয় সংলাপে বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘ওই দলের নেতাকর্মীরা চাঁদাবাজি করতে গিয়ে দাবি করছেন, গত ১৫ বছরে তারা ক্ষমতায় ছিলেন না, আর নির্বাচনে অংশ নিতে তাদের টাকার প্রয়োজন।’
সাখাওয়াত হোসেন ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থান প্রসঙ্গে বলেন, এই অভ্যুত্থানে প্রায় দুই হাজার মানুষ শহীদ হয়েছেন। আহতদের মধ্যে দুই হাজারেরও বেশি মানুষ এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাদের মধ্যে ৩৭ জনের অবস্থা অত্যন্ত গুরুতর। তিনি আরো বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে এমন গণ-অভ্যুত্থান ঘটেছে কি না, তা আমার জানা নেই। কিছুটা সংস্কার না করেই যদি নির্বাচনে যাওয়া হয়, তবে তা ছাত্র-জনতার সঙ্গে অন্যায় হবে। যারা নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পরিবর্তনের জন্য লড়াই করেছেন, তাদের প্রতি এটি অবিচার। তিনি আন্দোলনের অংশগ্রহণকারীদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করে সুষ্ঠু সংস্কারের মাধ্যমে একটি স্বচ্ছ এবং ন্যায্য নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
২০০৭ সালের সংস্কারের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, তখন আমরা অনেকগুলো পদক্ষেপ নিয়েছিলাম, কিন্তু পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক সরকার এসে সেগুলো বাস্তবায়ন করেনি। এখন সংস্কার না করলে তা আর কখনো হবে না। এ জন্য ন্যূনতম সময় দিতে হবে এবং সবাইকে ধৈর্য ধরতে হবে। আমরা একটি কঠিন পরিস্থিতিতে রয়েছি। নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সরকার গঠন হলেই যে সমস্যার সমাধান হবে, তা নয়।
তিনি দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে বলেন, ‘এরপর আর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজন হবে না। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য আইন করা প্রয়োজন। নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় পরিবর্তনের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘মনোনয়ন বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে। একজন প্রার্থীকে নির্বাচনের আগে দলের ন্যূনতম সদস্য হতে হবে এবং অন্তত তিন বছর দলের পর্যবেক্ষণে থাকতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোকে তাদের আর্থিক প্রতিবেদন ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য আনতে হবে। নির্বাচন আইনেও বড় ধরনের সংস্কার দরকার।’
তরুণ প্রজন্মের রাজনীতিতে অংশগ্রহণের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘তরুণরা রাজনীতি করার অধিকার রাখেন। তাদের মাধ্যমে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন হলে তা ইতিবাচক হবে। আমাদের বড় রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত তরুণদের রাজনীতিতে আগ্রহী করা। সাখাওয়াত হোসেন আরো বলেন, ‘আমাদের দেশের বড় সমস্যাগুলোর মধ্যে এক্সটার্নাল চ্যালেঞ্জ অন্যতম। নতুন সরকার এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করবে, তবে তা সহজ হবে না। আমরা দেশের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে চাই।’