আগরতলায় বাংলাদেশ মিশনে হামলা প্রসঙ্গে যা বললো যুক্তরাষ্ট্র

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:২৯ এএম

সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। ছবি : সংগৃহীত
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার বিষয় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে কথা বলেছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার। হামলার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সব পক্ষকে নিজেদের মধ্যকার মতবিরোধ শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করার আহ্বান জানিয়েছে ওয়াশিংটন।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রেস ব্রিফিংয়ে দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার এই আহ্বান জানান।
ব্রিফিংয়ে একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বাংলাদেশ সফর করেছেন। সম্প্রতি ভারত ও বাংলাদেশ উভয়েই ভারতের অভ্যন্তরে বাংলাদেশের একটি কূটনৈতিক মিশনে সহিংস হামলার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সেই বিষয় এবং বাংলাদেশ নিয়ে ক্রমবর্ধমান আক্রমণাত্মক বক্তব্য-বিবৃতি সম্পর্কে আপনার কি কোনো মন্তব্য আছে?
জবাবে মিলার বলেন, সব পক্ষ তাদের মতবিরোধ শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করবে, সেটাই আমরা দেখতে চাই।
আরো পড়ুন : আগরতলায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে কী ঘটেছিল?
গত সপ্তাহে আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের সামনে অবস্থান কর্মসূচিসহ ব্যাপক বিক্ষোভের আয়োজন করে উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা। এসময় বিক্ষোভকারীরা বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে কথিত নিপীড়নের নিন্দা এবং ইসকন সদস্য চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভুর মুক্তি দাবির নামে সেখানে তাণ্ডব চালায়।
হিন্দু সংঘর্ষ সমিতি নামের একটি সংগঠনের ব্যানারেই সেখানে হামলা ও তাণ্ডবের সময় এই ভাঙচুর ও হাইকমিশন অফিসের পতাকা ছিঁড়ে ফেলার ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় শক্ত প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বাংলাদেশ। শুধু প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বাংলাদেশ থেমে যায়নি। ঘটনার একদিন পর ভারতীয় হাইকমিশনারকে ডেকে ক্ষোভ জানায় ঢাকা।
বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনায় ভারতও গভীরভাবে দুঃখপ্রকাশ করেছে। এ ছাড়া হামলার ঘটনায় জড়িত ৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ভারত এবং তিন পুলিশ সদস্যকে বরখাস্ত করেছে।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্টে শেখ হাসিনা সরকারের পতন এবং তার ভারতে আশ্রয় নেয়ার পর থেকে প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। নতুন করে সংখ্যালঘু ইস্যু নিয়ে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কেও অবনতি দেখা দিয়েছে।
ইসকন নেতা চিন্ময় দাসকে গ্রেপ্তারের পর পরিস্থিতি আরো ঘোলাটে হয়। তাকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ভারতের একাধিক স্থানে বিক্ষোভ হয়েছে।
দু’পক্ষের এমন টানাপোড়নের মধ্যে গত সোমবার ঢাকায় আসেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি। সফরকালে তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিনের সঙ্গে দেখা করেন। এ সময় ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন ও দুই প্রতিবেশীর মধ্যকার সম্পর্ক জোরদারে ‘সম্মিলিত ও সমন্বিত প্রচেষ্টা’য় নয়াদিল্লি আগ্রহী বলে জানান বিক্রম মিশ্রি।