রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ কারাগারে ‘ডিভিশন সুবিধা’ পেয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজশাহী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মো. হাদিউজ্জামান তার ডিভিশন আবেদন মঞ্জুর করেন। এরপর প্রিজন ভ্যানে করে আসাদকে কারাগারে নেয়ার সময় আদালত চত্বরেই ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। বেশ কিছুক্ষণ ‘আসাদ ভাই ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’ এমন স্লোগান দিতে দেখা যায় কিছু ব্যক্তিকে।

জানা যায়, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে আত্মগোপনে ছিলেন আসাদ। পতনের দুই মাস পর গত ৬ অক্টোবর ঢাকায় র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হন তিনি। পরে তাকে ঢাকা থেকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয়। বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) মোহনপুরে থানা পোড়ানো মামলায় তার হাজিরার দিন ধার্য ছিল।

কারাগার থেকে প্রিজন ভ্যানে করে তাকে আদালতে তোলা হয়। তার আইনজীবীরা জামিন আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ জামিনে আপত্তি জানায়। বিচারক মো. হাদিউজ্জামান জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এদিন আদালতে মোহনপুর থানার আরেকটি মামলায় আসাদকে শ্যেন অ্যারেস্ট দেখানোর আবেদন করা হয়। আদালত এই আবেদনও মঞ্জুর করেন। তবে ডিভিশন পাওয়ার আবেদন জানান আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। নাম প্রকাশ না করে আসাদের একজন আইনজীবী বলেন, আমরা সাবেক সংসদ সদস্য হিসেবে তার ডিভিশন পাওয়ার আবেদন করি। আদালত তা মঞ্জুর করেছেন। 

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, আসাদ এখন থেকে আলাদা রুমে খাট, ভালো বিছানা, চেয়ার, টেবিল, তোষক, বালিশ, তেল, আয়না, চিরুনি এবং আরো কিছু প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রসহ কারাগরের ভেতরেই একজন সহকারী পাবেন। সহকারী তার প্রয়োজনীয় কাজগুলো করে দেবেন। এছাড়া তার চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে বইপত্র এবং দু-তিনটি দৈনিক পত্রিকাও দেয়া হবে। সাধারণ বন্দিদের চেয়ে উন্নতমানর খাবারও পাবেন এই আওয়ামী লীগ নেতা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দুপুরে আদালত থেকে আসাদকে গাড়িতে তোলা হলে আওয়ামী লীগের ৮-১০ জন নেতাকর্মী গাড়ির সামনে থেকে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেন। এসময় পুলিশ প্রিজন ভ্যানটি নিয়ে যায়। তবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। 

তবে এসব ঘটনার কিছুই জানা নেই বলে দাবি সংশ্লিষ্ট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিনের। তিনি বলেন, ওই সময় আমি আদালতে ছিলাম না। এসব কিছুই আমার জানা নেই, আমি কিছু বলতে পারবো না।

এ ব্যাপারে রাজশাহী জেলা পুলিশের আদালত পরিদর্শক আমান উল্লাহ বলেন, ‘জামিন নামঞ্জুর হয়েছি এটা জানি। পরে হয়ত ডিভিশন পেয়ে থাকতে পারেন। সতর্কভাবে কড়া নিরাপত্তায় আদালতে নেয়া হয় এবং কারাগারে পাঠানো হয়। আমি বিচারপতি মহোদয়ের মিটিংয়ের আছি, পরে কথা বলবো।