×

জাতীয়

তবে কি ‘জাতীয়’ সরকারের পথে বাংলাদেশ!

Icon

কাগজ ডেস্ক

প্রকাশ: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৩৪ পিএম

তবে কি ‘জাতীয়’ সরকারের পথে বাংলাদেশ!

বৈঠকে সংখ্যালঘু নির্যাতনের কথিত সংবাদ নিয়ে দলগুলোর মতামত শুনতে চান তিনি। ছবি : সংগৃহীত

   

দেশে বিরাজমান নানা সংকট নিরসনে জাতীয় ঐক্যের লক্ষ্যে ছাত্রনেতা, রাজনৈতিক দল ও ধর্মীয় সংগঠনগুলোর সঙ্গে বৈঠক করছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। মঙ্গলবার জাতীয় ঐক্যের উদ্যোগের কথা জানায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং। ওই দিন সন্ধ্যায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে বৈঠক হয়। বুধবার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা।

বাংলাদেশের রাজনীতি নতুন দিকে বাঁকে নিয়েছে। সরকার সমর্থক প্রধান রাজনৈতিক দলগুলির মুখে হঠাৎই আবার ফিরে এসেছে ‘জাতীয় সরকার’ গঠনের প্রস্তাব। এই সরকার নির্বাচনের আগে, না পরে গঠন করা হবে, তা স্পষ্ট নয়। যেমন স্পষ্ট নয়, সেনা অভ্যুত্থানে ‘জাতীয় সরকার’ গঠন হবে কি না, সেটিও।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের তোলা জাতীয় সরকারের প্রস্তাবে প্রথম প্রকাশ্যে সায় দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে পর পর দু’দিন বৈঠক হয় বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতৃত্বের। দু’টি দলের নেতারাই যেমন শিগগিরিই নির্বাচন করার কথা বলেন, পাশাপাশি জাতীয় সরকার গঠনের প্রস্তাবও দেন। খবর আনন্দবাজারের।

এমন জল্পনাও হচ্ছে, শেখ হাসিনার নিয়োগ করা বর্তমান রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন ও সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামানকে উৎখাত করে ‘জাতীয় সরকার’ প্রতিষ্ঠার জন্য তৎপরতা শুরু করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একাংশ, যার নেতৃত্বে রয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর নেতা গোলম আজমের পুত্র আবদুল্লাহিল আমান আজমী।

বলা হচ্ছে, মুহাম্মদ ইউনূসকে রাষ্ট্রপতি করতে চায় সেনাদের এই অংশ। এই জল্পনার সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে বাংলাদেশের সম্প্রতি পদচ্যুত এক সেনাকর্তা বলেন, জল্পনা বলেই মনে হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশে গত চার মাসে এমন সব অভাবনীয় ব্যাপারস্যাপার ঘটছে, কোনো কিছুই উড়িয়ে দিতে পারছি না।

জাতীয় সরকারের ধারণাটি প্রথম প্রকাশ্যে আনেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি প্রস্তাব দেন, কেউ যাতে দু’বারের পরে আর প্রধানমন্ত্রী হতে না-পারেন, সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে সেটিও নিশ্চিত করা হোক।

তারেক রহমানের মতে, এর ফলে স্বৈরাচারের প্রবণতা ও দুর্নীতি— দুইয়েই লাগাম পড়বে। ৫ অগস্ট শেখ হাসিনা গণঅভ্যুত্থানে দেশছাড়া হওয়ার পরে ৮ তারিখে ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়। বিএনপি নেতৃত্ব যখন হাসিনা-বিরোধী আন্দোলনে অংশ নেয়া সব দলের জোট তৈরি করে নির্বাচনের মাধ্যমে জাতীয় সরকার প্রতিষ্ঠার কথা বলছেন, জামায়াত ব্যস্ত ছিল অন্য কর্মসূচিতে। দেশের ছোটবড় সব ইসলামি দলকে আলোচনায় বসিয়ে নিজেদের নেতৃত্বে একটি ইসলামি জোট প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছিল তারা, যারা নির্বাচনে বিএনপি-সহ বাকিদের বিরুদ্ধে লড়াই করবে। পরিস্থিতি এমন হয়, দুই দলের নেতৃত্বই একে অপরকে আক্রমণ করতে শুরু করেন।

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ের পর নভেম্বরের ১০ তারিখে আওয়ামী লীগের আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা বাংলাদেশের রাজনীতিকে বড় ঝাঁকুনি দেয়। জামায়াতের আমির শফিকুর ইসলাম লন্ডন সফরে যান। সেখানে থাকা বিএনপি নেতা তারেক রহমানের সঙ্গে তার বৈঠক নিয়ে মুখে কুলুপ দু’টি দলেরই। কিন্তু আমির ঢাকায় ফিরে পরের দিন ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে বিএনপির ‘জাতীয় সরকার’ গঠনের সুরেই সুর মেলান।

আরো পড়ুন : ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সংলাপ বিকেলে

তাকে প্রশ্ন করা হয়, তাহলে কি বিএনপি-কে নিয়ে নির্বাচন করবে জামায়াত? আমির বলেন, কেন নয়? বিএনপি আমাদের পরীক্ষিত ও বিশ্বস্ত শরিক দল। এই মুহূর্তে লন্ডন গিয়েছেন আর এক শীর্ষ জামায়াত নেতা বাহাউদ্দিন। গিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামও।

রাজনীতি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইসলামি জোটের চেষ্টা বিফলে গিয়েছে বলেই ফের বিএনপির পাশে আসছে জামায়াত। কারণ দেশজোড়া সমর্থক রয়েছে বিএনপির। নির্বাচনে বাড়তি আসন নিশ্চিত করতে সেই জনবলকে এখন তাদের প্রয়োজন। তাই ফের তারা পুরনো পথে। কিন্তু এর ফলে পরিস্থিতি কঠিন হলো আওয়ামী লীগের জন্য। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার বিপক্ষে বিএনপি ও জামায়াত। তবে ‘গণহত্যার’ বিচারের পরেই তাদের নির্বাচনে লড়তে দেয়া হবে বলে বলা হচ্ছে।

এর মধ্যেই ‘সঙ্কট মোকাবিলায়’ পরামর্শ নিতে বুধবার রাজনৈতিক দলগুলির প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। দেশের স্বার্থে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ারও পরামর্শ দেন তিনি। বৈঠকে সংখ্যালঘু নির্যাতনের কথিত সংবাদ নিয়ে দলগুলোর মতামত শুনতে চান তিনি।

সোমবার ব্রিটেনের হাউস অব কমন্সে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে একটি রিপোর্ট পাঠ করেন সে দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত ক্যাথরিন ওয়েস্ট। তিনি জানান, সম্প্রতি ঢাকায় গিয়ে উপদেষ্টাদের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার আশ্বাস দেয়া হয়েছিল তাকে। কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি তার পরিপন্থী।

কনজার্ভেটিভ এমপি প্রীতি পটেল মন্তব্য করেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতি খুবই, খুবই উদ্বেগজনক। বাংলাদেশে সফরকারী ব্রিটিশ নাগরিকদের জন্য ব্রিটিশ সরকার সতর্কবার্তা দেয়, সেখানে ‘জঙ্গিদের হাতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’ এর পরে বুধবার ব্রিটিশ হাই কমিশনার সারা কুককে ডেকে পাঠিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বিদেশ উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।

টাইমলাইন: অন্তর্বর্তীকালীন সরকার

আরো পড়ুন

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App