চিন্ময়-ইসকন ও সংখ্যালঘুদের নিয়ে নতুন করে যা বললো ভারত

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৫ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
বিতর্কিত হিন্দু পণ্ডিত চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার গত ২৫ নভেম্বর গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। তাকে গ্রেপ্তারের পর গত কয়েকদিন ধরে মাতামাতি চলছে ভারতে। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন বেড়ে গেছে বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে ঢালাওভাবে প্রচার করা হচ্ছে। ভারতের বিভিন্ন জায়গায় এ নিয়ে বিক্ষোভও হয়েছে।
এসবের মধ্যে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জসওয়াল শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) নিয়মিত ব্রিফিংয়ে কথা বলেন। সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের বেশিরভাগই বাংলাদেশ নিয়ে প্রশ্ন করেন। তারা জিজ্ঞেস করেন- হিন্দুসহ সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত নির্যাতন বেড়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে ভারত কী করছে।
জবাবে রণধীর বলেন, হিন্দুদের ওপর হামলা নিয়ে আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি। হিন্দুসহ অন্যান্য সংখ্যালঘুদের ওপর হুমকি এবং হামলার বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারের কাছে শক্তিশালীভাবে সার্বক্ষণিকভাবে উত্থাপন করছে ভারত। এ ব্যাপারে আমাদের অবস্থান পরিষ্কার। সব সংখ্যালঘুর নিরাপত্তা নিশ্চিতের যে দায়িত্ব বাংলাদেশ সরকারের রয়েছে সেটি তারা পালন করবে।
চিন্ময় দাসকে গ্রেপ্তারের পর চট্টগ্রামে আইনজীবীকে হত্যা করে উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা। এরপর বাংলাদেশে ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবি ওঠে। বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে ইসকনকে একটি ‘উগ্রবাদী সংগঠন’ হিসেবে অভিহিত করেছে বাংলাদেশ সরকার। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের এক সাংবাদিক ইসকন নিয়ে প্রশ্ন করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার ইসকনকে ‘উগ্রবাদী সংগঠন’ আখ্যা দিয়েছে। এ ব্যাপারে আপনার মত কী। জবাবে রণধীর জসওয়াল বলেন, “ইসকন বৈশ্বিকভাবে খুবই ভালো হিসেবে স্বীকৃতি। তাদের সামাজিক ক্ষেত্রে অবদান রাখার ভালো রেকর্ড রয়েছে। আমরা বাংলাদেশ সরকারকে আবারো বলব সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন।
অপরদিকে বিতর্কিত চিন্ময় দাসকে নিয়ে ভারতীয় এই মুখপাত্র বলেছেন, আমরা চিন্ময় দাসের গ্রেপ্তার নিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছে। আমরা দেখেছি আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। আমাদের আশা করি তার বিরুদ্ধে যে আইনি প্রক্রিয়া চলছে সেটি স্বচ্ছ এবং ন্যায় বিচারের ভিত্তিতে হবে এবং তাদের যে আইনি অধিকার রয়েছে সেটি পুরোপুরিভাবে পাবে।
এর আগে গত মঙ্গলবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি বিবৃতি দিয়ে বলেছে, সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনায় অপরাধীরা যেখানে ধরা ছোয়ার বাইরে সেখানে একজন ধর্মীয় নেতা এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে যখন কথা বলেছে তার বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ এনে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিবৃবিতে বাংলাদেশের হিন্দুসহ সব সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিতের আহবান জানানো হয়।
অন্যদিকে ভারতের উদ্বেগ প্রকাশের পাল্টা বিবৃতিতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, অতিশয় হতাশা ও গভীরভাবে অনুভূতিতে আঘাতের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকার উল্লেখ করছে যে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাশকে নির্দিষ্ট অভিযোগে গ্রেপ্তারের পর থেকে কিছু মহল তা নিয়ে ভুল তথ্য ছড়িয়ে দিচ্ছে। এমন অপ্রমাণিত বিবৃতি শুধু সত্যের অপলাপই নয়, একইসঙ্গে তা দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ও বোঝাপড়ার চেতনার পরিপন্থি।
আরো পড়ুন: কে এই চিন্ময় কৃষ্ণ দাস, তাকে গ্রেপ্তার নিয়ে কেন এত আলোচনা-হইচই