ভারতে শেখ হাসিনার অবস্থান, যা বললেন ড. ইউনূস

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ১২:২৭ পিএম

তিনি বাংলাদেশি জনগণের সঙ্গে কথা বলছেন এবং সেটা রাজনৈতিক রূপ নিচ্ছে। ছবি : সংগৃহীত
ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে বসে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আপাতত ভারতে বসবাস করাটা সমস্যা নয়। সমস্যা হচ্ছে বাংলাদেশের সঙ্গে তার যোগাযোগ। তিনি বাংলাদেশি জনগণের সঙ্গে কথা বলছেন এবং সেটা রাজনৈতিক রূপ নিচ্ছে। তিনি তার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন, এটিই সমস্যা।
সম্প্রতি ড. মুহাম্মদ ইউনূস ঢাকায় তার বাসভবনে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু-এর সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন। সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস তার সরকারের ১০০ দিনের শাসনের অর্জনগুলোর পক্ষে কথা বলেন এবং মৌলবাদ ও দেশের হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে যে উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে, তা 'প্রোপাগান্ডা' হিসেবে উল্লেখ করেন।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, তিনি ( শেখ হাসিনা) বাংলাদেশিদেরকে ঢাকা ও অন্যান্য শহরের রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করতে উৎসাহিত করছেন। তার এসব বক্তব্য প্রচারিত হয়েছে। তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে বলছেন—যেন পুলিশ বাধা দেয়, যাতে তারা বলতে পারে বাংলাদেশ সরকার যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কাজ করছে। এটি আরেকটি দেশের অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক বিষয়ে হস্তক্ষেপ।
আরো পড়ুন : শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনতে সব আইনি পথ অবলম্বন করব
ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে প্রত্যর্পণ চুক্তি থাকা সত্ত্বেও শেখ হাসিনাকে ফেরত আনতে কেন আনুষ্ঠানিক অনুরোধ করা হয়নি, এমন প্রশ্নে ড. ইউনুস বলেন, আমার মনে হয় আমরা আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করছি, তবে সে পর্যায়ে এখনো পৌঁছাইনি।
ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে ৫ আগস্টের ঘটনাগুলো কীভাবে প্রভাব ফেলছে? এমন প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বন্ধুপ্রতিম দেশ হিসেবে ভারতের উদযাপন করা উচিত যে, বাংলাদেশ এমন একটি শাসন থেকে মুক্ত হয়েছে, যেখানে মানুষ চরম কষ্টে ছিল, অনেক মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন, অনেকে গুম হয়েছিলেন এবং অনেক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। আমাদের তরুণ প্রজন্মের উদযাপনে সঙ্গে ভারতেরও অংশ নেয়া উচিত এবং একসঙ্গে উদযাপন করা উচিত, যেমনটা অনেক রাষ্ট্র করছে।
সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিষয়ে নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল ট্রাম্পের উদ্বেগের বিষয়ে ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ সম্পর্কে এবং সংখ্যালঘুদের বিষয়ে তিনি (ট্রাম্প) সম্ভবত ভালোভাবে অবহিত নন। এটা একটা প্রোপাগান্ডা যা সারা বিশ্বে চলছে। কিন্তু যখন তিনি বাংলাদেশের সাথে সম্পর্কের বাস্তবতায় আসবেন, তখন ট্রাম্প অবাক হবেন যে- তাকে যে ধারণা দেওয়া হয়েছে তার থেকে বাংলাদেশ কতটা আলাদা।
তিনি বলেন, আমি মনে করি না, যুক্তরাষ্ট্রে একজন নতুন প্রেসিডেন্ট এসেছেন মানে সবকিছু বদলে যাবে। প্রেসিডেন্টের পরিবর্তনের কারণে পররাষ্ট্রনীতি এবং দেশ অনুযায়ী সম্পর্ক সাধারণত পরিবর্তিত হয় না। এছাড়াও ট্রাম্প ২.০-তে যদি কোনো পরিবর্তন হয়, তাহলে আমাদের মনে রাখবেন এখনকার বাংলাদেশ ২.০ আছে, যাকে আমরা নতুন বাংলাদেশ বলি। সুতরাং আমরা অপেক্ষা করবো এবং যদি মার্কিন প্রতিনিধিরা এসে আমাদের দেখে-পরীক্ষা করে এবং যদি দেখে আমাদের অর্থনীতি ভালো চলছে, তারা খুব আগ্রহী হবে। তারা বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সরকারি ক্রেতা, তাই আমাদের দিক থেকে এটি খুব ভালো সম্পর্ক যা আমরা বছরের পর বছর ধরে গড়ে তুলেছি। আমাদের আশা এটা আরো জোরদার হবে।
আরো পড়ুন : আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে যা বললেন ড. ইউনূস