আওয়ামী লীগ নেতারা কীভাবে পালিয়েছে, তদন্ত হচ্ছে : প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সেক্রেটারি

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ১১:১১ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের অনেক নেতা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন বলে জানিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। কীভাবে এবং কারা এ প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করেছে তা তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর হেয়ার রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে শফিকুল আলম এসব তথ্য জানান।
৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগ নেতারা কীভাবে পালিয়ে গেলেন, এ বিষয়ে সরকারের অবস্থান জানতে চাইলে শফিকুল আলম বলেন, এ ব্যাপারে সরকার খুবই পরিষ্কার। আমরা তদন্ত করছি কীভাবে এবং কার সহযোগিতায় তারা দেশ ছেড়েছে। ৫ থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত দেশে কার্যত কোনো সরকার ছিল না, আর পুলিশ ধর্মঘটে থাকায় পরিস্থিতি আরো জটিল হয়েছিল। সে সময় অনেকের পালানোর খবর পেয়েও পুলিশ যথাসময়ে ব্যবস্থা নিতে পারেনি। তবে আমরা এখনো তাদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা করছি যারা দেশে আছেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম এবং উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।
মাহফুজ আলম জানান, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে নির্বাচনের রোডম্যাপ, সংস্কার এবং আওয়ামী লীগের অর্থনৈতিক অপরাধ ও গণহত্যার বিচার নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আওয়ামী লীগের শরিক দলগুলোও ক্ষমতায় থাকার সময় গণহত্যায় সহযোগিতা করেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। সংলাপে কিছু রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগীদের নিষিদ্ধ করার দাবিও জানিয়েছে।
আরো পড়ুন: কেন জাতীয় পার্টিকে সংলাপে ডাকা হয়নি, জানালেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী
তিনি আরো বলেন, সংলাপে রাজনৈতিক দলগুলো আওয়ামী লীগের অবৈধ নির্বাচনের বিষয়টিও উত্থাপন করেছে। তারা বলেছে, ২০১৪, ২০১৮, এবং ২০২৩ সালের নির্বাচনের বৈধতা বাতিলের প্রস্তাব এসেছে। কিছু দল গণপরিষদ নির্বাচনের দাবিও জানিয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ এবং তৈরি পোশাক খাতের সংকট সামাল দেওয়ার আশ্বাস দেয়া হয়েছে বলে জানান মাহফুজ আলম। পাশাপাশি সংস্কার ও নির্বাচন প্রক্রিয়া একসঙ্গে চলবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
নির্বাচন কমিশন গঠন এবং ভোটার তালিকা হালনাগাদের বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বাস দিয়ে বলা হয়েছে, সার্চ কমিটি নির্বাচন কমিশনের সদস্য ঠিক করবে। এর পর ভোটার তালিকা হালনাগাদসহ অন্যান্য প্রক্রিয়া শুরু হবে। তরুণ ভোটারদের অন্তর্ভুক্তির বিষয়টিও বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয়া হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেই নির্বাচনের রোডম্যাপ চূড়ান্ত করা হবে।
আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলীয় জোটের ভবিষ্যৎ বিষয়ে সরকারের অবস্থান পরিষ্কার বলে উল্লেখ করেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, ওনাদের রাজনৈতিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি হবে। কীভাবে এই প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন হবে, তা আইন ও প্রশাসনিক দিক থেকেই দেখা হবে। নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু হলে এসব বিষয় আরও স্পষ্ট হবে।
সংলাপের মাধ্যমে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সমন্বিতভাবে দেশ পরিচালনার পরিকল্পনা করছে বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়।