আনু মোহাম্মদ
গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়তে হলে শ্রমজীবীদের দাবি বাস্তবায়ন করতে হবে

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৪০ পিএম

ছবি: ভোরের কাগজ
একটি বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়ার জন্য শ্রমজীবীদের দাবি বাস্তবায়নের উপর জোর দিয়েছেন গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। তিনি বলেন, রাষ্ট্রে বা সমাজে চার ধরনের বৈষম্য দূর না হলে গণতান্ত্রিক শাসন সম্ভব হবে না। শুক্রবার (৪ অক্টোবর) বিকেলে ঢাকা বিশ্বিদ্যালয়ের সিরাজুল ইসলাম লেকচার হলে সমাজপাঠের উদ্যোগে ‘ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান: গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও শ্রমজীবীদের হিস্যা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘এ কথা বলা হয় যে, বাংলাদেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ কারা? এর উত্তর হলো শ্রমজীবী মানুষ। এবারের আন্দোলনে আহত-নিহতের তালিকার দিকে তাকান, সেখানেও শ্রমজীবীরাই বেশি। যে ছাত্ররা আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন তাদের বেশিরভাগই শ্রমজীবী, কৃষিজীবী পরিবারের সন্তান। তাহলে তাদের স্বার্থ কীভাবে রক্ষা হবে?’
তিনি আরো বলেন, ‘জিডিপির কথা সবাই জানেন যে, এটা একটা গোঁজামিলের হিসাব। শ্রমজীবী মানুষ কতটুকু অবদান রাখছে আর রাষ্ট্র তাদের জন্য কতটুকু বরাদ্দ করছে, তার স্বচ্ছ হিসাব আপনি পাবেন না। আর যেটুকু পাবেন তাতেও আকাশ সমান বৈষম্য। সুতরাং গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়তে হলে শ্রমজীবীদের দাবি বাস্তবায়ন করতে হবে।’
আরো পড়ুন: সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠনসহ ৮ দফা বাস্তবায়নের দাবি
‘রাষ্ট্রে বা সমাজে চার ধরনের বৈষম্য দূর না হলে গণতান্ত্রিক শাসন সম্ভব হবে না। সেগুলো হলো শ্রেণিগত, জাতিগত, ধর্মীয় ও লৈঙ্গিক বৈষম্য। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এসব বৈষম্য দূর করার কোনো আলোচনা এখনও শুরু করেনি,’ যোগ করে বলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক এই অধ্যাপক।
আলোচনা সভায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. শাহজাদ ফিরোজ প্রশ্ন তোলেন, ‘বৈষম্যহীন’ ব্যানারে যে আন্দোলনের সূত্রপাত, তার অন্তর্গত আকুতি হলো ন্যায়বিচারের প্রশ্ন। দেশে নিউ লিবারেল ইকোনমি চালু রাখবেন, জনগণের কোনো সেবা রাষ্ট্র দেবে না, তাহলে সমাজ থেকে বৈষম্য দূর হবে কীভাবে?’
শ্রমিক সংগঠক সত্যজিৎ বিশ্বাস বলেন, ‘শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার এবং জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে শ্রমিকদের অংশগ্রহণের বাস্তব সুযোগ ছাড়া গণতান্ত্রিক শাসক অর্থহীন। তাই সংস্কার কমিশনগুলোর প্রধান কাজ হলো শ্রমিকদের দাবিগুলো আগে প্রধান্য দেয়া। তাদের অধিকারগুলো নিয়ে আলোচনা করা।’
লেখক অ্যাক্টিভিস্ট তুহিন খান বলেন, ‘শ্রম ও শিক্ষা খাতের সংস্কার, শ্রম কাউন্সিল গঠন খুব জরুরি। কারণ শ্রমজীবীরাই দেশের মূল চালিকাশক্তি।’