×

জাতীয়

মার্কিন কর্মকর্তাদের সফর

সংস্কার ও পুনর্গঠনে গুরুত্ব

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

সংস্কার ও পুনর্গঠনে গুরুত্ব

ছবি : সংগৃহীত

   

বাংলাদেশের সংস্কার ও পুনর্গঠনে সব ধরনের সহযোগিতায় গুরুত্ব দিয়ে ঢাকা ছাড়ল মার্কিন প্রতিনিধি দল। ছয় সদস্যের ওই প্রতিনিধি দলের অন্যতম সদস্য ডোনাল্ড লু দিল্লি ঘুরে ঢাকা এসেছিলেন। এর ফলে ঢাকায় মার্কিন কর্মকর্তাদের এই সফর ও সহযোগিতার বার্তা তাৎপর্যপূর্ণ। যদিও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ইউনূস প্রতিবেশীর সঙ্গে সম্পর্কের কথা আগেই বলেছিলেন। তবু ঢাকা ও দিল্লির চলমান ¯œায়ুযুদ্ধের মধ্যেই মার্কিন সহযোগিতা পেতে দেশটির প্রতিনিধি দলের কোনো ভূমিকা রয়েছে কিনা- তা এখনই বোঝা না গেলেও অদূর ভবিষ্যতে খোলাসা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, গত ৮ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর বাংলাদেশে এটাই প্রথম যুক্তরাষ্ট্রের কোনো প্রতিনিধি দলের সফর। এতে যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও উন্নয়ন প্রয়োজনে সহায়তা করতে পারে- তা নিয়ে আলোচনা করেন যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের কর্মকর্তারা। গতকাল রবিবার দিনভর দুপক্ষ আলোচনায় ব্যস্ত থাকলেও দিনশেষে কোনো যৌথ বিবৃতি আসেনি।

সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, বাংলাদেশে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মার্কিন প্রতিনিধি দলের ঢাকা সফর এবং এই সফরের মধ্যেই নিত্যপণ্যের রপ্তানির জন্য ভারতের শুল্ক তুলে নেয়া ও অন্তর্বর্তী সরকারের তরফ থেকে ভারতের কাছে আলু, পেঁয়াজ চাওয়া ঢাকা ও দিল্লির মধ্যে সুসম্পর্কেরই ইঙ্গিত দেয়। তাদের মতে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক থাকলেও অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান ড. ইউনূসের সঙ্গেও ভারতের সম্পর্ক খারাপ নয়। কারণ আসাম থেকে দিল্লি পর্যন্ত অধ্যাপক ইউনূসের অবাধ যাতায়াত। এ রকম পরিস্থিতিতে বিশ্লেষকরা বলেছেন, চারদিক দিয়ে ঘেরা প্রতিবেশি সঙ্গে বৈরিতা করে কোনো লাভ নেই। বরং সম্মানের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করাটাই অর্জন ও গৌরবের। যা অতীতে কেউ চেষ্টা করেননি বলে জনসাধারণের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।

মার্কিন প্রতিনিধি দলটি গতকাল রবিবার প্রধান উপদেষ্টা, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা, অর্থ উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করে। পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বৈঠকে ঢাকা-দিল্লির সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও অনেকেই মনে করছেন। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের অন্যতম সদস্য এবং দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু ঢাকায় আসার আগে দিল্লি সফর করেছেন। এই সফরে ভারত থেকে কোনো বার্তা নিয়ে এসেছেন কিনা, জানতে চাইলে পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিন কৌশলী জবাব দিয়ে বলেন, এ বিষয়ে আজ কোনো আলোচনা হয়নি। বাংলাদেশে ভারতের হাইকমিশন আছে এবং ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশন আছে। আমরা যদি দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে চাই, এগুলো আমাদের জন্য প্ল্যাটফর্ম।

তবে মার্কিন প্রতিনিধি দলের সফরের বিশ্লেষণ জানতে চাইলে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শমসের মবিন চৌধুরী গতকাল ভোরের কাগজকে বলেন, মার্কিন প্রতিনিধি দলটি শুধু আর্থিক সহযোগিতা করার জন্য ঢাকা সফরে আসেনি। প্রতিনিধি দলের সদস্যদের পরিচয় বিশ্লেষণ করলেই বোঝা যায়, তাদের সঙ্গে ঢাকার রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে আলাপ-আলোচনা হয়েছে। কিন্তু কোনো পক্ষই এ বিষয়ে বিবৃতি না দেয়ায় এখনই এনিয়ে কথা বলা ঠিক হবে না। আরো কয়েকদিন গেলে সব খোলাসা হয়ে যাবে বলে জানান তিনি।

জাতি পুনর্গঠনে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চান ইউনূস : দেশ পুনর্গঠন, গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার এবং চুরি যাওয়া সম্পদ ফিরিয়ে আনতে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এটি বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময় এবং দেশের ইতিহাসে একটি তাৎপর্যপূর্ণ মুহূর্ত বলেও মন্তব্য করেন তিনি। সফররত মার্কিন প্রতিনিধি দলের কাছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরেন ড. ইউনূস। তিনি বলেন, তার প্রশাসন অর্থনীতিকে ‘পুনঃস্থাপন, সংস্কার ও পুনরায় চালু করতে’ দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে, আর্থিক খাতে সংস্কার শুরু করেছে এবং বিচার বিভাগ ও পুলিশের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কার করছে। গতকাল রবিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে প্রধান উপদেষ্টা এ সহায়তা চান। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের জনগণের কল্যাণে অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, প্রাতিষ্ঠানিক গঠন ও উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার প্রতি তাদের প্রতিশ্রæতি পুনর্ব্যক্ত করা হয়। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত বৈঠকের পর যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হয়, যেহেতু বাংলাদেশ আরো ন্যায়সঙ্গত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যতের রূপরেখা খুঁজছে, তাই যুক্তরাষ্ট্র এই প্রচেষ্টায় সমর্থন দিতে প্রস্তত রয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, প্রধান উপদেষ্টা ছাত্র-নেতৃত্বাধীন বিপ্লবের কথা বলেন, যা বাংলাদেশে আশার নতুন যুগের সূচনা করেছে। প্রধান উপদেষ্টা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গৃহীত সংস্কার উদ্যোগের একটি রূপরেখা বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, ভোট কারচুপি রোধ; বিচার বিভাগ, পুলিশ, সিভিল প্রশাসন ও দেশের দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার এবং সংবিধান সংশোধনের লক্ষ্যে তার সরকার দায়িত্ব নেয়ার মাত্র কয়েক সপ্তাহ পর ছয়টি কমিশন গঠন করেছে। অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তার সরকার আগের স্বৈরাচারী শাসনের সঙ্গে জড়িত দুর্নীতিবাজদের চুরি করা সম্পদ ফিরিয়ে আনতে প্রতিশ্রæতিবদ্ধ। দুর্নীতি মোকাবিলায় সরকার যেসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে তা বর্ণনা করতে গিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা দুর্নীতির সাগরে ছিলাম। মার্কিন প্রতিনিধি দলের নেতা ব্রেন্ট নেইম্যান ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করে বলেন, ওয়াশিংটন ডিসি তার সংস্কার এজেন্ডাকে সমর্থন করবে। মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কারের জন্য প্রযুক্তিগত ও আর্থিক সহায়তা দিতে আগ্রহী। ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠকে আর্থিক ও অর্থনৈতিক সংস্কার, বিনিয়োগ, শ্রম ইস্যু, রোহিঙ্গা সংকট এবং জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে প্রধান উপদেষ্টার নিউইয়র্ক সফর নিয়েও আলোচনা হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ‘অর্থবহ সম্পর্কের’ ভিত্তি : পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিন বলেছেন, দেশের আর্থিক খাতের সংস্কার নিয়ে বিস্তৃতভাবে আলোচনা করেছে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে এই আলোচনায় অর্থবহ সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ভিত্তি হিসেবে উল্লেখ করেছেন তিনি। গতকাল রবিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় একাধিক বৈঠকে কী বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে- সে সম্পর্কে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি জানান, আমরা মনে করি এটি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অর্থবহ সম্পর্কের একটি ভিত্তি। আমরা ভবিষ্যতে বিভিন্ন স্তরে এই আলোচনাকে এগিয়ে নিয়ে যাব। এগিয়ে যাওয়ার জন্য এটি একটি ভালো ভিত্তি। পররাষ্ট্র সচিব বলেন, তারা আর্থিক খাতের সংস্কার নিয়ে বিস্তৃতভাবে আলোচনা করেছেন এবং প্রাথমিকভাবে অর্থ পাচারের বিষয়টি নিয়েও আলোচনা করেছেন। কারণ বাংলাদেশ এক্ষেত্রে মার্কিন দক্ষতা ব্যবহার করতে পারে। তিনি বলেন, সবে শুরু হয়েছে আলোচনা। চূড়ান্ত রূপ পেতে কিছুটা সময় লাগতে পারে। মার্কিন পক্ষ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার ইচ্ছা পুনর্ব্যক্ত করেছে। বাংলাদেশ আর্থিক খাতে সংস্কারের জন্য কিছু খাত চিহ্নিত করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এসব খাতে তাদের সহযোগিতার আশ্বাস দেয়া হয়েছে। ‘আলোচনা অব্যাহত থাকবে’ উল্লেখ করে জসীম বলেন, বাংলাদেশ মার্কিন প্রতিনিধি দলকে শ্রম ক্ষেত্রে গৃহীত পদক্ষেপের বিষয়ে জানিয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্র উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হিসেবে দেখছে। ভারত সম্পর্কিত কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করার জন্য আলাদা প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। তাই এ ধরনের কোনো বিষয় এখানে আলোচিত হয়নি। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের বৈঠকের সম্ভাবনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে গেলে কোনো দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন না। তিনি বলেন, সেখানে দেখা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যদি তাদের সময়সূচি মিলে যায় তবে তারা একে অপরের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ হতে পারে। পররাষ্ট্র সচিব বলেন, দুই দেশের মধ্যে শ্রম সংস্কার, বাণিজ্য সহজীকরণ, রোহিঙ্গা সংকট এবং জিএসপি সুবিধা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। র‌্যাবের সংস্কার নিয়ে যেসব কাজ করা হয়েছে সেগুলো সম্পর্কে মার্কিন প্রতিনিধি দলকে জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিন। র‌্যাবের নিষেধাজ্ঞা তোলার বিষয়ে এবং নির্বাচন করার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার প্রশ্নে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, র‌্যাবের সংস্কার নিয়ে যেসব কাজকর্ম করছি সেগুলো সম্পর্কে তাদের অবহিত করেছি। এটা একটা চলমান আলোচনা। বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্টের আন্তর্জাতিক অর্থবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রেন্ট নেইমান, যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু, এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ, প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিকবিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

অগ্রাধিকার খাতে ২০০ মিলিয়ন ডলারের সহায়তা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র : বাংলাদেশের উন্নয়নে অন্তর্বর্তী সরকারের অগ্রাধিকার খাতে ২০০ মিলিয়ন ডলারের সহায়তা দিচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল রবিবার বেলা ১১টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় উন্নয়ন সহযোগিতা চুক্তির আওতায় এই অর্থ দেয়ার কথা জানান ইউএসএআইডির ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেটর অঞ্জলি কৌর। তিনি বলেন, বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি দলের অংশ হতে পেরে ভালো লাগছে। আমরা সরকারের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছি। এর আওতায় সরকারের অগ্রাধিকার খাতে ২০০ মিলিয়ন ডলারের সহায়তা দেয়া হবে। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে চাই। আমরা এখন চুক্তি অনুযায়ী কাজ করব। এ চুক্তি মূলত সরকারের অগ্রাধিকারমূলক কাজগুলো এগিয়ে নেয়ার জন্য। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) থেকে জানানো হয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৯৭২ সাল থেকে বাংলাদেশের একটি বিশ্বস্ত উন্নয়ন অংশীদার। ১৯৭৪ সালে স্বাক্ষরিত ‘অর্থনৈতিক প্রযুক্তিগত এবং সম্পর্কিত সহায়তা’ শীর্ষক একটি আমব্রেলা চুক্তির অধীনে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্র এবং শাসনের মতো বিভিন্ন খাতে এখন পর্যন্ত ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি অবদান রেখেছে। ইআরডি আরো জানায়, ২০২১ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১-২৭ সালের জন্য সরকার ও ইউএসএইড এর একটি নতুন সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছিল। এটি বাস্তবায়নের জন্য মোট ৯৫৪ মিলিয়ন ডলার দিতে প্রতিশ্রæতিবদ্ধ।

বাংলাদেশের নব উদ্যমে পৃষ্ঠপোষকতা দেবে যুক্তরাষ্ট্র : বাংলাদেশের নব উদ্যমে প্রবৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাওয়াকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পৃষ্ঠপোষকতা দেবে বলে দেশটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। গতকাল রবিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় ঢাকা সফররত মার্কিন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে বৈঠকের পর এ বার্তা দেয়া হয়েছে। এর আগে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠক করেন তারা। অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের পর ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের ভেরিফায়েড ফেসবুকে এক পোস্টে লেখা হয়েছে, বাংলাদেশের নব উদ্যমে প্রবৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাওয়াকে আমরা পৃষ্ঠপোষকতা করব। এ লক্ষ্যে শীর্ষ অর্থনৈতিক নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে আলাপে আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও টেকসই উন্নয়নকে ঘিরে তাদের উদ্যোগ ও প্রচেষ্টাকে সহায়তা করার ক্ষেত্রে আমাদের সম্পৃক্ততার বিষয়গুলো আলোচনায় গুরুত্ব পেয়েছে, লেখা হয়েছে ওই পোস্টে। এর আগে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের পর আরেক পোস্টে লেখা হয়, রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পেরে ভালো লেগেছে। আমরা আমাদের অংশীদার বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সম্প্রসারণ, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি, মানবাধিকার সমুন্নত রাখা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় সহায়তা করতে প্রতিশ্রæতিবদ্ধ, উল্লেখ করা হয়েছে ওই পোস্টে।

মার্কিন কর্মকর্তাদের গ্রাফিতির আর্টবুক উপহার দিলেন প্রধান উপদেষ্টা : অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস সফররত মার্কিন প্রতিনিধিদলকে গত জুলাই-আগস্ট মাসে বাংলাদেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজধানী ঢাকার দেয়ালে ছাত্রদের আঁকা বর্ণিল ও বৈচিত্র্যময় গ্রাফিতির ছবি-সংবলিত একটি আর্টবুক উপহার দিয়েছেন। গতকাল ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় মার্কিন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা তাদের হাতে এ উপহার তুলে দেন। ড. ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পরপরই তিনি সংশ্লিষ্টদের এই আর্টবুক প্রকাশের নির্দেশ দেন। বইটিতে জুলাই-অগাস্ট মাসে ছাত্রদের নেতৃত্বে বিপ্লব চলাকালে ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য শহর ও নগরের দেয়ালে তরুণ শিক্ষার্থীদের আঁকা সেরা কিছু শিল্পকর্মের ছবি স্থান পেয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা মার্কিন প্রতিনিধি দলের কাছে গ্রাফিতির ঐতিহাসিক তাৎপর্য তুলে ধরে বলেন, এসব গ্রাফিতিতে শেখ হাসিনার পাশবিক শক্তিকে প্রতিহত করতে নৃশংস এক বাহিনীর মুখোমুখি আন্দোলন-বিক্ষোভে অংশ নেয়া শিক্ষার্থী ও যুবকদের দাবি-দাওয়া, আবেগ-অনুভূতি, আশা-আকাক্সক্ষা চিত্রিত হয়েছে। মার্কিন প্রতিনিধি দলকে উদ্দেশ্য করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আমি আপনাদের ঢাকার দেয়ালগুলো একবার ঘুরে দেখার অনুরোধ করব। এসব গ্রাফিতি এখনো রাজধানীর দেয়ালে-দেয়ালে শোভা পাচ্ছে। এগুলো শুধু বিপ্লবের পরই নয়, আন্দোলন চলাকালেও শিক্ষার্থীরা সরকারি বাহিনীকে অমান্য করে এসব গ্রাফিতি আঁকেন।

টাইমলাইন: অন্তর্বর্তীকালীন সরকার

আরো পড়ুন

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App