×

জাতীয়

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বভিত্তিক নির্বাচন পদ্ধতির দাবি: সুজন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ আগস্ট ২০২৪, ০৭:০২ পিএম

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বভিত্তিক নির্বাচন পদ্ধতির দাবি: সুজন

ছবি: ভোরের কাগজ

   

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বভিত্তিক নির্বাচন পদ্ধতি প্রবর্তন, নারীদের জন্য এক-তৃতীয়াংশ আসন সংরক্ষণ এবং দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্ট গঠনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবার দাবি জানিয়েছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)। বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) রাজধানীর দ্য ডেইলি স্টার ভবনে ‘বাংলাদেশ নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারে করণীয়’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠক থেকে এই দাবি জানানো হয়। 

সজুন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত উক্ত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিচারপতি আব্দুর রউফ, সুজন নির্বাহী সদস্য তোফায়েল আহমেদ, সুজন সহ সম্পাদক জাকির হোসেন, সুজন নির্বাহী সদস্য অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, নির্বাচন কমিশনের সাবেক কর্মকর্তা জেসমিন টুলী, ফেমার সাবেক প্রেসিডেন্ট মুনিরা খান, সাংবাদিক আবু সাঈদ খান, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ড. আব্দুল আলীম, সাংবাদিক ও কবি সোহরাব হোসেন, প্রযুক্তিবিদ ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার।

বিচারপতি আব্দুর রউফ তার বক্তব্যে বলেন, স্থানীয় ভোটারদের কাছে নির্বাচন পরিচালনার দ্বায়িত্ব অর্পণ করলে অবশ্যই নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। তবে রাজনৈতিক দলগুলোকে দল পরিচালনায় গণতান্ত্রিক কর্মকাণ্ড অনুসরণে বাধ্যবাধকতা আনতে হবে। তাদের ভেতরে গণতন্ত্র চর্চা না থাকলে, মাঠ পর্যায়ে নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারা বহাল রাখা সম্ভব হবে না। নির্বাচনে যতদিন পর্যন্ত নমিনেশন বাণিজ্য বজায় থাকবে ততদিন এদেশে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না বা হতে পারে না। তিনি বলেন, তৃণমূল পর্যায়ে ভোটাররা দলকে ভোট দেবে, তাদের মনোনীত প্রার্থীকে নয়। প্রাপ্ত ভোটের আনুপাতিক হারে তারা সংসদের জন্য তাদের মনোনীত ব্যক্তিকে পাঠানের ব্যবস্থা করবেন। ভোট না দেবার জন্য জরিমানার ব্যবস্থা করা যেতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। 

আরো পড়ুন: রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ঠিক করতে সংবিধান পুনর্লিখনের তাগিদ

ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, একতরফা নির্বাচন কোনো নির্বাচন নয়। কারণ নির্বাচন মানেই বিশ্বাসযোগ্য বিকল্প থেকে বেছে নেয়া। লেজুড়ভিত্তিক ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করা এবং ভোটার তালিকায় জেন্ডার গ্যাপ কমানোর ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া দরকার বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বভিত্তিক নির্বাচন পদ্ধতির কিছু দুর্বলতা থাকলেও এটিই তুলনামূলক ভালো পদ্ধতি। পৃথিবীর ৯৭টি দেশে এই পদ্ধতিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সব গণতন্ত্রে এক কক্ষবিশিষ্ট সংসদ থাকে না। তাই জবাবদিহিতার কাঠামো প্রতিষ্ঠার জন্য দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট সংসদীয় কাঠামো প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। তিনি বলেন, ভোট করে রাজনৈতিক দল, ভোট দেয় জনগণ। তাই নির্বাচন আয়োজনে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ। তাই যতই শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠন করা হোক না কেন, নির্দলীয় সরকার ও নিরপেক্ষ প্রশাসন ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।   

আবু সাঈদ খান বলেন, বর্তমানে ওয়েস্ট মিনিস্টার পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের কার্যকারিতা নেই। তাই জনআকাঙ্ক্ষার ভিত্তিতে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বভিত্তিক নির্বাচন পদ্ধতি প্রবর্তনের কথা চিন্তা করতে হবে। 

মুনিরা খান বলেন, রাজনৈতিক দল ও ভোটারদের মধ্যে যদি সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে সদিচ্ছা না থাকে, তাহলে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা যায় না। এজন্য ভোটার অ্যাডুকেশন গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করে এবং প্রয়োজনীয় সংস্কারের পরই নির্বাচন আয়োজন করা দরকার বলে মন্তব্য করেন তিনি। 

আরো পড়ুন: বাংলাদেশের বন্যার্তদের জন্য ফিলিস্তিনের ত্রাণ সহায়তা

অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন না করলে তার কী করুণ পরিণতি হয় তা রাজনৈতিক দলগুলোর ভেবে দেখা দরকার। ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষার জন্য জবাবদিহিতার কাঠামো প্রতিষ্ঠা করা দরকার বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

জেসমিন টুলী বলেন, ১৯৯১ সালে এখনকার মতো নির্বাচনী আচরণবিধি ছিল না। কিন্তু সেই নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হয়েছিল। সরকার ও প্রশাসন নিরপেক্ষ না হলে সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব হয় না।

ড. আব্দুল আলীম বলেন, আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বভিত্তিক নির্বাচন পদ্ধতি প্রবর্তন করা হলে প্রার্থীর গুণগত মান বাড়বে। সবার প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হবে এবং নির্বাচনী খরচ কমবে। 

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে দিলীপ কুমার সরকার বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে জনগণের প্রত্যাশা রাষ্ট্র ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার তথা রাষ্ট্র সংস্কারের পর একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা অর্পণ করা।

নির্বাচনের আইনি কাঠামোর সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আইনি কাঠামো নিয়ে গভীরভাবে পর্যালোচনা করে নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আইনি সংস্কার দূর করতে হবে। সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে সুজনের প্রস্তাব হলো আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বভিত্তিক নির্বাচন পদ্ধতি প্রবর্তনের কথা ভাবা, নারীদের জন্য এক-তৃতীয়াংশ আসন সংরক্ষণ এবং উক্ত আসনে প্রত্যক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করা এবং দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্ট গঠনের ব্যাপারে বিবেচনায় নেয়া।

তিনি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচনকালীন সরকারের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে নির্বাচনকালীন সরকার সম্পর্কে একটি রাজনৈতিক সমঝোতায় উপনীত হওয়ার এবং প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দলীয়করণমুক্ত করার উদ্যোগ নিতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App