জাতিসংঘের কাছে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সুষ্ঠু তদন্ত চাইলেন উপদেষ্টা নাহিদ

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৫ আগস্ট ২০২৪, ০৬:১৬ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তে জাতিসংঘের সহায়তা চেয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। রবিবার (২৫ আগস্ট) সচিবালয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার দপ্তরের এশীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রধান রোরি মুঙ্গোভেনের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল। এ সময় উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, অনেক ত্যাগের মধ্য দিয়ে আমাদের এ স্বাধীনতা অর্জন হয়েছে, সর্বস্তরের জনগণকে আমরা সঙে পেয়েছি। এ অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশবাসীর প্রতি আমাদের কিছু প্রতিশ্রুতি তৈরি হয়েছে। আমরা সেগুলো নিয়ে কাজ করছি, পাশাপাশি গণঅভ্যুত্থানের চেতনা ধরে রেখে জাতীয় ঐক্য বজায় রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কার, আন্দোলনে আহত-নিহতদের পরিবারকে পুনর্বাসন ও দীর্ঘমেয়াদি সুবিধা দেয়া এবং আন্দোলনের সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচার নিশ্চিত করা এ তিনটি বিষয়ে অগ্রাধিকার দিচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, পুরো সময়টা জাতিসংঘ এবং হিউম্যান রাইটস সংগঠনগুলো আমাদের সঙ্গে ছিল। এজন্য আমরা তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই। আমরা তাদেরকে পূর্বেই আশঙ্কার কথা জানিয়েছিলাম যে, বিগত সরকার চূড়ান্ত ক্রেক ডাউনের দিকে যাবে, পরে সেই ঘটনাটি ঘটেছে। আমরা চাই জাতিসংঘের অধীনে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিশ্ববাসী জানুক, আন্দোলনের এই সময়ে বাংলাদেশে কী কী ঘটেছে এবং বিগত আওয়ামী লীগ সরকার আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার প্রতি কতটা নৃশংস ছিল।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার দপ্তরের এশীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রধান রোরি মুঙ্গোভেন অন্তবর্তী সরকারকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশের জনগণ বিশেষ করে তরুণেরা গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষায় যে সাহসিকতা দেখিয়েছেন, তাতে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার অনুপ্রাণিত হয়েছেন। এ ঘটনাটিকে বাংলাদেশের জন্য একটি সুযোগ হিসেবে দেখছেন তিনি। সত্য ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় তারা সর্ব রকম সহযোগিতা করতে প্রস্তুত বলেও জানান রোরি মুঙ্গোভেন।
আরো পড়ুন: বিডিআর বিদ্রোহ: শেখ হাসিনা, জেনারেল আজিজসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা
প্রতিনিধি দলের অপর সদস্য আন্দোলনের সময় সংগঠিত ঘটনাগুলোর তথ্য প্রমাণ সংরক্ষণ করার জন্য আইন, স্বরাষ্ট্র এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়কে সমন্বিতভাবে উদ্যোগ গ্রহণের পরামর্শ দেন। যাতে ভবিষ্যতে তদন্তে এ প্রমাণগুলো কাজে লাগানো যায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং ওটিপি প্লাটফর্মে আগের সরকারের মতো পর্যবেক্ষণের নামে নিয়ন্ত্রণ না করার অনুরোধ করেন। প্রয়োজনে এ বিষয়ে অভিজ্ঞদের সরকারের সঙ্গে কাজ করার জন্য প্রেরণ করারও অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন তিনি।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়া বলেন, বাংলাদেশের যুব সমাজের খেলার প্রতি আগ্রহ রয়েছে। পূর্ববর্তী আওয়ামী লীগ সরকার ক্রীড়াঙ্গনসহ সর্বস্তরে দুর্নীতি করেছে। আমাদের সরকার ক্রীড়াঙ্গনকে দুর্নীতি ও রাজনীতি মুক্ত করার কাজ করছে। দেশে চলমান বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের রেজিস্টার্ড ৮৫০০টি যুব সংগঠন বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে।
এ উপদেষ্টা আরো বলেন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়। দায়িত্ব নেয়ার পর তাজরীন ফ্যাশন এবং রানা প্লাজা ট্র্যাজেডিতে হতাহতদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। দেশের অর্থনৈতিক সচল রাখতে অন্যতম হাতিয়ার আমাদের শ্রমিকরা কিন্তু আমাদের শ্রমিক ভাইরা, তাদের অধিকার- তাদের ন্যায্য অধিকার প্রাপ্তিতে বঞ্চিত। তাদের অধিকার নিশ্চিত করা আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য। তাদের জীবনমান উন্নয়নে আমাদের আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রয়োজন।
পরে উপদেষ্টারা জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার দপ্তরের প্রতিনিধিদলকে সাক্ষাতের জন্য ধন্যবাদ জানান।