ভারতে পালানোর সময় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা পান্নার মৃত্যু

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৪ আগস্ট ২০২৪, ০৯:১৭ পিএম

ছিবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসহাক আলী খান পান্না ভারতে পালানোর সময় মারা গেছেন। শুক্রবার (২৩ আগস্ট) মধ্যরাতে মেঘালয়ের শিলং পাহাড়ে ওঠার সময় হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তার মৃত্যু ঘটে বলে জানা গেছে।
কলকাতায় অবস্থান করা পান্নার এক ঘনিষ্ঠজন শনিবার বিষয়টি গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ব্যক্তি জানান, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বেশ কিছুদিন আত্মগোপনে ছিলেন ইসহাক আলী খান পান্না। তিনি সীমান্ত পার হয়ে ভারতে পালানোর চেষ্টা করছিলেন। শুক্রবার রাত ১২টায় মেঘালয়ের রাজধানী শিলং-এর একটি পাহাড়ে ওঠার সময় তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন। এর পরপরই তার মৃত্যু হয়।
তবে পান্নার মৃত্যুর কারণ নিয়ে ভিন্ন তথ্যও পাওয়া গেছে। কেউ কেউ বলছেন, পাহাড়ে ওঠার সময় পা পিছলে পড়ে গিয়ে তার মৃত্যু হয়েছে। তবে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
পান্নার বড় ভাইয়ের শ্যালক জসিম উদ্দিন খান জানান, ৩ দিন আগে পান্নার সঙ্গে তার ফোনে কথা হয়েছে। তিনি ২৫ জুলাই পিরোজপুর শহরের বাড়িতে এসে ২ দিন থাকার পর ফিরে যান। বিভিন্ন সূত্রে তারা জানতে পেরেছেন, পান্না সিলেটের তামাবিল সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন। ওপারেই তার মৃত্যু হয়। তবে সেটি স্ট্রোকজনিত কারণে নাকি অন্য কোনো কারণে তা নিশ্চিত করতে পারেননি তারা। সীমান্তের ভারত প্রান্তের একটি থানায় তার মরদেহ রয়েছে বলে জানিয়েছেন জসিম।
আরো পড়ুন: শ্রীলঙ্কায় বাংলাদেশের নতুন হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস
এদিকে, পান্নার মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশ কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারেনি। মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়েও কারো কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মোহাম্মদ নুরুল হুদা জানান, কেউ বৈধ বা অবৈধ যেভাবেই ভারতে যাক না কেন, মৃতদেহ ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা নেই। বিষয়টি ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা ব্যবস্থা নেবে।
গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ ও দেশত্যাগের পর থেকেই আত্মগোপনে ছিলেন ইসহাক আলী খান পান্না। সেদিনই তার পিরোজপুর শহরের পাড়েরহাট সড়কের বাড়িতে দুর্বৃত্তরা ভাঙচুর ও আগুন দেয়। পিরোজপুরের পৈত্রিক নিবাসে পৃথক দ্বিতল ভবন করেছিলেন পান্না। তার এক ভাই ওই বাড়িতে থাকলেও সরকার পতনের পর থেকে তিনিও আত্মগোপনে আছেন। পান্নার গ্রামের বাড়ি পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার বেকুটিয়া গ্রামে। তবে গ্রামের বাড়িতে তার যাতায়াত তেমন ছিল না।
ইসহাক আলী খান পান্নার স্ত্রী আইরীন পারভীন বাঁধন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ৪৫ বছর বয়সে ২০১৬ সালের ২৪ এপ্রিল মারা যান। আইরীন সরকারের উপ-সচিব এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন্নাহার হলের ভিপি ছিলেন। স্ত্রীর মৃত্যুর পর পান্না আর বিয়ে করেননি। তাদের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে, তবে সে পালিত সন্তান বলে জানা গেছে।
ইসহাক আলী খান পান্না ১৯৯৪ সালে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ছিলেন। ২০০৮ সালে তিনি পিরোজপুর-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান, তবে পরে দলীয় জোটের কারণে তাকে সরে যেতে হয়। পেশাগত জীবনে তিনি ডায়মন্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানীর চেয়ারম্যান ছিলেন।