ড. ইউনূসের উদ্দেশে প্রেসক্লাব সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের খোলা চিঠি

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৩ আগস্ট ২০২৪, ০৭:৪৬ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
দেশের ক্রান্তিলগ্নে জাতীয় প্রেসক্লাবে ক্ষমতা দখলের অপচেষ্টা চলছে। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম কার্যালয়ে হামলার ঘটনা ঘটছে। এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন এবং সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত। এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে লিখিত আবেদন জানিয়েছেন তারা।
আবেদনের কপিটি অবিকল তুলে ধরা হলো-
দেশের চরম ক্রান্তিলগ্নে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেয়ায় আপনাকে জানাই আন্তরিক অভিনন্দন ও হার্দিক শুভেচ্ছা। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস- আপনার সুদক্ষ ও সুযোগ্য নেতৃত্বে অচিরেই দেশের সর্বক্ষেত্রে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে, দূর হবে যাবতীয় বৈষম্য ও নৈরাজ্য। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে রাষ্ট্র সংস্কারের যে সূবর্ণ সুযোগ আপনারা পেয়েছেন, গণমাধ্যমকর্মীরাও তার সহযোগী হবে অবশ্যই।
কিন্তু আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, ক্ষমতার পালাবদলের পর জাতীয় প্রেসক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটির কয়েকজন সদস্য চর দখলের মতো ক্ষমতা দখলের প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। তারা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কক্ষে ভাঙচুর চালিয়েছেন এবং জিনিসপত্র লুটপাট করেছেন।
সহসভাপতি হাসান হাফিজ ও যুগ্ম সম্পাদক আইয়ুব ভূঁইয়া অগঠনতান্ত্রিকভাবে নিজেদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করেছেন। শুধু তাই নয়, তারা অগঠনতান্ত্রিকভাবে সভা আহ্বান করে নির্বাচিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে অব্যাহতি এবং একজন সদস্যসহ তাদের তিনজনের সদস্যপদ বাতিল করেছেন।
এছাড়া ৫০ জনের বেশি সিনিয়র সাংবাদিকের সদস্যপদ বাতিলের উদ্যোগ নিয়েছেন। আমরা এ ধরনের অপতৎপরতার তীব্র নিন্দা জানাই। সেই সঙ্গে তাদেরকে এই ধরনের অগঠনতান্ত্রিক কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাই।
জাতীয় প্রেসক্লাব একটি মর্যাদাসম্পন্ন প্রতিষ্ঠান। বিভিন্ন রাজনৈতিক বিশ্বাসের পেশাদার সাংবাদিকরা এর সদস্য। তারা সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে ক্লাবের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেন। বর্তমান পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে যেকোনো ধরনের কর্মকাণ্ড গঠনতন্ত্রবিরোধী ও অবৈধ বলে গন্য হবে। এ ব্যাপারে কাউকে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।
প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে পরিচালিত হয়েছে জাতীয় প্রেসক্লাব। একটি নিরপেক্ষ, নিয়মতান্ত্রিক ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে এর ব্যবস্থাপনা কমিটি নির্বাচিত হয়। আমাদের বিশ্বাস, গণতন্ত্রমনা সুন্দর বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা সাংবাদিকদের 'দ্বিতীয় বাড়ি' জাতীয় প্রেসক্লাব জবরদখলের এই গর্হিত কর্মকাণ্ডকে কোনোভাবেই সমর্থন করবেন না।
সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম কার্যালয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এর তীব্র নিন্দা জানানোর পাশাপাশি গণমাধ্যমের স্বাধীনতা যেন বিঘ্নিত না হয়, সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করছি।