কোটাবিরোধীদের কঠোর হুঁশিয়ারি দিলেন ডিএমপি কমিশনার

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৫ জুলাই ২০২৪, ১২:২২ পিএম

ছবি: ভোরের কাগজ
সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, আদালতের আদেশ না মেনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করা হলে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে শক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সোমবার (১৫ জুলাই) লালবাগে হোসাইনী দালান ইমামবাড়ায় পবিত্র আশুরা উদ্যাপন ও তাজিয়া বা শোক মিছিল উপলক্ষে ডিএমপির নেয়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন। এসময় তাজিয়া মিছিলকে কেন্দ্র করে অতীতের জঙ্গিবাদের ঘটনাকে মাথায় রেখে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানান ডিএমপি কমিশনার।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, চলমান কোটা আন্দোলনের বিষয়টি আদালতের বিষয়। আদালত যে আদেশ দিবে সেটিকে শ্রদ্ধা ও মানা নাগরিকের দায়িত্ব। আমরা আদালতের নিয়ম মানতে বাধ্য। পুলিশ যেসকল নিরাপত্তা পরিকল্পনা প্রণয়ন করবে সেটি আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই করবে। যদি কেউ আইনশৃঙ্খলা ভেঙে কোনো ধরনের অপতৎপরতা চালায়, সে যেই হোক না কেনো শক্ত হাতে মোকাবেলা করা হবে।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে কোটা বাতিল করে জারি করা পরিপত্র হাইকোর্ট অবৈধ ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় শিক্ষার্থীরা মাঠে নেমেছে। তারা প্রথমে সেই পরিপত্র ফিরিয়ে আনা অর্থাৎ কোটা তুলে দেয়ার দাবি জানালেও পরে সংস্কারের দাবি তুলেছে। হাইকোর্টের এই আদেশে চার সপ্তাহের স্থিতাবস্থা দিয়ে আপিল বিভাগ শুনানির সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। সেই শুনানিতে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বক্তব্য তুলে ধরার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। তবে শিক্ষার্থীরা সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডেকে কোটার বিষয়ে ফয়সালা চাইছেন, আর ফয়সালা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন।
গত সপ্তাহে মঙ্গলবার বাদ দিয়ে প্রতিটি কর্মদিবসেই বাংলা ব্লকেড নামে অবরোধ কর্মসূচি পালন করায় যান চলাচলে তীব্র ভোগান্তি হয়েছে। বুধবার পর্যন্ত নির্বিঘ্নে কর্মসূচি পালন করলেও বৃহস্পতিবার থেকে পুলিশের পক্ষ থেকে সতর্কবার্তা দেয়া হয়েছে, একাধিক এলাকায় বাধাও দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী চীন সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনেও বলেছেন, কোটার বিষয়টি ফয়সালা হবে আদালতেই। আর রাস্তায় ধ্বংসাত্মক কিছু হলে আইন ‘নিজস্ব গতিতে চলবে। অন্যদিকে রবিবার শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি মেনে নিতে রাষ্ট্রপতিকে স্মারকলিপি দেয়ার পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে করা সব মামলা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তুলে নেয়ার দাবিও জানিয়েছে।
বঙ্গভবনে স্মারকলিপি দিয়ে ফেরার পথে গুলিস্তানে আয়োজিত সমাবেশে শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের’ অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, যদি মামলা তুলে নেয়া না হয় আমাদের কর্মসূচি আরো কঠোর হবে। পুলিশ কর্মকর্তাদের এর দায় নিতে হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান অবশ্য বলেছেন, আন্দোলনকারীরা যতই মামলা তোলার আল্টিমেটাম দিক, মামলার তদন্ত চলবে। মেরিট দেখেই মামলা করা হয়েছে।