কোটা আন্দোলনকারীদের যে বার্তা দিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৩ জুলাই ২০২৪, ১০:৪৬ পিএম

আসাদুজ্জামান খান কামাল
সারাদেশে চলমান কোটা সংস্কারের দাবিতে চলা শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘আমি মনে করি, তাদের (ছাত্রদের) একটু অপেক্ষা করা উচিত, আন্দোলন থামানো উচিত। কারণ, পৃথিবীর সব জায়গায় কিন্তু কোটা রয়েছে। সব দেশেই কিছু অনগ্রসর জায়গা থাকে, যেমন আমাদের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জন্য কোটা রয়েছে এবং সংবিধানেও সেটি বলা আছে। এটি বাতিল করে দিলে এরা কোনো দিন সমাজের মূলস্রোতে আসতে পারবে না। আমরা মনে করছি, সবাই যেন একসঙ্গে চলতে পারে।
শনিবার (১৩ জুলাই) বিকেল সোয়া ৪টার দিকে ময়মনসিংহ পুলিশ লাইন্সে সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।পুলিশের ময়মনসিংহ রেঞ্জের ডিআইজি শাহ আবিদ হোসেনের সভাপতিত্বে এবং ময়মনসিংহ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাইমেনুর রশিদ ও ডিএমপির অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনার মাহমুদা আফরোজ লাকীর যৌথ সঞ্চালনায় সুধী সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য দেন ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভুঞা।
এসময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী কোটা উঠিয়ে দিয়েছিলেন। তারপর বিচার বিভাগ থেকে বার্তা আসছে কোটা আবার চালু হবে। এতে সংক্ষুব্ধ হয়েছে আমাদের ছাত্ররা। তাদের দাবির প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি একটি স্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন, হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেছেন। ছাত্রদের বলা হয়েছে তারা যেন তাদের কথা উচ্চতর আদালতে বলে। তাহলে বিচারপতিদের বিচার করতে সুবিধা হবে। কাজেই আমি মনে করি তাদের অপেক্ষা করা উচিত। আন্দোলন থামানো উচিত।
আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘ছাত্র ভাইদের কিছু বলার থাকলে তারা রাস্তাঘাট বন্ধ না করে আদালতে এসে তাদের যা বলার তা যেন বলেন। রাস্তাঘাট বন্ধ করলে জনগণের দুর্ভোগ বাড়ে, হাসপাতালগামী রোগীদের দুর্ভোগ বাড়ে। যে যেখানে যাচ্ছেন, তারা বাধাপ্রাপ্ত হলে ৫-৬ ঘণ্টা বসে থাকেন। সেই সাধারণ মানুষের যে কী অভিব্যক্তি, ছাত্রদের তা শোনা উচিত। আমি মনে করি, রাস্তা অবরোধ না করে আমাদের প্রধান বিচারপতি যেভাবে বলেছেন, তাদের সব দাবি যেন আদালতে এসে বলেন।
প্রসঙ্গত, সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে গত ১ জুলাই থেকে আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা। এরমধ্যে গত রবিবার ‘বাংলা ব্লকেড’কর্মসূচি শুরু করেন তারা। প্রথম দুই দিন রবি ও সোমবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত ঢাকাসহ সারাদেশের গুরুত্বপূর্ণ সড়কে অবস্থান নিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেন আন্দোলনকারীরা। মঙ্গলবার গণসংযোগ কর্মসূচি পালনের পর গত বুধবার আবার সকাল থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত তারা সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেন। তাদের এ কর্মসূচিতে সারাদেশ থেকে রাজধানী অনেকটা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সারাদিনের অবরোধে সড়কে যানবাহন আটকে থাকায় দিনভর চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় রাজধানীবাসীকে। এরপর থেকে নিয়মিত কর্মসূচি পালন করে চলেছে শিক্ষার্থীরা।