ছুটি ছাড়াই ১৪ দিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত মতিউর, কী শাস্তি হচ্ছে?

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০৭:৪৪ পিএম
দেশেজুড়ে আলোচনায় আসা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক সদস্য মতিউর রহমানকে প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে না। কিছু দিন ধরে বন্ধ তার মোবাইল নম্বরও। আরেকজনের মাধ্যমে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে যোগদানপত্র দিলেও, এখন পর্যন্ত নতুন কর্মস্থলে উপস্থিত হননি মতিউর। এমনকি ছুটিও নেননি তিনি।
এমন পরিস্থিতিতে বিদেশি পাসপোর্ট ব্যবহার করে মতিউরের দেশ ছাড়ার গুঞ্জন রয়েছে। এমন ঘটে থাকলে তাকে পাওয়া কষ্টসাধ্য হবে। এরই মধ্যে মতিউরের দ্বিতীয় স্ত্রী শাম্মী আখতার শিবলী ও তার ছেলে ছাগলকাণ্ডের হোতা মুশফিকুর রহমান ইফাত দেশের বাইরে পাড়ি জমিয়েছেন।
ছাগলকাণ্ডের পর মতিউরের অবৈধ অঢেল বিত্ত নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হয়। এর মধ্যে গত ২৩ জুন কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট আপিলাত ট্রাইব্যুনালের সভাপতির পদ থেকে প্রত্যাহার করে তাকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে সংযুক্ত করে সরকার। পরদিন সোনালী ব্যাংকের পরিচালক পদ থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়।
এর পর ২৫ জুন অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ চিঠি দিয়ে মতিউরকে ওই দিনের একটি মিটিংয়ে সশরীরে থাকার নির্দেশ দেয়। কিন্তু মিটিং দূরে থাক, নতুন কর্মস্থলে এখন পর্যন্ত একদিনও অফিস করেননি মতিউর। সম্প্রতি দেশটির একটি শহরে মতিউরকে দেখা গেছে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উচ্চপদস্থ এক কর্মকর্তা বলছেন, মতিউর দেশেই আছেন।
এ বিষয়ে মতিউরের প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজের একাধিক মোবাইল নম্বরে কল করেও সাড়া মেলেনি। আরেকটি সূত্রের দাবি, মতিউরের নামে-বেনামে থাকা সম্পদের বিষয়ে দুদক ছাড়াও একাধিক সংস্থা অনুসন্ধান করছে। গত মাসের মাঝামাঝি তড়িঘড়ি করে ব্যাংক থেকে ৮ কোটি টাকা তুলে নেন তিনি।
বর্তমানে জমা আছে ৪ কোটি টাকা। টাকা লেনদেনে বিভিন্ন সময় ১১৫টি ব্যাংক হিসাব ব্যবহার করেছেন মতিউর। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট, সিআইডির মানি লন্ডারিং ইউনিটসহ একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা মতিউরের অর্থ লেনদেনের তথ্য বের করতে অনুসন্ধান শুরু করেছে। তার বিদেশি পাসপোর্ট রয়েছে কিনা, তাও তদন্ত করছে।
দুর্নীতির অর্থে অনেকে পর্তুগালসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশের পাসপোর্ট নিয়ে থাকেন। মতিউরের ক্ষেত্রে এমন হয়েছে কিনা, যাচাই করা হচ্ছে। চাকরিবিধি অনুযায়ী বদলির দিনই সশরীরে নতুন কর্মস্থল অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যানের কাছে যোগদান করার কথা মতিউরের।
জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ সাবেক অতিরিক্ত সচিব ফিরোজ মিয়া বলেন, এসব ক্ষেত্রে যোগদান করতে হবে সশরীরে। অন্য কারও মাধ্যমে যোগদানপত্র পাঠালে কর্তৃপক্ষ তা গ্রহণ করতে পারে না। মতিউর রহমান সশরীরে যোগদান করেননি। পাশাপাশি ছুটি না নিয়ে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন, যা অসদাচরণ গণ্য হবে। এ জন্য তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হতে পারে।