বেনজীর-ফয়সাল-মতিউরের শেষ পরিণতি কী?

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৪, ০৪:০১ পিএম
দেশে ধনবান হওয়ার জন্য কি তবে রুদ্ধশ্বাস প্রতিযোগিতা চলছে? বেনজীর আহমেদ, মতিউর রহমান ও কাজী আবু মাহমুদ ফয়সাল যেন একই বৃন্তে তিনটি ফুল। তবে এই ফুলের সুবাস নেই, ছড়িয়েছে দুর্নীতি দুর্গন্ধ। মতিউর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদ্য সাবেক সদস্য। আর সংস্থাটির প্রথম সচিব ফয়সাল। আর বেনজীর পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক।
বিপুল অবৈধ সম্পদের তথ্য সামনে আসায় তিনজন এখন নিন্দিত, সমালোচিত। তাদের বিরুদ্ধেই ক্ষমতার অপব্যবহার, ঘুস লেনদেনের মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন। প্রাথমিক অনুসন্ধানেই তাদের শত শত কোটি টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে।
প্রাথমিক অনুসন্ধানে দুদক নিশ্চিত হয়েছে, ফয়সালের চেয়ে অনেক বেশি সম্পদ নামে-বেনামে গড়ে তুলেছেন মতিউর ও বেনজীর। মতিউর নিজের নামে মাত্র ২০ কোটি টাকার সম্পত্তি আয়কর ফাইলে দেখিয়েছেন। বাকি কয়েক হাজার কোটি টাকার সম্পদ করেছেন স্ত্রী-সন্তান, ভাই ও আত্মীয়স্বজনের নামে।
তবে তারা নিজেদের নামে সম্পদ করেছেন কম। বেশি করেছেন স্ত্রী-সন্তান ও আত্মীয়স্বজনের নামে। বেনজীর, মতিউর ও ফয়সাল পরিবার নিয়ে যে বাসা-বাড়িতে থাকেন সেগুলোও নিজেদের নামে করেননি। সিদ্ধেশ্বরীতে প্রায় ছয় কোটি টাকা দামের যে ফ্ল্যাটটিতে থাকে ফয়সাল পরিবার, সেটা কিনেছেন শ্বশুর আহমেদ আলীর নামে।
মতিউর বসুন্ধরায় অত্যাধুনিক যে বাড়িতে থাকেন সেটা মেয়ে ফারজানা রহমান ইপ্সিতার নামে করেছেন। স্ত্রী ও ভাইদের নামে করেছেন শিল্পকারখানা, রিসোর্টসহ বিপুল সম্পত্তি। দুদকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০০৫ সালে বিসিএস ক্যাডারে সহকারী কর কমিশনার হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন ফয়সাল।
বর্তমানে তিনি এনবিআরের আয়কর বিভাগের প্রথম সচিব হিসাবে দায়িত্বরত। চাকরি জীবনে ঘুস-দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল অঙ্কের অর্থ উপার্জন করেছেন। তার অপরাধলব্ধ অর্থই শ্বশুর-শাশুড়ির নামে করা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে লেনদেন করা হয়েছে। গত বছর থেকে দুদক ফয়সালের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে।
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ ও তার স্ত্রী-সন্তানের নামে থাকা আরও ১১৩টি দলিলের সম্পদ। এছাড়া গুলশানের ৪টি ফ্ল্যাট জব্দ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে বিভিন্ন কোম্পানিতে তাদের নামে থাকা শেয়ার অবরুদ্ধ করারও আদেশ দিয়েছেন আদালত।
মতিউর রহমান পরিবারের বিপুল সম্পদ। আর অবৈধ সম্পদের অভিযোগ আমলে নিয়ে গত বছর ফয়সালের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান টিম গঠন করে দুদক। বেনজীর ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অনুসন্ধান শুরু করে দুদক।