২০৪১ সালের আগেই বাংলাদেশ উন্নত সমৃদ্ধ দেশে রুপান্তরিত হবে

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২২ জুন ২০২৪, ০৬:৩১ পিএম

সংসদে কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহীদ। ছবি: সংগৃহীত
কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহীদ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্বে অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা রুপকল্প ২০০১ সালে যে ডেল্টা প্লান প্রণয়ন করা হয়েছে তা বাস্তবায়নের মাধ্যমে ২০৪১ সালের আগেই বাংলাদেশ হবে জ্ঞানভিত্তিক সুখি সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ।
শনিবার (২২ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের ওপর বক্তব্যে এ প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। এসময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করছিলেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালে সদ্য স্বাধীন একটা দেশকে বঙ্গবন্ধু যখন গড়ে তোলার কাজ শুরু করেন, তখন ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি নৃশংসভাবে বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করে। তার পরবর্তিতে জেলের অভ্যন্তরে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়। এরকম নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ড পৃথিবীতে আর হয়েছে কিনা জানিনা, যা ছিলো ঘৃণ্য জঘন্য হত্যাকাণ্ড। যদিও তাদের অনেকের শাস্তি হয়েছে, ফাঁসি হয়েছে। যাদের হয়নি তাদের শাস্তির দাবি জানান তিনি।
আব্দুস শহীদ বলেন, ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়ে আবারো সরকার গঠন করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের প্রভূত উন্নয়ন ঘটেছে। তিনি বলেন, দেশের ৪৩ শতাংশ মানুষ কৃষিতে সম্পৃক্ত। সত্যিকার অর্থে এদেশের কৃষকের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। বঙ্গবন্ধু নিজেই বলেছিলেন, কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে।
তিনি বলেন, কৃষি খাত অর্থনীতির উন্নয়নের জন্য একটি বড় খাত। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, খাদ্যের জন্য অন্যের ওপর নির্ভর করা চলবে না। প্রয়োজনীয় খাদ্য আমাদেরকেই উৎপাদন করতে হবে। কৃষকদেরকে বাঁচাতে হবে উৎপাদন বাড়াতে হবে। তা নাহলে কৃষি তথা দেশকে বাচাঁতে পারবো না। তিনি বলেন, ২০২৪ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে আমরা ১১টি বিশেষ অধিকার উল্লেখ করেছি। যার প্রথমটি- দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখার জন্য সর্বাত্বক চেষ্টা করা। দ্বিতীয়টি হলো- লাভ জনক কৃষির জন্য সমন্বিত কৃষি ব্যবস্থা, কৃষি যান্ত্রিকীকরণ ও উৎপাদন বাড়াতে বিনিয়োগ বাড়ানো।
আরো পড়ুন: বাংলাদেশিদের জন্য ই-মেডিকেল ভিসা চালুর ঘোষণা মোদির
চলতি বছরের ধানের উৎপাদন বেড়েছে উল্লেখ করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, যান্ত্রিকীকরণের ফলে কৃষকদের হার্বেস্টার মেশিন দেয়ায় একটা ধানও কিন্তু প্রাকৃতিক দূর্যোগের ফলে নষ্ট হয়নি। আমরা চেষ্টা করছি আমাদের প্রতিটি কৃষক যাতে স্বয়ং সম্পূর্ণ হতে পারে। যাতে তারা না অভিযোগ করে একবার সার পেলাম তো মেশিন পেলাম না, আবার মেশিন পেলাম তো সার পেলাম না। সারের ডিলারদের নিয়োগের জন্য এমপিদের নাম সুপারিশ করার আহ্বান জানান, যিনি সার আত্মস্বাদ করবেন না এমন ডিলার।
আব্দুস শহীদ বলেন, উন্নয়নের জন্য ঘাটতি বাজেট দেয়া হয়ে থাকে। সেটা বিদেশী কোনো ফান্ড থেকে পূরণ হয়ে থাকে। এবারে যে ঘাটতি তা জিডিপির ৪.৫ শতাংশ, ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ঘাটতি জিডিপির ৫.৭ শতাংশ ছিলো। সব জায়গাতে ঘাটতি থাকে। সেটা বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এডিবি এসব সংস্থা থেকে ফান্ড নিয়ে পূরণ করেই বাজেট বাস্তবায়িত করা হয়ে থাকে। যার ফলে উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালিত হয়, দেশের উন্নয়ন ঘটছে ব্যাপকভাবে।
তিনি বলেন, এবারে কৃষি খাতে অনেক টাকা বাজেট দেয়া হয়েছে। যোগাযোগ খাত, সামাজিক নিরাপত্তা, দারিদ্র বিমোচন, নারী উন্নয়ন ও শিশু কল্যাণে বাজেটে অধিক টাকা দেয়া হয়েছে। কৃষিমন্ত্রী বলেন, আমি টাকার বিরুদ্ধে লড়াই করেছি, চোরাকারবারীদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। এলাকার মানুষ ৭ বার আমাকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত করে এখানে পাঠিয়েছেন। আমার এলাকার চা বাগানে স্কুল হচ্ছে। একটি সাত তলা বিদ্যালয় হচ্ছে। কিন্তু চা শ্রমিকদের স্বাস্থ্য বিষয়ে আরো একটু নজর দেবার জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে আহ্বান জানান তিনি। তাদের ছেলে মেয়েরা অপুষ্টিতে ভুগছে। তিনি মৌলভীবাজারে একটি মেডিকেল কলেজ করার দাবি জানান। সিলেটের জন্য তিনি একটি দ্রুতগতির ট্রেন দেবার জন্যও রেলমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন করেন।