কে এই টিকটকার প্রিন্স মামুন (ভিডিও)

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১ জুন ২০২৪, ০২:১৬ এএম

কে এই টিকটকার প্রিন্স মামুন
সামাজিক মাধ্যমে বহুল আলোচিত লায়লা আক্তার ফারহাদের (৪৮) ধর্ষণ মামলায় টিকটকার আব্দুল্লাহ আল মামুন ওরফে প্রিন্স মামুনকে (২৫) গ্রেপ্তার করেছে কুমিল্লার পুলিশ। তাকে আজ (১১ জুন) ঢাকার আদালতে তোলা হবে। সোমবার (১০ জুন) রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, সোমবার রাত কুমিল্লার পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। প্রিন্স মামুনের বিরুদ্ধে ক্যান্টনমেন্ট থানায় ধর্ষণ মামলা রয়েছে।
এদিকে কুমিল্লার দাউদকান্দি মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাম্মেল হক জানিয়েছেন, সোমবার (১০ জুন) রাত পৌনে ১০টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার দাউদকান্দি টোল প্লাজা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে দাউদকান্দি থানা পুলিশ।
তিনি বলেন, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট পুলিশের পক্ষ থেকে আমাদের রিকুইজিশন দেওয়া হয়েছিল। পরে রাত পৌনে ১০টার দিকে দাউদকান্দি টোল প্লাজা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট পুলিশের একটি টিম কুমিল্লায় এলে তাদের কাছে প্রিন্স মামুনকে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এর আগে টিকটকার লায়লাকে বিয়ের প্রলোভনে রোববার (৯ জুন) প্রিন্স মামুনের বিরুদ্ধে রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানায় একটি মামলা দায়ের করেন লায়লা আক্তার ফারহাদ।
কিন্তু কে এই বহুল আলোচিত টিকটকার প্রিন্স মামুন? যারা সামাজিক মাধ্যমে খুব বেশি সময় দেন না তারা টিকটকার প্রিন্স মামুনকে চিনবেন না, এটাই স্বাভাবিক। তাদের মনে প্রশ্ন উঠেছে, কে এই প্রিন্স মামুন? কী করেন তিনি?
প্রিন্স মামুনের উত্থান মূলত সোশ্যাল মিডিয়া ‘টিকটক’ ও ‘লাইকি’র সুবাদে। বাংলাদেশে এসব অ্যাপ জনপ্রিয়তার পেছনে কিছুটা হলেও মামুনের ভূমিকা আছে। নিজের করা মিউজিক ভিডিও সেখানে পোস্ট দিতেন মামুন। সেখান থেকেই তার পরিচিতি এবং জনপ্রিয়তা।
একটা সময়ে নাচ শিখেছেন মামুন। সেই নাচের ভিডিও অনলাইনে শেয়ার দিতেন। শেয়ার দিতেন অনেক মজার ভিডিও। এভাবেই তার ফলোয়ারের সংখ্যা বাড়তে থাকে। অনলাইন থেকে তার জনপ্রিয়তার ঢেউ এসে পড়লো অফলাইনেও। বলা যায়, বাংলাদেশে টিকটকারদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় এই টিকটকার মামুন। তার ফলোয়ার বা অনুসারীর সংখ্যাও অগণিত। এখন তিনি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে শোরুম বা দোকান উদ্বোধন করেন।
শুরুতে ‘প্রিন্স মামুন’ বা ‘অপু ভাই’-এর মতো টিকটকারদের নিয়ে মেইনস্ট্রিম মিডিয়ায় তেমন আলোচনা হতো না। মামুনদের ছবি বা ভিডিও দেখলে অনেকেই হেসে উড়িয়ে দিতো। কিন্তু এখন দেশীয় শোবিজের অনেক তারকাও প্রিন্স মামুনদের জনপ্রিয়তার কাছে হার মানবে।
তার জনপ্রিয়তা দেখে মাদারীপুরের একটি খামারে এবারের কোরবানির ঈদের জন্য প্রস্তুত করা একটি ষাঁড়ের নাম রাখা হয়েছে ‘প্রিন্স মামুন’। এর ওজন আনুমানিক ২৫ মণ। দাম হাঁকা হচ্ছে ১৫ লাখ টাকা। ষাঁড়টি দেখতে ভিড় করছেন অনেকে।
প্রিন্স মামুন ও লায়লা আক্তার ফারহাদ টিকটকের আলোচিত নাম। ফেসবুক-ইউটিউবের সামাজিক মাধ্যমে লায়লাকে সঙ্গে করে বিনোদনভিত্তিক কন্টেন্ট বানিয়ে বরাবরই আলোচনায় ছিলেন মামুন। এই জুটি নানা সময়ে আলোচনায় থেকেছেন। কখনও ঝগড়া করে, কখনও মামুনের নামে টাকা নেয়ার অভিযোগ তুলে। আবার কখনও মামুনের নামে লায়লা অভিযোগ তুলেছেন শারীরিক অত্যাচারেরও। তবে এবার সব ছাপিয়ে লায়লা মামুনের নামে করলেন বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ মামলা!
মামলার এজাহারে লায়লা লিখেছেন, মামলার বিবাদী আব্দুল্লাহ আল মামুন ওরফে প্রিন্স মামুনের সঙ্গে আমার গত তিন বছর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হয়। পরিচয়ের একপর্যায়ে মামুন আমাকে বিয়ে করবে মর্মে প্রলোভন দেখিয়ে আমার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক স্থাপন করে। সে আমাকে জানায়, তার ঢাকায় থাকার মত নিজস্ব কোনো বাসা নেই। যেহেতু প্রেমের সম্পর্ক সৃষ্টি হয় এবং মামুন আমাকে বিয়ে করবে বলে জানায়, তাই তার কথা সরল মনে বিশ্বাস করে তাকে আমার বাসায় থাকার অনুমতি দিই।
তিনি আরো লিখেছেন, ২০২২ সালের ৭ জানুয়ারি মামুন তার মাকে সঙ্গে নিয়ে আমার বাসায় এসে বসবাস করতে থাকে। ওইদিন থেকে সে আমার বাসায় আমার সঙ্গে একই রুমে থাকতে শুরু করে। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক করে। মামুন আমার বাসায় থাকাকালে তার বাবা-মা মাঝেমধ্যেই সেখানে এসে অবস্থান করতো। আমি মামুনকে একাধিকবার বিয়ের বিষয় বললে সে বিভিন্ন অজুহাতে সময়ক্ষেপণ করতে থাকে।
সর্বশেষ চলতি বছরের ১৪ মার্চ মামুন আমাকে আবার ধর্ষণ করে। পরবর্তী সময়ে আমি তাকে বিয়ের বিষয়ে বললে সে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। আমাকে বিভিন্ন অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে।
টিকটকার প্রিন্স মামুন ও লায়লা বিয়ে ছাড়াই এক ছাদের নিচে থাকছেন এমন একটি ইন্টারভিউ ভোরের কাগজের সঙ্গে শেয়ার করেছিলেন তারা। ভিডিওটি দেখুন এখানে-