সন্ত্রাসবাদ সূচকে পাকিস্তান থেকে ৩৭ ধাপ নিচে বাংলাদেশ

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৬ মে ২০২৪, ০৫:৫৪ পিএম

ছবি: ভোরের কাগজ
সন্ত্রাসবাদ সূচকে বাংলাদেশের অবস্থানের ধারাবাহিক উন্নতি পরিলক্ষিত হয়েছে। আমরা পাকিস্তান থেকে ৩৭ ধাপসহ অন্যান্য অনেক দেশ থেকে জঙ্গিবাদ সূচকে নিচের ধাপে অবস্থান করছি। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ দমনে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সচেতন নাগরিকের ভূমিকা শীর্ষক কর্মশালায় এমন তথ্য জানান রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) দুপুরে রাজধানীর মিরপুরের পুলিশ স্টাফ কলেজের মাল্টিপারপাস হলে দিনব্যাপী এ কর্মশালার আয়োজন করে অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ)।
কর্মশালা অনুষ্ঠানের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনে আরএমপি কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান বলেন, প্রতি ৩ বছরে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা দ্বিগুণ হচ্ছে, যার ফলে অনলাইন র্যাডিকালাইজেশনের ঝুঁকি বাড়ছে। একটি জরিপে দেখা গেছে ৮২ তরুণ অনলাইনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের দ্বারা সন্ত্রাসবাদে সম্পৃক্ত হচ্ছে যা মোকাবিলা করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠছে। কারণ প্রায় ৬৬.৯৪ মিলিয়ন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ নিরীক্ষণ করা অসম্ভব। তরুণ প্রজন্ম ইন্টারনেট ব্যবহারে দক্ষ হলেও তাদের সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতার অভাব রয়েছে। কারাগার ব্যবস্থাপনা যথাযথ না হওয়ায় সন্ত্রাসীদের সংস্পর্শে এসে উগ্রবাদী মতাদর্শে দীক্ষিত হওয়ার সম্ভাবনা প্রকট হচ্ছে। এছাড়া মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বঞ্চনা ও ক্ষোভকে পুঁজি করে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বা যেকোনো স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী ক্রমবর্ধিষ্ণু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে সন্ত্রাসবাদের দিকে পরিচালিত করার ঝুঁকি রয়েছে।
আরো পড়ুন: গেটলক সিস্টেম না মেনে যাত্রী তুললেই মামলা
তিনি বলেন, ঝুঁকি থাকলেও সন্ত্রাসবাদ সূচকে বাংলাদেশের অবস্থানের ধারাবাহিক উন্নতি পরিলক্ষিত হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার ইনস্টিটিউট ফর ইকোনোমিক্স অ্যান্ডপিসের (আইইপি) পর্যালোচনায় ২৩টি সূচকের ভিত্তিতে বিচার্য সন্ত্রাসবাদ সূচকে গত বছর বাংলাদেশের অবস্থানের ধারাবাহিক উন্নতি পরিলক্ষিত হয় (২০২৩ সালে অবস্থান ৪৩তম, ২০২২ সালে ৪০তম যা ২০১৬ সালে ২২তম ছিলো)। বাংলাদেশ পাকিস্তান থেকে ৩৭ ধাপ, আমেরিকা থেকে ১৩ ধাপ, শ্রীলঙ্কা থেকে ১৪ ধাপ, ইন্ডিয়া থেকে ৩০ ধাপ, মিয়ানমার থেকে ৩৪ ধাপ, আফগানিস্তান থেকে ৪২ ধাপ, নেপাল থেকে ৭ ধাপ নিচে অবস্থান করছে।
কর্মশালার স্বাগত বক্তব্যে পুলিশ স্টাফ কলেজের রেক্টর অতিরিক্ত আইজিপি ড. মল্লিক ফখরুল ইসলাম বলেন, যেভাবে সোশ্যাল মিডিয়া ও অনলাইন ব্যবহারকারী বাড়ছে তাতে করে জঙ্গিবাদের প্রচার বা প্রসার কিংবা প্রভাবিত করার সুযোগ বেড়েছে। সে দিকটায় এখন গুরুত্ব দেয়া জরুরি।
অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচকের বক্তব্যে এটিইউ প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি এস এম রুহুল আমিন বলেন, বাংলাদেশে কোনো জঙ্গি গোষ্ঠী মুসলমানদের ভালো চায় না। তারা কোনো গোষ্ঠী বা কার স্বার্থে কাজ করে সেটা স্পষ্ট। জিহাদ নিয়ে তাদের ব্যাখ্যা ভুল। জিহাদের নামে উগ্রবাদ বা জঙ্গিবাদকে ইসলাম সমর্থন করে না। জিহাদের নামে মুসলমানদের যারা হত্যা করছে তাদের কর্মকাণ্ড ইসলাম বিরোধী এটা স্পষ্ট, কোরআন হাদিস ও আলেমদের ফতোয়ায় সেটা স্পষ্ট।