হটকারী নির্বাচন বর্জন করার আহ্বান ড. মঈন খানের

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৫:৩৬ পিএম


ছবি: ভোরের কাগজ

ছবি: ভোরের কাগজ
আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচনকে হঠকারী উল্লেখ করে, এ নির্বাচন বর্জন করতে জনগণের প্রতি জোর আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান। তিনি বলেছেন, বিএনপি জনগণের সাথে ছিল, ভবিষ্যতেও থাকবে। একদফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে আন্দোলন চলবে।
শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অসহযোগ আন্দোলনের পক্ষে লিফলেট বিতরণকালে তিনি এসব কথা বলেন।
মঈন খান বলেন, 'সরকার জনগণের ভোটাধিকার হরণ করেছে। একতরফা তামাশার নির্বাচন করে দেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিয়েছে। বিএনপি নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাবে। এ সময় ডামি নির্বাচন বর্জন’ ও অসহযোগ আন্দোলনে সহযোগিতার আহ্বান জানান তিনি।
পরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে ইউনাইটেড ল’ইয়ার্স ফ্রন্ট আয়োজিত আলোচনা সভার বিএনপির এই নেতা বলেন, এ নির্বাচন নিয়ে কোনো আলোচনার প্রয়োজন নেই। নির্বাচন নিয়ে সরকারের ভোট ভাগাভাগি এমন পর্যায়ে গেছে, তাদের লজ্জা বলতে আর কিছু অবশিষ্ট নেই। এর থেকে উত্তরণের জন্য আমাদের যে যেখানে আছি, যেভাবে পারি এ সরকারের প্রতিবাদ করতে হবে। সরকারের অপকর্মের বাধা দিতে হবে। এ সরকারকে অপসারণ করে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য অন্য সরকার প্রতিষ্ঠা করবো।
দেশের মানুষ ধনসম্পদ চায় না জানিয়ে তিনি আরও বলেন, তারা পাঁচ বছর পর পর একদিন ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নিজের ইচ্ছামতো ভোট দিতে চায়। এটাই হচ্ছে মানুষের মৌলিক অধিকার। এই অধিকার যদি আমরা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিতে না পারি, তাহলে আমরা যা কিছু বলছি, যা কিছু করছি সব অর্থহীন হয়ে যাবে। আসুন আমরা এই সরকারকে অপসারণ করে দেশের মানুষের ভোটের মৌলিক অধিকার এবং গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে আন্দোলনকে ঐক্যবদ্ধভাবে চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাই।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, বর্তমান ফ্যাসিস্ট বাকশালী সরকারকে অপসারণ করে এদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার যে আন্দোলন-সংগ্রাম, সেই সংগ্রামে আমরা রাজপথে আছি। পাশাপাশি এ বিষয়ে আলোচনা, সেমিনার, মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার কাজগুলো করতে হবে। প্রতিটি আন্দোলনের যেসব পন্থা আছে, সেই প্রতিটি পন্থায় আমাদের এই স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে আরোপ করতে হবে। আমরা সেমিনার করবো, রাজপথে প্রতিবাদ করবো, সরকারের সমালোচনা করবো, প্রয়োজনে সরকারকে বিদায়ের রাস্তা দেখিয়ে দেবো। কোনো কাজেই আমরা পিছিয়ে থাকবো না।
তিনি আরো বলেন, আমরা এদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে চাই। গণতন্ত্র একটি শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়া। গণতন্ত্রের ভেতরে কোথাও সংঘাতের সুযোগ নেই। এখানে ভিন্নমতকে সুযোগ দিতে হবে। সেই ভিন্নমত প্রকাশের পর যে মতটি সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করবে, সেটাকে আমরা সমর্থন করবো। এটাই হচ্ছে গণতন্ত্র।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আমরা অসহযোগ আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছি। এ আন্দোলন নিয়ে আলোচনা হয়েছে মানুষের মাঝে। আমরা একটি প্রস্তাব দিয়েছি বলে কেউ যে এর সমালোচনা করবে না আমি সেটা চিন্তা করি না। কেউ সমালোচনা করলে আমি তার জবাব দেওয়ার চেষ্টা করবো। শেষে যে মতটি সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করবে, সেটিই বিজয়ী হবে। এটাই গণতন্ত্রের ভাষা, পদ্ধতি।
অসহযোগ আন্দোলনে বিএনপি পাঁচটি দফা বা ইস্যু দিয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, এরমধ্যে সবচেয়ে প্রথম কথা হলো, এ নির্বাচন বর্জন করুন। আমি বলতে চাই, শুধু নির্বাচনকে নয়, এই সরকারকেও বর্জন করুন।
ইউনাইটেড ল’ইয়ার্স ফ্রন্টের আহ্বায়ক অ্যাড. জয়নুল আবেদীনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, সাংবাদিক ও কলামিস্ট আব্দুল আজিজ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, গণফোরামের সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি নুরুল হক নুর প্রমুখ।