মেধা ও সৃজনশীল কর্মের আইনি সুরক্ষাই কপিরাইট

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১১:০৭ পিএম

ছবি: ভোরের কাগজ
মেধা ও সৃজনশীল কর্মের আইনি সুরক্ষাই হলো কপিরাইট। কোন কর্মের প্রথম ব্যক্তিই হলো সংশ্লিষ্ট কর্মের মালিক। আর এই মালিকানাসত্ত্ব বা স্বত্বাধিকারী রক্ষা করার নামই হলো কপিরাইট আইন। এ আইনের যথোপযুক্ত ব্যবহার করতে পারলেই কেবল মেধাস্বত্বের আর্থিক ও আইনগত সুরক্ষা নিশ্চিত হয়ে থাকে । এতে করে একদিকে যেমন মেধাস্বত্ব অক্ষুণ্ণ থাকে। অপরদিকে দেশের প্রবৃদ্ধিও বাড়ে। এছাড়া কপিরাইট আইন সংবাদপত্র ও গণমাধ্যমের ক্ষেত্রেও ব্যবহার হতে পারে।
আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষই জানে না কপিরাইট আইন কি? কিংবা এর প্রয়োগ কিভাবে হয়। কপিরাইট একটি সার্বজনীন বিষয়। মূলত মেধাস্বত্ব রয়েছে এমন কর্ম এর আওতায় পড়ে। ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল প্রপার্টি অর্গানাইজেশন (ডব্লিউআইপিও) এর নীতিমালা অনুযায়ী সাহিত্য বা নাটকের রচয়িতা, গানের ক্ষেত্রে সুরকার ও গীতিকার, ছবির ক্ষেত্রে আলোকচিত্রকার, শিল্পকর্মের জন্য শিল্পী, চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে প্রযোজক, তথ্য প্রযুক্তির ক্ষেত্রে সফটওয়্যার কিংবা ডিভাইস সৃষ্টিকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এর আওতাভুক্ত। এছাড়া সকল সৃষ্টিশীল কাজের অনুবাদ, সম্প্রচার মাধ্যমের ক্ষেত্রে সম্প্রচার সংস্থা, মুদ্রণ শিল্পের প্রকাশক , অনুষ্ঠানের অভিনয়শিল্পী ও কলাকুশলীর কর্ম এ সবই কপিরাইটের অন্তর্গত।
বুধবার (৬ ডিসেম্বর) প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) এর আয়োজনে প্রতিষ্ঠানটির সেমিনার কক্ষে ‘‘কপিরাইট আইন ও এর প্রয়োগ ’’শীর্ষক এক কর্মশালায় আলোচকরা এসব কথা বলেন।
প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) এর মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ মডারেটর হিসেবে কর্মশালা পরিচালনা করেন। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসের রেজিস্ট্রার অফ কপিরাইটস (অতিরিক্ত সচিব) মো. দাউদ মিয়া এনডিসি।
আলোচক হিসেবে কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসের কপিরাইট ডেপুটি রেজিস্ট্রার ( উপসচিব) আবুল কাশেম মোহাম্মদ ফজলুল হক, প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) এর পরিচালক (অধ্যয়ন ও প্রশিক্ষণ) শেখ মজলিস ফুয়াদ । এছাড়া র্যাপোর্টিয়ারের দায়িত্ব পালন করেন পিআইবি'র প্রশিক্ষণ বিভাগের প্রতিবেদক এম. এম. নাজমুল হাসান।
কর্মশালার মডারেটর মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ বলেন, কপিরাইট আইন যথাযথ প্রয়োগ করতে পারলে মেধাস্বত্বের মূল্যায়ন হবে। এতে কারও সৃজনশীলতা অন্য কেউ নিজের নামে চালিয়ে দিতে পারবে না। ফলে মানুষ তার কর্মের স্বীকৃতির পাশাপাশি আর্থিকভাবে লাভবান হবে। যা দেশের প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। তিনি সুরকার, গীতিকার, লেখকসহ সৃজনশীল মানুষের মেধাস্বত্ব অটুট রাখতে কপিরাইট আইন প্রয়োগের উপর গুরুত্বারোপ করেন। কপিরাইট আইন গণমাধ্যমের ক্ষেত্রেও ব্যবহার হতে পারে বলেও তিনি মত দেন।
আলোচনায় বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসের রোজিস্ট্রার অফ কপিরাইটস (অতিরিক্ত সচিব) মো. দাউদ মিয়া বলেন, মেধা ও সৃজনশীল কর্মের আইনি সুরক্ষাই হলো কপিরাইট। কোন কর্মের প্রথম ব্যক্তিই হলো সেটার স্বত্বাধিকারী বা মালিক। এই স্বত্বাধিকার রক্ষা করার নামই কপিরাইট আইন। এ আইনের যথোপযুক্ত ব্যবহার করতে পারলে মেধাস্বত্বের আর্থিক ও আইনগত সুরক্ষা পেতো ও মেধাস্বত্ব অক্ষুণ্ণ থাকতো বলে এর প্রয়োগের বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন তিনি।
কর্মশালায় বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসের কপিরাইট ডেপুটি রেজিস্ট্রার (উপসচিব) আবুল কাশেম মোহাম্মদ ফজলুল হক বলেন, কপিরাইট মূলত মেধাস্বত্ব ও সৃজনশীল কর্ম অটুট রেখে সমাজের কল্যাণ নিশ্চিতে কাজ করা। কারণ এ আইন বাস্তবায়ন করা সম্ভব হলে দেশ ও জাতির অগ্রগতি সাধিত হবে। তিনি আরো বলেন, সাহিত্য বা নাটকের রচয়িতা, গানের ক্ষেত্রে সুরকার ও গীতিকার, ছবির ক্ষেত্রে আলোকচিত্রকার, শিল্পকর্মের জন্য শিল্পী, চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে প্রযোজক, তথ্য প্রযুক্তির ক্ষেত্রে সফটওয়্যার কিংবা ডিভাইস সৃষ্টিকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান। এছাড়া সকল সৃষ্টিশীল কাজের অনুবাদ, সম্প্রচার মাধ্যমের ক্ষেত্রে সম্প্রচার সংস্থা, মুদ্রণ শিল্পের প্রকাশক , অনুষ্ঠানের অভিনয়শিল্পী ও কলাকুশলীর কর্মও কপিরাইটের আওতাভুক্ত।
কর্মশালায় সংবাদকর্মী, লেখক, প্রকাশক ও গবেষকসহ মোট ৩২ জন অংশগ্রহণ করেন ও অংশগ্রহণকারীদের মতামত গ্রহণ করা হয় ।