রেমিট্যান্স বাড়াতে দ্বিগুণ করা হলো প্রণোদনা

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২২ অক্টোবর ২০২৩, ১২:৪০ পিএম

বৈধ পথে রেমিটেন্স পাঠাতে প্রবাসীদের উৎসাহিত করতে বিদ্যমান ২.৫ শতাংশ প্রণোদনার পাশাপাশি এবার ব্যাংকগুলো ২.৫ শতাংশ প্রণোদনা দেবে। ফলে নতুন নিয়মে এখন থেকে বৈধ পথে দেশে বৈদেশিক আয় পাঠালে মোট ৫ শতাংশ প্রণোদনা মিলবে।
রবিবার (২২ অক্টোবর) থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ অথরাইজড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা)। শুক্রবার (২০ অক্টোবর) রাতে এক ভার্চুয়াল আলোচনায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
চলমান হিসাব অনুযায়ী বর্তমানে প্রবাসী আয়ে ব্যাংকে ১ মার্কিন ডলারের বিপরীতে পাওয়া যায় ১১০ টাকা ৫০ পয়সা। এর ওপর সরকার আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দেয়। এতে এক ডলারে পাওয়া যায় ১১৩ টাকা ২৬ পয়সার কিছু বেশি। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এখন এর সঙ্গে ব্যাংকগুলো দেবে আরও ২ দশমিক ৫ শতাংশ। ফলে এখন থেকে প্রবাসীরা এক ডলারে পাবেন ১১৬ টাকার কিছু বেশি।
ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রেমিট্যান্স হাউসগুলো থেকে বেশি দামে প্রবাসী আয় কিনতে হচ্ছে। নির্ধারিত দামে ডলার পাওয়া যাচ্ছে না। তাই ডলার সংকট কাটাতে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে ।
সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, নতুন এই সিদ্ধান্তের ফলে প্রবাসীরা বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে আগ্রহী হবেন। তারা বলছেন, প্রণোদনা আরও বাড়ানো হতে হবে। তা না হলে ‘হুন্ডিওয়ালাদের’ সঙ্গে পারাটা মুশকিল হয়ে যাবে। তাদের মত, বাজারের ওপর ডলারের দাম ছেড়ে দেওয়াটাই হবে ‘যৌক্তিক সিদ্ধান্ত’।
তারা বলছেন, ‘বর্তমানে অনেক ব্যাংকই ডলার সংকটে রয়েছে। অনেকেই এলসি খুলতে পারছে না। প্রবাসীদের আয় বাড়ানোর জন্য এবিবি ও বাফেদার পদক্ষেপটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। এতে প্রবাসীদের আয় বাড়বে। ডলার সংকট অনেকটাই কেটে যাবে।’ বেশ কিছুদিন ধরেই ডলার সংকটের কারণে ব্যাংকগুলো বাফেদা ও এবিবির বেঁধে দেয়া দরের চেয়ে পাঁচ-ছয় টাকা বেশি দামে প্রবাসী আয় কিনছে। ফলে প্রবাসী আয়ে ডলারের দাম বেড়ে হয়েছে ১১৫–১১৬ টাকা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনানুষ্ঠানিক পরামর্শেই ব্যাংকগুলো ডলারের এই দাম দিচ্ছে।
এক বছরেরও বেশি সময় ডলারের বাজারে অস্থিরতা চলছে। কিছু ক্ষেত্রে ডলারের দাম ১১১ টাকা ছাড়িয়ে গেছে। আর খোলা বাজারে ১২০ টাকা। আর ডলারের দাম স্থিতিশীল রাখতে হিমশিম খাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর মধ্যে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রতিনিয়ত কমছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে রিজার্ভ কমেছে প্রায় ১১ কোটি ডলার। এতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে রিজার্ভের পরিমাণ কমে ২১ বিলিয়ন বা ২ হাজার ১০০ কোটি ডলারের নিচে নেমে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে ডলারের বাজারে করণীয় নির্ধারণে গত শুক্রবার রাতে এবিবি ও বাফেদা ব্যাংকগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক ভার্চুয়াল আলোচনায় বসে।
সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও আফজাল করিম গণমাধ্যমে জানান, বৈঠকে ডলার বাজারের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ব্যাংক নিজস্ব আয় থেকে প্রবাসীদের ২ দশমিক ৫ শতাংশ প্রণোদনা দেবে। এটি আবার আমদানিকারকদের থেকে নেয়া যাবে না।