শিক্ষাকে অবমূল্যায়ন করছে সরকার

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭ অক্টোবর ২০২৩, ০৭:৪৭ পিএম

শনিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার ইন্সস্টিউটশনে 'শিক্ষক কর্মচারী সমাবেশে' ড. মঈন খান। ছবি: ভোরের কাগজ
আওয়ামী লীগ সরকার শিক্ষাকে অবমূল্যায়ন করছে মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান বলেছেন, সরকার জানে তাদের অবৈধ ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে হলে বাংলাদেশের মানুষকে মূর্খ করে রাখতে হবে। সেই কারণেই তারা বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করেছে। ধ্বাংসের হাত থেকে শিক্ষাকে বাঁচাতে আমাদের শিক্ষক সমাজকে সামনে এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠাত করতে হবে।
শনিবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার ইন্সস্টিউটশনে 'শিক্ষক কর্মচারী সমাবেশে' তিনি এসব কথা বলেন। শেখ হাসিনাসহ সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা, বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি'র এক দফা দাবীতে এ শিক্ষক কর্মচারী সমাবেশের আয়োজন করে শিক্ষক কর্মচারী ঐক্য জোট। আয়োজক সংগঠনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সেলিম ভুইঁয়ার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মুগিস উদ্দিন মাহমুদের সঞ্চালনা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপি ভাইস-চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডাক্তার এজেডএম জাহিদ হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট রুহুল কবির রিজভী প্রমূখ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মঈন খান বলেন, আমাদের সংবিধানের যে পাঁচটি মৌলিক অধিকার দেয়া হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে শিক্ষা। পরিতাপের বিষয় স্বাধীনতার ৫২ বছর পরেও শিক্ষকদের অধিকারের কথা পুনর্ব্যক্ত করতে হচ্ছে। এটা শুধু সরকার নয়, আমাদের রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা। কেন আমাদের সংবিধানের প্রদত্ত মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে ন। এ প্রশ্ন আজ করতে হবে। শিক্ষার অধিকার অর্জনের জন্য এবং সেই অধিকার আদায়ের জন্য যদি সংবিধান পরিবর্তন করা প্রয়োজন মনে করি আমরা সেটা করব। এর মধ্যে কোন দ্বিমত থাকতে পারে না।
তিনি বলেন, জার্মানির সবচেয়ে সম্মানিত পেশা হচ্ছে শিক্ষকতা এবং শিক্ষকদের সকল দায়িত্ব সরকার নিজে গ্রহণ করেছেন। আজ জার্মানির এত উন্নয়নের পেছনে মূল কারণ হচ্ছে শিক্ষা। যুদ্ধাস্ত্র দিয়ে বিশ্বের কোন দেশ শক্তিশালী হয় না। শিক্ষা দিয়ে শক্তিশালী হয়। আমেরিকা বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক দেশ ও শক্তিশালী হওয়ার পিছনে রয়েছে শিক্ষা। বিশ্বের সেরা ১ হাজার বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৯০০টি বিশ্ববিদ্যালয় আমেরিকার। অথচ বিশ্বের সবচেয়ে নামি বিশ্বাবিদ্যালয়ের কোথাও বাংলাদেশের নাম নেই। এর দায় সরকারের।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার পরেও বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের প্রতিনিধিরা অটো প্রমোশন আর নকলবাজি করে ৭০ দশকে দেশটাকে ধ্বংস করতে চেয়েছিলো, কিন্তু পারেনি। কারণ, সিপাহী বিপ্লবের সিময় জিয়াউর রহমানকে ফিরিয়ে এনে দেশের মানুষ দেশ পূনর্গঠনের দায়িত্ব দিয়েছিলো বলেই পারিনি। তিনি দেশটাকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন।
শিক্ষা ব্যবস্থায় খালেদা জিয়ার অবদান তুলে ধরে মঈন খান বলেন, ১৯৭১ সালে সারা বিশ্বকে অবাক করে দিয়ে যখন দেশনেত্রী খালেদা জিয়া একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নিবাচনের মাধ্যমে দেশের প্রধানমন্ত্রী নিবাচিত হয়েছিলেন, সবাই অবাক হয়েছিলেন। সেই দেশনেত্রীর কাছে শিক্ষকরা দাবি নিয়ে এসেছিলেন, তাদের চাকরি সরকারি করার জন্য। সেদিন খালেদা জিয়া শিক্ষকদের সমন্বয় করতে যাদের দায়িত্ব দিয়েছিলেন, তাদের মধ্যে আমি একজন। সেদিন তিনি দলমত নির্বিশেষে সাবইকে ঐক্যবদ্ধ করে তাদের পুরস্কৃত করেছিলেন। নারী শিক্ষার জন্য বিশেষ ভূমিকার রেখেছিলেন। পিছিয়ে পড়া মেয়েদের সমাজে টেনে তুলতে তাদের মাধ্যে শিক্ষাকে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। এমনকি পরেরবার ক্ষমতায় এলে নারীদের বিনামূল্যে শিক্ষা দেবেন বলেও কথা দিয়িছিলেন।