বঙ্গমাতার ত্যাগের মহিমাকে কেউ স্পর্শ করতে পারবে না

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭ আগস্ট ২০২৩, ০৯:৫১ পিএম


সোমবার (৭ আগস্ট) বিকালে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব এর উপর নির্মিত স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘বঙ্গমাতা’ এর প্রিমিয়ার শো অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় ‘বঙ্গমাতা’ ৩০ মিনিটের এ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেছেন গৌতম কৈরি। খোরশেদ বাহার এর ‘বঙ্গমাতা ইতিহাসের নিভৃত সৈনিক’ উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত ‘বঙ্গমাতা’র চিত্রনাট্য লিখেছেন নাসরীন মুস্তাফা।
এতে অভিনয় করেছেন বাংলাদেশের অভিনয় শিল্পী ও কলাকুশলীরা। এর প্রিমিয়ার শোয়ের উদ্বোধন করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সিমিন হোসেন রিমি।
সংস্কৃতি সচিব খলিল আহমদের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন-বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। বিশিষ্ট অতিথি ছিলেন-মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মো: মাহবুব হোসেন।
প্রধান অতিথি ছিলেন-সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। এসময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন-পরিচালক গৌতম কৈরি। যে উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত তার লেখক খোরশেদ বাহার।
সিমিন হোসেন রিমি বলেন, ইতিহাসের যে মহিয়সী নারীকে নিয়ে চলচ্চিত্রটি নির্মিত তাকে আমি খুব কাছে থেকে দেখেছি। এটা আমার জীবনের এটা পরম পাওয়া। ইতিহাসের খুব গুরুত্বপূর্ণ অংশ তিনি। তার ভূমিকাকে আলাদাভাবে বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক চিন্তা-চেতনা বঙ্গমাতা স্পষ্টভাবে অনুধাবন করতে পারতেন। বঙ্গমাতার সুচিন্তিত পরামর্শ বঙ্গবন্ধুকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করেছে, উদ্দীপ্ত করেছে।
তিনি বলেন, নারীর অধিকার আদায় ও প্রতিষ্ঠায় বঙ্গমাতা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি অসাধারণের মধ্যেও ছিলেন সাধারণ। এটাই ছিলো তাঁর বিশেষত্ব। তাই বঙ্গমাতার চেতনাবোধ সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে।
জাতির পিতা হয়ে উঠবার পেছনে বেগম মুজিবের পরামর্শ সাহচর্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে উল্লেখ করে কে এম খালিদ বলেন, মহিয়সী নারী বঙ্গমাতা আজীবন সুখে-দুঃখে বঙ্গবন্ধুর পাশে ছিলেন। মানুষের অধিকার আদায়ে, রাজনৈতিক আন্দোলন-সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুকে অনুপ্রাণিত-উজ্জীবিত করেছেন। সারাজীবন নিজের আনন্দ-সুখকে বিসর্জন দিয়ে ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হয়েছেন। সাধারণ নারীর পক্ষে এটা কখনো সম্ভব নয়। বঙ্গমাতার ত্যাগের মহিমাকে কেউ ন্পর্শ করতে পারবে না।
কে এম খালিদ বলেন, আগস্ট আমাদের দিয়েছে অনেক কিন্তু কেড়ে নিয়েছে সর্বস্ব। সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ আগস্ট মাসেই জন্মগ্রহণ করেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র বাংলাদেশের আধুনিক সংস্কৃতি ও ক্রীড়া আন্দোলনের পথিকৃৎ, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল। এ মাসেই জন্মেছিলেন মহিয়সী নারী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব। কিন্তু এ মাসেই আমরা হারিয়েছি জাতির পিতাসহ তার পরিবারের ১৭জন সদস্যকে।
তিনি বলেন, প্রাপ্তি ও হারানোর যোগফল রক্তাক্ত আগস্ট।
মো. মাহবুব হোসেন বলেন, বঙ্গমাতা ও তার পরিবারের ত্যাগের বিনিময়ে আমরা স্বাধীন দেশ পেয়েছি। বাংলাদেশের ইতিহাসকে মূল্যায়ন করলে দেখা যায় বঙ্গবন্ধুর জীবনে বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের অবদান কী গভীর এবং বিশাল।
তিনি বলেন, জাতির পিতার জাতির পিতা হিসাবে বেড়ে ওঠার পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান মহিয়সী নারী বঙ্গমাতার। শুধু বঙ্গবন্ধুর স্ত্রী হিসাবে নয়, সাথী ও রাজনৈতিক পরামর্শদাতা হিসাবে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। সেজন্য বঙ্গমাতার অবদানকে যথাযথ স্বীকৃতি দিতে হবে।
লিয়াকত আলী লাকী বলেন, শিল্পের আলোয় বঙ্গমাতাকে দেখা খুব জরুরি। এমনি নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর জীবনে বেগম মুজিবের প্রভাব এবং দেশের রাজনীতিতে তার অবদানকে তুলে ধরতে হবে।
খলিল আহমেদ বলেন, ঐতিহাসিক এই চলচ্চিত্রটি সারাদেশে এবং দেশের বাইরে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হবে।
